প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ১৪ মার্চ ২০২৪ ২২:৪৪ পিএম
আপডেট : ১৫ মার্চ ২০২৪ ০১:০৩ এএম
যোগ্যতার ভিত্তিতে পুলিশে চাকরি পেয়েছেন টাঙ্গাইলের নাজমুল হাসান। প্রবা ফটো
টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার বাসিন্দা নাজমুল হোসেন। তার বাবা আইয়ূব নবী পেশায় অটোরিকশা চালাক। বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) পুলিশ কনস্টেবল পদে নিয়োগ পেয়েছেন তিনি। এতে উচ্ছ্বাসিত নাজমুল ও তার পরিবার।
নাজমুল হাসান বলেন, ‘টাকা ছাড়া পুলিশের চাকরি হবে কখনও কল্পনাও করি নাই। নিজ যোগ্যতায় আমি নিয়োগ পেয়েছি। কোনও লোক ধরতে হয়নি। পুলিশের একজন সদস্য নির্বাচিত হওয়াতে মনে হচ্ছে বাবার কষ্ট একটু হলেও দূর করতে পারব। সব সময় দেশ সেবায় নিয়োজিত থাকব।’
নাজমুলের বাবা আইয়ূব নবী বলেন, ‘ছেলেকে নিয়ে খুবই চিন্তায় ছিলাম। লেখাপড়া করে কিছু করতে পারবে কি না এ ভয়ে। কারণ এখন সরকারি চাকরি নিতে গেলে টাকা লাগে, লোক লাগে, মানুষের কাছে শুনি। কিন্তু এখন দেখি সব ধারণা ভুল। টাকা ছাড়া ছেলের পুলিশে চাকরি হবে কখনো চিন্তাও করি নাই। প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই এত সুন্দর স্বচ্ছ ভাবে পুলিশের চাকরি পরীক্ষা ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য।’
নাজমুলের মতো মেধা এবং যোগ্যতার ভিত্তিতে পুলিশে নিয়োগ পেয়েছেন একই জেলার ঘাটাইল উপজেলার বিপ্লব হোসেন। তার বাবা মোশারফ হোসেন পেশায় ইট ভাটার শ্রমিক। বিপ্লব হোসেন বলেন, ‘আমার বাবা ইট ভাটায় কাজ করেন ৩০ বছর ধরে। অনেক কষ্ট করে তিনি আমাদের দুই ভাইকে লেখা পড়া করাচ্ছেন। বাবার কষ্টের ফল এখন দিতে পারব। তারাও অনেক খুশি হয়েছেন। আমার নিজ যোগ্যতায় পুলিশের চাকরি হবে তা কখনও কল্পনাও করি নাই। পুলিশের একজন সদস্য নির্বাচিত হতে পেরে অনেক আনন্দ লাগছে।’
নামজুল ও বিপ্লবের মতো এই জেলা থেকে আরও ৯০ জন পুলিশে চাকরি পেয়েছেন। যার মধ্যে পুরুষ ৭৬ জন এবং নারী ১৪ জন। এ ছাড়া খাগড়াছড়ি থেকে ২ জন নারীসহ ১৫ জন, সাতক্ষীরা থেকে ৪৯ জন এবং নওগাঁয় ১০ নারীসহ ৬৫ জন পুলিশে চাকরি পেয়েছেন।
টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার বলেন, ‘স্মার্ট পুলিশ গঠন করার জন্য আমরা যোগ্য প্রার্থীদেরকে বাছাই করেছি। আর এই কার্যক্রম চালু হয়েছিল গত ফেব্রুয়ারি মাসের ১৬ তারিখে। নিয়োগ বোর্ডের যে সদস্য ছিল সবাই একদম স্বচ্ছ ছিল। যারা চান্স পেয়েছে সবাই যোগ্য প্রার্থী। কোনও প্রকার সুপারিশ ও লেনদেনের সুযোগ ছিল না।’
নওগাঁ পুলিশ সুপার (এসপি) মুহাম্মদ রাশিদুল হক বলেন, ‘নিজের যোগ্যতা ও মেধার ভিত্তিতে চাকরি পেয়েছে তরুণ-তরুণীরা। যারা আজকে নিয়োগ পেয়েছেন তারা সবাই নিজেদের যোগ্যতা ও মেধায় উত্তীর্ণ হয়েছে। এতে তাদের কোনো যোগাযোগ, লবিং ও ঘুষ দিতে হয়নি। তাদের মাত্র আবেদন করতে যে খরচ হয়েছে ১২০ টাকা, সেটিই তাদের খরচ। সরকারের জন্য মেধাবী ও দক্ষ পুলিশ জনবল নিশ্চিত করতে পেরে ভালো লাগছে। এসব মেধাবীরা দ্রুত পুলিশের বিভিন্ন কৌশল ও পাঠগুলো আয়ত্ত করতে পারবে। এতে আগের চেয়ে অনেক বেশি দক্ষ পুলিশ বিভাগ গড়ে উঠবে।’