× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

আন্তর্জাতিক নারী দিবস

রাজনীতির চাবি নারীদের হাতে

কাজী হাফিজ

প্রকাশ : ০৮ মার্চ ২০২৪ ০০:২৬ এএম

আপডেট : ০৮ মার্চ ২০২৪ ১০:৩৩ এএম

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইল ফটো

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইল ফটো

গত তিন দশকের বেশি সময় দেশের রাজনীতির নিয়ন্ত্রণ নারী নেতৃত্বের হাতে। সংসদ ও সংসদের বাইরে গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতেও নারীদের দেখা যাচ্ছে। টানা চতুর্থবারসহ পঞ্চমবারের মতো প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। এটা শুধু বাংলাদেশে নয়- বিশ্বেই একটি রেকর্ড। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত বর্তমান সরকারের ৪৪ সদস্যের মন্ত্রিপরিষদে নারী সদস্য আটজন। প্রধানমন্ত্রীসহ পূর্ণ মন্ত্রী দুইজন এবং প্রতিমন্ত্রী ছয়জন। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের তথ্য অনুসারে এবার প্রায় একসঙ্গে সর্বোচ্চসংখ্যক নারী মন্ত্রিপরিষদে স্থান পেয়েছেন। 

পূর্ণ মন্ত্রী হিসেবে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন ডা. দীপু মনি। প্রতিমন্ত্রী হিসেবে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে সিমিন হোমেন রিমি, প্রাথমিক ও গণশিক্ষায় বেগম রুমানা আলী, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণে বেগম রোকেয়া সুলতানা, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে বেগম শামসুন নাহার, অর্থ মন্ত্রণালয়ে বেগম ওয়াসিকা আয়শা খান ও সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে বেগম নাহিদ ইজাহার খান দায়িত্ব পেয়েছেন। এদের মধ্যে দীপু মনি, রুমানা আলী ও সিমিন হোসেন রিমি সরাসরি ভোটে নির্বাচিত। অন্য চারজন সংরক্ষিত আসনের। এর আগে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর গঠিত শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গঠিত সরকারে ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে ২০১৪ সালের ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে প্রধানমন্ত্রীসহ ৯ জন নারী মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। তবে একসঙ্গে এবারই সর্বোচ্চসংখ্যক নারী মন্ত্রিপরিষদে রয়েছেন। 

লিঙ্গসমতা প্রতিষ্ঠায়ও বিশ্বের ১৪৬ দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৫৯তম। এক বছরের ব্যবধানে এক্ষেত্রে ১২ ধাপ এগিয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার এ দেশ। নারীর ক্ষমতায়নের সূচকে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান সপ্তম। গত বছর জুনে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম (ডব্লিউইএফ) প্রকাশিত সর্বশেষ প্রতিবেদনে এ চিত্র উঠে এসেছে। অবশ্য সামগ্রিক রাজনীতিতে নারীরা এখনও পিছিয়ে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারীদের অংশগ্রহণ ও সাফল্যের হার এবং সরকারের মন্ত্রিসভায় তাদের স্থান এখনও প্রত্যাশা অনুযায়ী কম, এমনটাই বলছেন দেশের নারী নেত্রীরা। 

নারী ও মানবাধিকারকর্মী খুশী কবির এ বিষয়ে প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, আমরা এবার সরকারের মন্ত্রিপরিষদে প্রধানমন্ত্রীসহ আটজন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী পেয়েছি। এটি সুসংবাদ। তবে পূর্ণ মন্ত্রীদের তালিকায় আরও কয়েকজন থাকলে ভালো হতো। দেশের অর্ধেক জনসংখ্যা নারী। সে তুলনায় সংসদে, মন্ত্রিসভায় নারীদের অবস্থান এখনও সীমিত। সামগ্রিক রাজনীতিতে দেশে নারীরা এখনও পিছিয়ে। আমরা জানি, নারীর ক্ষমতায়নের বিষয়টি বর্তমান সরকারের অন্যতম অগ্রাধিকার। সংসদ নির্বাচনে যেসব নারী সরাসরি নির্বাচিত হয়েছেন তাদের মধ্যেও অনেকে মন্ত্রিসভায় স্থান পাওয়ার যোগ্যতা রাখেন। আমরা শুধু নারী মন্ত্রী চাই না, যোগ্য মন্ত্রী চাই। 

নবনিযুক্ত প্রতিমন্ত্রী বেগম শামসুন নাহার বলেন, আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় বর্তমান সরকারের সামর্থ্য, অভিজ্ঞতা অনেক বেশি। সরকারপ্রধান সরকারের কাজের গতি বৃদ্ধির প্রয়োজনে মন্ত্রিপরিষদ গঠন করেছেন। যাদের মন্ত্রিপরিষদে স্থান দিয়েছেন, যোগ্য বিবেচনা করেই দিয়েছেন। কাজের মাধ্যমেই আমাদের সে যোগ্যতার প্রমাণ দিতে হবে। 

আগের সরকারগুলোতে নারী মন্ত্রী 

স্বাধীনতার পর ১৯৭৩ সালের ১৬ মার্চ বাংলাদেশের দ্বিতীয় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ৩৭ সদস্যের এই মন্ত্রিসভায় প্রথম দুই নারী স্থান পান। শিক্ষা বিভাগের প্রতিমন্ত্রী হন অধ্যক্ষ বদরুন্নেসা আহমেদ আর সমাজকল্যাণ ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের প্রতিমন্ত্রী হন বেগম নুরজাহান মুরশিদ। অবশ্য ১৯৭২ সালের ১২ জানুয়ারি থেকে ১৯৭৩ সালের ১৬ মার্চ পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর মন্ত্রিসভায় ২৩ জন সদস্য এবং ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি গঠিত রাষ্ট্রপতিশাসিত সরকারের ২৯ সদস্যের মধ্যে কোনো নারী ছিলেন না।

তার আগে মুজিবনগরে গঠিত সরকারে (১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল থেকে ১৯৭২ সালের ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত) রাষ্ট্রপতি, অস্থায়ী রাষ্ট্রপতিসহ ১১ সদস্যের মন্ত্রিসভায় কোনো নারী ছিলেন না। 

১৯৭৯ সালে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সরকারের মন্ত্রিসভায় স্থান পেয়েছিলেন চারজন নারী। এরা হচ্ছেন- ড. আমিনা রহমান, কামরুন্নাহার জাফর, তসলীমা আবেদ ও মাবুদ ফাতিমা। এ ছাড়া ওই সময় রাষ্ট্রপতির বিশেষ সহকারী হিসেবে নিযুক্ত হন বিনীতা রায়। জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর বিচারপতি আবদুস সাত্তারের সরকারের মন্ত্রিসভাতেও কামরুন্নাহার জাফর এবং তসলীমা আবেদ স্থান পান। 

১৯৮৩ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ সরকারের ১১২ সদস্যের মন্ত্রিসভায় স্থান পান চারজন নারী। তারা হলেন- সৈয়দা রাবেয়া ফয়েজ, ব্যারিস্টার রাবেয়া ভূঁইয়া, ড. শাফিয়া খাতুন ও বেগম মমতা ওহাব। 

১৯৯১ সালে সংসদীয় গণতন্ত্রের ধারায় ফেরে বাংলাদেশ এবং এরপর থেকে মন্ত্রিসভা কখনও নারীশূন্য ছিল না। 

১৯৯১ সালে পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে সরকার গঠন করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। সেবারই প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী পায় বাংলাদেশ। খালেদা জিয়া ছাড়াও ওই সরকারের ৫০ সদস্যের মন্ত্রিসভায় প্রতিমন্ত্রী ছিলেন অধ্যাপক জাহানারা বেগম ও সারোয়ারী রহমান। 

১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন ১১ দিনের মন্ত্রিসভাতেও প্রতিমন্ত্রী হিসেবে ছিলেন অধ্যাপক জাহানারা বেগম ও সারোয়ারী রহমান।

১৯৯৬ সালের ১২ জুন সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়লাভ করে আওয়ামী লীগ। সে সময় শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২৬ সদস্যের মন্ত্রিসভায় প্রধানমন্ত্রী ছাড়া নারী মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ছিলেন তিনজন। তারা হলেন- সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, বেগম মতিয়া চৌধুরী ও অধ্যাপক জিনাতুন নেসা তালুকদার। ২০০১ সালে অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় ৬০ সদস্যের মন্ত্রিসভায় প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াসহ মোট তিনজন নারী ছিলেন। অন্য দুজন হচ্ছেনÑ খুরশীদ জাহান হক ও সেলিমা রহমান। 

২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গঠিত সরকারে ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে ২০১৪ সালের ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে প্রধানমন্ত্রীসহ সর্বোচ্চ সংখ্যায় মোট ৯ জন নারী মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। তারা হচ্ছেন- মতিয়া চৌধুরী, অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, ডা. দীপু মনি, মন্নুজান সুফিয়ান, শিরীন শারমিন চৌধুরী, মেহের আফরোজ চুমকি ও সালমা ইসলাম। এ সময় মন্ত্রিপরিষদে ছিলেন প্রধামন্ত্রীসহ ৩৯ জন পূর্ণ মন্ত্রী, মন্ত্রীর পদমর্যাদায় ১০ জন উপদেষ্টা, প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদায় ১ জন উপদেষ্টা এবং ২৪ জন প্রতিমন্ত্রী। 

