প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১১ মার্চ ২০২৪ ২১:২৩ পিএম
আপডেট : ১১ মার্চ ২০২৪ ২২:০৯ পিএম
রমজানের প্রথম দিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা নাকি বন্ধ থাকবে, তা নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে। মন্ত্রণালয় থেকে সুস্পষ্ট সিদ্ধান্ত না আসায় দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়া স্কুল-কলেজের প্রধানরা একেক রকম সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ফলে ছাত্রছাত্রীদের অনেকে প্রতিষ্ঠানমুখী হবে আবার অনেকে থাকবে আদালতের সিদ্ধান্তের দিকে তাকিয়ে। এ বিষয়ে মঙ্গলবার চূড়ান্ত আদেশ দেবেন আপিল বিভাগ।
ঢাকার একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রমজানের চাঁদ দেখার পর কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান বন্ধ আবার কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান খোলা রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
রাজধানীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ রোজার প্রথম দিন বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কেকা রায় চৌধুরী এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছেন। মাউশি থেকে নির্দেশনা পাওয়া মাত্রই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।
স্কুল বন্ধ রাখা সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজও। সব ছাত্র, শিক্ষক ও অভিভাবকদের প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, চেম্বার আদালতের নির্দেশনা মোতাবেক মঙ্গলবার তৃতীয় শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদান বন্ধ থাকবে। আদালতের নির্দেশনা পাওয়া সাপেক্ষে ছুটিসংক্রান্ত বিষয়ে নোটিসের মাধ্যমে বিস্তারিত জানানো হবে।
তবে স্কুল খোলা রেখেছে বিজি প্রেস হাই স্কুল। প্রতিষ্ঠানটির এক সিনিয়র শিক্ষক জানান, প্রথম রোজায় আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখবে। শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন চলছে। কালও মূল্যায়ন করবে।
উইলস লিটলের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ন ম সামশুল আলম খান বলেন, এখনও স্কুল বন্ধের কোনো নির্দেশনা পাইনি। তাইলে স্কুল কি খোলা থাকছে, এই প্রশ্ন রেখে কথা শেষ করেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে মাউশির শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, স্কুল বন্ধ না খোলা থাকবে, সেই সিদ্ধান্ত দেবেন আদালত কিংবা মন্ত্রণালয়। তারা এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি। সুতরাং আমরাও প্রতিষ্ঠানপ্রধানদের কোনো সিদ্ধান্ত জানাতে পারছি না। এখন কাল খোলা না বন্ধ রাখবে, সেটা প্রতিষ্ঠানপ্রধানদের বিবেকের ওপর নির্ভর করবে। তাদের বিবেক যদি বলে খোলা রাখবেন, তাহলে রাখবেন, আর বন্ধ রাখতে চাইলে বন্ধ।
শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, ‘যেহেতু আমরা রায়ের কপি পাইনি। আমরা তো আমাদের সিদ্ধান্ত বলেছি। আমাদের অবস্থান হচ্ছে, আমরা যে সিদ্ধান্তটা দিয়েছি তার বিরুদ্ধে রায়ের কোনো কপি আমাদের কাছে আসেনি। এজন্য আমরা কোনো মন্তব্য করব না।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের অবস্থান হচ্ছে এটা নির্বাহী এখতিয়ার, এটা আদালতের এখতিয়ার নয়।’
এর আগে ৮ ফেব্রুয়ারি এক প্রজ্ঞাপনে রমজানের সময় ১৫ দিন সরকারি-বেসরকারি নিম্ন মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শ্রেণি কার্যক্রম চালু রাখার সিদ্ধান্তের কথা জানায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এরপর রমজানের প্রথম ১০ দিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান কার্যক্রম চালু থাকবে বলে জানায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ও। উভয় সিদ্ধান্তের বৈধতা নিয়ে হাইকোর্টে রিট করেন এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক শফিউর রহমান চৌধুরী।
এরপর রবিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত স্থগিত করে রমজানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার আদেশ দেন আদালত। হাইকোর্টের আদেশের বিপক্ষে সোমবার সকালে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। বিকালে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম হাইকোর্টের আদেশ আপাতত বহাল রাখেন। একই সঙ্গে এ বিষয়ে আপিল শুনানির জন্য মঙ্গলবার দিন ধার্য করেন।