× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

ফেব্রুয়ারিতে দেশে তাপমাত্রা ছিল স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি

প্রবা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১০ মার্চ ২০২৪ ১০:৪৯ এএম

আপডেট : ১০ মার্চ ২০২৪ ১০:৫২ এএম

ফেব্রুয়ারিতে দেশে তাপমাত্রা ছিল স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি

ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলাদেশসহ বিশ্বের প্রায় সব অঞ্চলে গড় তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ছিল। বাংলাদেশে বেশি ছিল শূন্য দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তা ছাড়া বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে শূন্য দশমিক ২ ডিগ্রি ও শূন্য দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিল বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর।

বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা (ডব্লিউএমও) ১ মার্চ তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ফেব্রুয়ারি মাসে এশিয়া, আফ্রিকা, ইউরোপ, অস্ট্রেলিয়া, উত্তর আমেরিকা ও দক্ষিণ আমেরিকাসহ বিশ্বের ছয়টি মহাদেশে স্বাভাবিকের চেয়ে তাপমাত্রা বেশি ছিল। এ সময়ে দক্ষিণ গোলার্ধে গ্রীষ্মে চরম তাপ এবং উত্তর গোলার্ধে শীতকালেও উচ্চ তাপ ছিল। এতে জীবন ও জীবিকায় প্রভাব পড়েছে। উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকার কিছু অংশ, উত্তর-পশ্চিম এবং দক্ষিণ-পূর্ব আফ্রিকা, দক্ষিণ-পূর্ব, পূর্ব এশিয়া, পশ্চিম অস্ট্রেলিয়া ও ইউরোপসহ সব স্থানেই ছিল রেকর্ড তাপমাত্রা। কোথাও এই তাপমাত্রার বৃদ্ধি ছিল দৈনিক এবং কোথাও মাসব্যাপী। উত্তর-পশ্চিম কানাডার একটি বড় অংশ, মধ্য এশিয়া এবং দক্ষিণ মধ্য সাইবেরিয়া থেকে দক্ষিণ-পূর্ব চীন পর্যন্ত ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহে ব্যতিক্রমী ঠান্ডাও ছিল।

গত রবিবার বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, চলতি মার্চ মাসে দেশে স্বাভাবিকের চেয়ে কম বৃষ্টি হবে। ২-৩ দিন বজ্র ও শিলাবৃষ্টিসহ হালকা ও মাঝারি ধরনের এবং একটি তীব্র কালবৈশাখী ঝড় হতে পারে। এ মাসে ১ থেকে ২ বার মৃদু ও মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। ফেব্রুয়ারি মাসের আবহাওয়া সম্পর্কে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আজিজুর রহমান বলেন, এ মাসে স্বাভাবিকের চেয়ে ৩৬ শতাংশ কম বৃষ্টি হয়েছে। তবে ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি এবং ঢাকা, রংপুর, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগে কম বৃষ্টি হয়েছে।

কৃষিতে বৈরী আবহাওয়ার প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়ে। আবহাওয়াবিদ ড. মো. বজলুর রশিদ এ বিষয়ে বলেন, বাংলাদেশের গত দেড় বছরের তথ্য বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, গত বছরের মার্চে ৭৮ শতাংশ বৃষ্টি বেশি হওয়ায় আলু পচে গেছে। যার কারণে বাজারে আলুর দামে একটি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। ডিসেম্বরে আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড় মিগজাউমের কারণে দেড়শ শতাংশ বেশি বৃষ্টি হওয়ায় ফসলের ক্ষতি হয়। আবহাওয়াজনিত কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয় কৃষির। বিশ্বের সব প্রান্তেই একই অবস্থা হয়ে থাকে। গত বছরের বর্ষায় স্বাভাবিকের চেয়ে বৃষ্টি কম হয়েছে। জুনে তাপপ্রবাহ ছিল। জুলাই মাসে ৩৬ থেকে ৩৮ শতাংশ বৃষ্টি কম হয়েছে। আগস্টে বৃষ্টি বেশি হয়েছে। এতে করে চট্টগ্রামের বান্দরবানে বেশি বৃষ্টি হয়ে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল। উচ্চ তাপমাত্রার কারণেই এসব অবস্থার সৃষ্টি হয়। 

বিশ্বের অন্য অঞ্চলের আবহাওয়া

ডব্লিউএমও প্রতিবেদনে আলাদা করে ছয়টি মহাদেশের তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়েছে। সেখানে দেখানো হয়, সব মহাদেশেই সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বেশি ছিল। কোথাও কোথাও দাবানলও সৃষ্টি হয়েছিল। 