এরপর ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গঠিত সরকারের মন্ত্রিসভায় ২০১৪ সালের ১২ জানুয়ারি থেকে ২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত বিভিন্ন সময় প্রধামন্ত্রীসহ মোট পাঁচজন নারী দায়িত্ব পালন করেন। অন্য চারজন হচ্ছেন- মতিয়া চৌধুরী, ইসমাত আরা সাদেক, মেহের আফরোজ ও তারানা হালিম। ওই মন্ত্রিসভায় ছিলেন ৩৬ পূর্ণ মন্ত্রী, পূর্ণ মন্ত্রীর পদমর্যাদায় ১ জন প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত, মন্ত্রীর মর্যাদায় ৫ জন উপদেষ্টা, ২১ জন প্রতিমন্ত্রী ও ২ জন উপমন্ত্রী। 

২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারে প্রধামন্ত্রীসহ নারী মন্ত্রী ছিলেন- পাঁচজন। অন্য চার হচ্ছেন- ডা. দীপু মনি, মন্নুজান সুফিয়ান, হাবিবুন নাহার ও ফজিলাতুন নেছা ইন্দিরা। এ মন্ত্রিসভায় ২৫ জন পূর্ণ মন্ত্রী, পূর্ণ মন্ত্রীর পদমর্যাদায় ৬ জন উপদেষ্টা, ১৮ জন প্রতিমন্ত্রী এবং ৩ জন উপমন্ত্রী ছিলেন।

নির্বাচনে নারী প্রার্থী 

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর মনোনয়নের বাইরেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নারীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদের সাধারণ নির্বাচনে ৩০০ আসনে ১ হাজার ৮৯৫ জন প্রার্থী ছিলেন, যাদের মধ্যে ৯৪ জন নারী। এই ৯৪ জনের মধ্যে ২৬ জন ছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী। নির্বাচনে জয়ী হন ১৯ জন। বিজয়ীদের মধ্যে ১৫ জন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের এবং ৪ জন স্বতন্ত্র। 

বাকি যে ৭৫ জন নারী জিততে পারেননি, তাদের মধ্যে মমতাজ বেগম, মেহের আফরোজ চুমকি ও সানজিদা খানমের মতো শক্তিশালী প্রার্থীও ছিলেন।

একাদশ জাতীয় সংসদের সাধারণ নির্বাচনে নারী প্রার্থী ছিলেন ৬৯ জন। এর মধ্যে নির্বাচিত হন ২২ জন। দেশের সংসদ নির্বাচনের ইতিহাসে ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনেই সর্বোচ্চসংখ্যক নারী নির্বাচিত হন। 

দশম জাতীয় সংসদের সাধারণ নির্বাচনে নারী প্রার্থী ছিলেন ২৮ জন। এদের মধ্যে জয়ী হন ১৮ জন। নবম জাতীয় সংসদের সাধারণ নির্বাচনে নারী প্রার্থী ছিলেন ৫৯ জন। এদের মধ্যে নির্বাচিত হন ১৯ জন। অষ্টম জাতীয় সংসদের সাধারণ নির্বাচনে নারী প্রার্থী ছিলেন ৩৮ জন। এদের মধ্যে নির্বাচিত হন ৬ জন। সপ্তম জাতীয় সংসদের সাধারণ নির্বাচনে (১৯৯৬ সালের ১২ জুন অনুষ্ঠিত) নারী প্রার্থী ছিলেন ৪২ জন। এদের মধ্যে নির্বাচিত হন ৫ জন। ১৯৯৬ সালের ১৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদের ষষ্ঠ সাধারণ নির্বাচন একটি ব্যর্থ নির্বাচন হিসেবেই পরিচিত এবং এ নির্বাচনের বিস্তারিত তথ্য নির্বাচন কমিশনে সংরক্ষিত নেই। ১৯৯১ সালে ২৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত পঞ্চম সাধারণ নির্বাচনে নারী প্রার্থী ছিলেন ৪০ জন। এদের মধ্যে জয়ী হন ৪ জন। 

যদিও সরাসরি নির্বাচনে নারী বিজয়ীর সংখ্যা কম তবে একে ইতিবাচক হিসেবেই দেখতে চান অনেক বিশ্লেষক। কারণ নির্বাচনে নারী প্রার্থীর সংখ্যা বাড়লে দেশের বৃহৎ একটি জনগোষ্ঠীর মতপ্রকাশের পথ আরও ভালোভাবে উন্মুক্ত হবে।

সাধারণ এবং সরাসরি নির্বাচনের বাইরেও জাতীয় সংসদে নারী প্রতিনিধিত্ব বাড়াতে ১৯৭৩ সাল থেকে সংরক্ষিত নারী আসনের বিধান চালু হয়। এই আসন ১৫টি থেকে বেড়ে এখন ৫০টিতে দাঁড়িয়েছে। বিদ্যমান আইন অনুসারে এই সংরক্ষিত আসন ২০৪৩ সাল পর্যন্ত বহাল থাকবে। অবশ্য সংরক্ষিত আসনে সরাসরি নির্বাচন হয় না। রাজনৈতিক দলগুলোর সব কমিটিতে ৩৩ শতাংশ নারী সদস্য রাখার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী, এ লক্ষ্য অর্জন করার কথা ছিল ২০২০ সালের মধ্যে। তবে তা না পারায় সময় ২০৩০ সাল পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।

লিঙ্গসমতা প্রতিষ্ঠায় ১২ ধাপ অগ্রগতি বাংলাদেশের

লিঙ্গসমতা প্রতিষ্ঠায় বিশ্বের ১৪৬ দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৫৯তম। গত বছরের চেয়ে ১২ ধাপ এগিয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার এ দেশ। গত বছর জুনে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম (ডব্লিউইএফ) প্রকাশিত সর্বশেষ প্রতিবেদনে এ চিত্র উঠে এসেছে। এতে দেখা যায়, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে লিঙ্গসমতা প্রতিষ্ঠায় প্রথম স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। ২০২২ সালে বাংলাদেশের বৈশ্বিক অবস্থান ছিল ৭১তম।

‘গ্লোবাল জেন্ডার গ্যাপ-২০২৩’ শীর্ষক প্রতিবেদনটিতে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ভারতের অবস্থান ১২৭তম, পাকিস্তান ১৪২তম, নেপাল ১১৬তম, শ্রীলঙ্কা ১১৫তম এবং ভুটান ১০৩তম স্থানে।

বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরাম তাদের এই লিঙ্গসমতা সূচক প্রকাশ করে আসছে ২০০৬ সাল থেকে।

অর্থনীতিতে অংশগ্রহণ, শিক্ষার সুযোগ, স্বাস্থ্যসেবাপ্রাপ্তি এবং রাজনৈতিক ক্ষমতায়নÑ এ চার মাপকাঠিতে নারী-পুরুষের বৈষম্য বিবেচনা করে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়।

সূচকে একটি দেশের অবস্থান নির্ধারণ করা হয় একভিত্তিক স্কেলে, যেখানে এক মানে হলো পুরো সমঅধিকার, আর শূন্য মানে পুরোপুরি অধিকারবঞ্চিত। সূচকে এ বছর বাংলাদেশের মোট স্কোর ০.৭২২, যা গত বছর ছিল ০.৭১৪।

নারীর ক্ষমতায়নের সূচকে ৫৫.২ শতাংশ স্কোর নিয়ে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান সপ্তম। ডব্লিউইএফ বলছে, বাংলাদেশে গত ৫০ বছরের মধ্যে ২৯.৩ বছর রাষ্ট্রপ্রধানের দায়িত্ব পালন করেছেন নারী।

যা বিশ্বে দীর্ঘ সময় ধরে কোনো দেশের নারীর শাসনাধীন থাকার রেকর্ড। তবে বাংলাদেশে মন্ত্রী পদে নারীর দায়িত্ব পালনের হার মাত্র ১০ শতাংশ এবং সংসদীয় অবস্থানে এই হার ২০.৯ শতাংশ।

এবারের এই সূচকে ২০২২ সালের মতো শীর্ষ স্থানে রয়েছে আইসল্যান্ড। দেশটির স্কোর ০.৯১২। আইসল্যান্ডের পরই শীর্ষ ১০ দেশের তালিকায় আছে নরওয়ে (দ্বিতীয়), ফিনল্যান্ড (তৃতীয়), নিউজিল্যান্ড (চতুর্থ), সুইডেন (পঞ্চম), জার্মানি (ষষ্ঠ), নিকারাগুয়া (৭ম), নামিবিয়া (৮ম), লিথুয়ানিয়া (৯ম) ও বেলজিয়াম (১০ম) আর সূচকের একেবারে তলানিতে রয়েছে যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তান। বিশ্বে নারী-পুরুষের সমতা সূচকে সবচেয়ে বেশি বৈষম্যের এই দেশটির স্কোর ০.৪০৫।

দক্ষিণ এশিয়ায় নারী-পুরুষের ব্যবধান বাংলাদেশেই সবচেয়ে কম রয়েছে। উন্নত বিশ্বের অনেক দেশের তুলনায় সূচকে অনেক দিক দিয়ে পিছিয়ে থাকলেও লিঙ্গসমতায় চীন (১০৭তম), জাপানের (১২৫তম) চেয়ে এগিয়ে আছে বাংলাদেশ।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা