প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৯ মার্চ ২০২৪ ২০:২৫ পিএম
বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ খালেক শেখ। সংগৃহীত ফটো
মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, সমাজসেবক, বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ খালেক শেখের ২২তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ রবিবার। মুক্তিযুদ্ধের এই বীর সেনানী ২০০২ সালের ১০ই মার্চ লিভার সংক্রান্ত জটিলতায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। এই বীর মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যুবার্ষিকীতে এবারও ঢাকা এবং গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরের গোহালায় নানা কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।
কর্মসূচির মধ্যে আছে মুনিরকান্দি আশরাফুল উলুম মাদ্রাসা ও এতিমখানা, পূর্বনওখন্ডা আলিয়া মাদ্রাসা, হেফজখানা ও এতিমখানায় কোরআন খতম ও দোয়া। এছাড়া গ্রামের বাড়িতে সকাল থেকে কোরআন খতম এবং বাদ আছর মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। ঢাকার বাসায় বাদ মাগরিব কোরআন খতম এবং দোয়ার আয়োজন করা হয়েছে। বিশিষ্ট সমাজসেবক, বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ খালেক শেখের আত্মার মাগফেরাতের জন্য পরিবারের পক্ষ থেকে আত্মীয়-স্বজন, শুভানুধ্যায়ীসহ সবার প্রতি দোয়া প্রার্থনা এবং এসব অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরের কৃতি সন্তান পুলিশের সাবেক সদস্য এম এ খালেক শেখ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণে নির্দেশনার পরই এলাকার যুবকদের সংগঠিত করে মুক্তিযুদ্ধের প্রাথমিক প্রশিক্ষণ দিতে শুরু করেন। তিনি তখন রাতে-রাতে স্থানীয় গোহালা টি সি এ এল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আড়াই হাত বাঁশের লাঠি তৈরি করে প্রাথমিক প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদেরকে ভারতে পাঠান। এভাবে তিনি এলাকার প্রায় ৬০ জন যুবককে ভারতে পাঠান। যারা ফিরে এসে সরাসরি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে। এর মধ্যে তার আপন দুই ভাই ও এক ভাগ্নেও ছিলেন। এর মধ্যে এক ভাই ছিলেন মুজিব বাহিনীর সদস্য।
খালেক শেখ মহান মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাস প্রতিটি মুহূর্ত পরিবারসহ মৃত্যুঝুঁকি মাথায় নিয়ে কাটান। তাদের বাড়িঘর একাধিকবার লুট করে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। পাকিস্তানি সেনাবাহিনী শিরচ্ছেদের জন্য ১০ হাজার টাকা পুরস্কার ঘোষণা করে তার বিরুদ্ধে মৃত্যু পরোয়ানা জারি করে। এলাকার হাট-বাজারে ঢোল পিটিয়ে তাকে মৃত অথবা জীবিত অবস্থায় ধরিয়ে দিতে বলা হয়। তিনি দিগনগরসহ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সম্মুখযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। এলাকায় অসংখ্য সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় শিক্ষামূলক প্রতিষ্ঠান ও কার্যক্রমের সঙ্গে সংযুক্ত ছিলেন খালেক শেখ। সমাজসেবক এই ব্যক্তি এলাকায় এখনও সমানভাবে জনপ্রিয়। তিনি জীবনের শেষদিন পর্যন্ত জনকল্যাণে কাজ করে গেছেন।