এশিয়া : ইন্দোনেশিয়া, মিয়ানমার, ফিলিপাইন, থাইল্যান্ড এবং ভিয়েতনামসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার কিছু অংশ তীব্র তাপপ্রবাহের কবলে পড়েছিল। এসব দেশ ও অঞ্চলে তাপমাত্রা প্রায়ই ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে উঠেছিল। বিশেষ করে দক্ষিণ লাও পিপলস ডেমোক্রেটিক রিপাবলিকে ২১ ফেব্রুয়ারি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৮ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস (গড় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা প্রায় ৩১-৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াস)। এ অঞ্চলে রাতের সর্বনিম্ন তাপমাত্রাও গড়ের চেয়ে অনেক বেশি ছিল।

আফ্রিকা মহাদেশ : আফ্রিকাজুড়ে অনেক দেশই তীব্র তাপ সহ্য করেছে। ফেব্রুয়ারিতে দিন ও রাতে তাপমাত্রা রেকর্ড পরিমাণ বেড়েছে। বিশেষ করে দক্ষিণ আফ্রিকা (নামিবিয়া, মোজাম্বিক, দক্ষিণ আফ্রিকা, জাম্বিয়া ও জিম্বাবুয়েসহ) ফেব্রুয়ারির গড় তাপমাত্রা ৪-৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিল। 

অস্ট্রেলিয়া মহাদেশ : সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রা ছিল পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ায়। পার্থ শহরে এ মাসে ৭ বার তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডে পৌঁছেছিল। ১৮ ফেব্রুয়ারি কার্নারভন শহরের তাপমাত্রা ছিল ৪৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এটি অস্ট্রেলিয়ার রেকর্ডে ফেব্রুয়ারিতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।

ইউরোপ মহাদেশ : ইউরোপের বেশিরভাগ অংশে (উত্তর বাদে) ফেব্রুয়ারিতে গড় তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে কমপক্ষে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিল। মধ্য ও দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপের কিছু অংশে স্বাভাবিকের চেয়ে ৪ থেকে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা কম ছিল। দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপে (শীতকাল ২০২৩-২৪) স্বাভাবিকের চেয়ে ২ থেকে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি উষ্ণ ছিল। অন্তত কিছু অংশের জন্য রেকর্ড উষ্ণ ছিল। ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে পূর্ব-মধ্য ইউরোপ এবং দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল। ২৭ ফেব্রুয়ারি দক্ষিণ-পূর্ব পোল্যান্ড এবং উত্তর বলকান অঞ্চলের এলাকাজুড়ে দৈনিক সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ১৫ থেকে ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এটি ছিল ১৯৯১ থেকে ২০২০ স্বাভাবিকের থেকে কমপক্ষে ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। 

উত্তর আমেরিকা মহাদেশ : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিসের তথ্য অনুসারে, ২৬ ও ২৭ ফেব্রুয়ারি ১৪৭টি স্থানে তাপমাত্রা বৃদ্ধি রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছায়। সর্বনিম্ন তাপমাত্রাও ছিল বেশি। ২৭ ফেব্রুয়ারি হিউস্টনে ২১ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াসসহ প্রায় ৭০টি এলাকায় আগের রেকর্ড ভেঙে গেছে। টেক্সাসে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশ : দক্ষিণ আমেরিকার বেশ কয়েকটি অঞ্চলে উচ্চ তাপমাত্রায় দাবানলের সৃষ্টি হয়। উত্তরের আমাজন রেইনফরেস্টে, বিশেষ করে পুরো ব্রাজিল, ভেনিজুয়েলা ও বলিভিয়ায় ২০০৩ সালের পর সর্বোচ্চ কার্বন নির্গমনের সম্মুখীন হয়েছে ফেব্রুয়ারিতে। উচ্চ তাপমাত্রায় চিলিতে ১৩২ জনেরও বেশি লোক মারা গেছে। ২০ হাজারের বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দাবানলে ৬ হাজার হেক্টরের বেশি বন পুড়ে গেছে।

আবহাওয়া বিষয়ে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ ড. মো. বজলুর রশিদ বলেন, ২০২৩ সাল ছিল বিশ্বে এল নিনোর বছর। বিশ্বের তাপমাত্রাও ছিল সবচেয়ে বেশি। শক্তিশালী এল নিনোর প্রভাব সব মহাদেশেই পড়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে ডব্লিউএমও। তারা ইতঃপূর্বে জানিয়েছিল ২০২৪ সালও গত বছরের মতো উত্তপ্ত হবে। তবে আশার কথা হচ্ছে, এল নিনোর প্রভাব দ্রুত কমে যাচ্ছে। অর্থাৎ আগামী ২ মাসের মধ্যে স্বাভাবিক হয়ে যেতে পারে। তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে সব ধরনের খাদ্যে প্রভাব পড়বে না।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা