× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

সমন্বয়হীন অভিযান

রাজবংশী রায় ও ফয়সাল খান

প্রকাশ : ০৬ মার্চ ২০২৪ ০৮:৩৪ এএম

আপডেট : ০৬ মার্চ ২০২৪ ০৮:৫৪ এএম

রাজধানীর বেইলি রোডে ভয়াবহ আগুনে নিহত ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক লুৎফুন নাহার লাকি স্মরণে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধ জানায় শিক্ষার্থীরা। ছবি : আলী হোসেন মিন্টু

রাজধানীর বেইলি রোডে ভয়াবহ আগুনে নিহত ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক লুৎফুন নাহার লাকি স্মরণে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধ জানায় শিক্ষার্থীরা। ছবি : আলী হোসেন মিন্টু

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বহুতল ভবনে থাকা হোটেল, রেস্টুরেন্টে সাঁড়াশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে। বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজ নামের ভবনে লাগা আগুনে ব্যাপক হতাহতের ঘটনার পর থেকে রাজউক, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, পুলিশ ও র‌্যাব একের পর এক অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে।

মঙ্গলবার (৫ মার্চ) পর্যন্ত এরকম ছয় শতাধিক অভিযান চালানো হয়েছে। এর মধ্যে গতকাল এক দিনেই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ৪৫৫টি রেস্তোরাঁয় অভিযান চালায় পুলিশ। এ সময় ৫৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। বেইলি রোডের আগুনের পর থেকে পুলিশ মোট ৫৬২টি রেস্টুরেন্টে অভিযান চালিয়ে ৫০৩ জনকে গ্রেপ্তার করে, যাদের বেশিরভাগই ওইসব হোটেল-রেস্তোরাঁর সাধারণ কর্মচারী।

পাশাপাশি অন্যান্য সংস্থা অভিযান চালিয়ে অবৈধ রেস্টুরেন্টগুলো চিহ্নিত করে জরিমানার পাশাপাশি অনেকগুলো সিলগালা করে দিয়েছে। রাজউক গতকাল বেইলি রোড এলাকায় অভিযান চালিয়ে চারটি রেস্টুরেন্ট সিলগালা করে দিয়েছে। খিলগাঁওয়ে অভিযান চালায় ফায়ার সার্ভিস ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। এ সময় একটি রেস্টুরেন্ট সিলগালা করা হয়। অনেক প্রতিষ্ঠানকে জরিমানার পাশাপাশি সতর্ক করা হয়েছে। অভিযানে গ্রেপ্তার এড়াতে অনেক হোটেল-রেস্টুরেন্ট মালিককে প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে পালিয়ে যেতে দেখা গেছে।

হোটেল-রেস্তোরাঁয় চলমান অভিযানকে সমর্থন করেই অনেকে সমন্বয়হীনতার অভিযোগ তুলেছেন। তারা মনে করেন, আলাদা আলাদাভাবে না করে সব সংস্থা যৌথভাবে অভিযান চালালে সেটি অনেক বেশি ফলপ্রসূ হবে। বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মুজিবুল হকও গতকাল অভিযানে সমন্বয়হীনতার সমালোচনা করে জাতীয় সংসদে বক্তব্য দিয়েছেন।

এদিকে অভিযান চালানোর সময় সেখানকার কর্মীদের গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠানোর ঘটনাকে অন্যায্য বলে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন মানবাধিকারকর্মী ও আইন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, কেউ বৈধ কিংবা অবৈধভাবে হোটেল-রেস্টুরেন্ট পরিচালনা করছেন কি না তা কর্মীদের জানার কথা নয়। জমির মালিকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ভবনের অনুমোদন দেয় রাজউক। বিল্ডিং কোড না মানলে সেটি তো এ দু’পক্ষের দায়। সেই অবৈধ ভবন ভাড়া নিয়ে কেউ রেস্টুরেন্ট গড়ে তুললে তারও দায় আছে। তবে রাজউক ও ভবন মালিক সবার আগে আসবে। তারা তো কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। তাহলে কর্মীদের কেন গ্রেপ্তার করা হচ্ছে? এসব বেকার যুবক অত্যন্ত কম বেতনে রেস্তোরাঁয় কাজ করে পরিবারের ভরণ-পোষণ নির্বাহ করে। তাদের গ্রেপ্তার করা কোনোভাবেই মানবিক হতে পারে না। সমন্বয়ের মাধ্যমে অভিযান চালানো হলে এ ধরনের ঘটনা ঘটত না বলে মনে করেন তারা। 

অভিযানে সমন্বয় নেই

গত বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজ ভবনে আগুন লাগে। ওই ঘটনায় ৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। আগুনের ঝুঁকি ও অনুমোদন না থাকার পরও ভবনটিতে আটটি রেস্তোরাঁ চলছিল। ভবনটিতে ভয়াবহ আগুনের পর নড়েচড়ে বসে সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষ। নকশা ও অনুমোদনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে বাণিজ্যিক কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া ভবনগুলোর বিরুদ্ধে অভিযানে নামে রাজউক। ওই ঘটনার পর ধানমন্ডি, খিলগাঁও, মিরপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় একই রকম অনিরাপদ পরিবেশে ভবনজুড়ে রেস্তোরাঁ গড়ে তোলার বিষয়টি আলোচনায় আসে। রবিবার থেকে রাজধানীতে অভিযান শুরু করে রাজউক, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, পুলিশ ও র‌্যাব। সেই ধারাবাহিকতায় আবাসিক ভবনে নিয়মের বাইরে গিয়ে বানানো রোস্তোরাঁগুলো বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। গত সোমবার ধানমন্ডির সাত মসজিদ রোডের গাউসিয়া টুইন পিক ভবনে অভিযান চালিয়ে সব রেস্তোরাঁ বন্ধ করে দেওয়া হয়। গতকাল বেইলি রোডের দুর্ঘটনাস্থলে যান রাজউকের ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় নবাবী ভোজ, সুলতানস ডাইন, পিজ্জা মাস্তান ও রুস্টার ক্যাপ নামের চারটি রেস্তোরাঁ সিলগালা করে দেওয়া হয়।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ও ফায়ার সার্ভিসের অভিযানের সময় খিলগাঁওয়ের ‘নাইটিঙ্গেল স্কাইভিউ’ নামের বহুতল ভবনটি সিলগালা করে দেওয়া হয়। ভবনটির একটি তলা বাদে সবকটিতে রেস্তোরাঁ রয়েছে। 

এদিকে রাজধানীর বিভিন্ন রেস্তোরাঁয় সরকারি সংস্থাগুলোর চালানো অভিযানকে ‘হয়রানি’ বলে দাবি করেছে রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি। গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে সমিতির মহাসচিব ইমরান হাসান বলেন, রেস্তোরাঁয় অভিযানের নামে রাজধানীতে তাণ্ডব চলছে। রাজধানীর সকল রেস্তোরাঁয় সিটি করপোরেশন, রাজউক বা সরকারের আরও অনেক সংস্থা হয়রানি করছে। এটা কোনো সভ্য দেশে হতে পারে না। হয়রানি না করে সমস্যা সমাধানে টাস্কফোর্স গঠনের দাবি জানান তিনি।

রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি জানায়, বর্তমানে দেশে ৪ লাখ ৮১ হাজার রেস্তোরাঁয় ৩০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান রয়েছে। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ২ কোটি মানুষের জীবিকা এ পেশার ওপর নির্ভরশীল। 

ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (এডিসি) কে এন রায় নিয়তি জানান, মঙ্গলবার ৪৫৫টি হোটেল-রেস্তোরাঁয় অভিযান চালানো হয়। মোট ৫টি মামলা করা হয় এবং মোট প্রসিকিউশন সংখ্যা ২২৯টি। 

‘কর্মীদের গ্রেপ্তার অমানবিক’

মানবাধিকারকর্মী ও আইনজীবী দিলরুবা শরমিন প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, হোটেল, রেস্তোরাঁয় যেভাবে অভিযান চলছে এটি শাক দিয়ে মাছ ঢাকার মতো। মানুষের দৃষ্টি ভিন্ন দিকে ঘোরাতে এ ধরনের সমন্বয়হীন অভিযান চালানো হচ্ছে। কোনো ভবন ত্রুটিপূর্ণ থাকলে রাজউকের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংশ্লিষ্টদের দায়। আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে ভবন মালিকের ইচ্ছামতো ভবন নির্মাণের সুযোগ রাজউকই করে দেয়। ওইভাবে ভবনে অভিযান হলে আগে তো রাজউকের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও ভবন মালিকের গ্রেপ্তার হওয়ার কথা। ওই অবৈধ ভবন ভাড়া নিয়ে রেস্তোরাঁ গড়ে তোলা মালিক এরপর আসবে। কিন্তু তাদের কেউ তো গ্রেপ্তার হয়নি। বেকার যুবকরা পেটের দায়ে সামান্য বেতনে চাকরি করেন। এই একটি চাকরি দিয়ে কেউ পড়াশোনার ব্যয় নির্বাহ করেন। কেউ পরিবারের ভরণ-পোষণ চালান। তাদের দোষটা কী? এভাবে তাদের গ্রেপ্তার করা অমানবিক। কোনো সভ্য সমাজে এটি হতে পারে না।’

আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) নির্বাহী পরিচালক ফারুক ফয়সাল বলেন, বেইলি রোডের ভবনে আগুনে প্রাণহানির ঘটনা দুঃখজনক। কিন্তু সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ঢাকায় গত কয়েকদিন ধরে যেভাবে অভিযান চালানো হচ্ছে, সেটিকে তাণ্ডব ছাড়া কিছুই বলা যায় না। বছরের পর বছর ধরে অবৈধভাবে রেস্তোরাঁ চলছে, সেটি সংশ্লিষ্টদের নজরে এলো দুর্ঘটনার পর। আবাসিক ভবনে রেস্তোরাঁ খোলার অনুমোদন যারা দিলেন তাদের ওপর কোনো দায় চাপল নাÑ এটি তো হতে পারে না। সঠিক বিচার হলে সবার আগে সংশ্লিষ্ট সংস্থার দায়িত্বপ্রাপ্ত যার স্বাক্ষরে হয়েছে তার শাস্তি হওয়া উচিত। এরপর ভবন মালিক ও রেস্তোরাঁ মালিকের কথা আসবে। কিন্তু যারা পেটের দায়ে অল্প বেতনে কাজ করে এসব শ্রমজীবী মানুষের দায় কোথায়? তাদের কেন গ্রেপ্তার করা হচ্ছে? এটি বেআইনি ও মানবাধিকারের লঙ্ঘন বলে মনে করি। 

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) সভাপতি অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, ভবনে ত্রুটির দায়ে একজন রেস্টুরেন্টকর্মীকে গ্রেপ্তার বা আটক করা অন্যায়। কেননা তারা এই প্রক্রিয়ার কোনো অংশই না। তাদের বলির পাঁঠা বানিয়ে দায়ীদের বাঁচিয়ে দেওয়ার এটা একটা প্রক্রিয়া। 

তিনি আরও বলেন, যে অভিযান এখন পরিচালনা করা হচ্ছে, সেটি তো নিয়মিত পরিচালনা করার কথা ছিল। দুর্ঘটনার পর বিচ্ছিন্ন অভিযান কেন? এটি কাম্য নয়। সমস্যা সমাধানে সমন্বিত অভিযান প্রয়োজন। অন্যথায় এ ধরনের অভিযান নিয়ে প্রশ্ন উঠবে।

অভিযান নিয়ে সংসদে মুজিবুল হক

ঝুঁকিপূর্ণ ও অননুমোদিত ভবনগুলোতে অভিযান কার্যক্রমে সমন্বয়হীনতা দেখা যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মুজিবুল হক। তিনি বলেছেন, সরকারের কোন সংস্থা গিয়ে কোন ভবন ভাঙবে, তা নিয়ে প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে গেছে। গতকাল জাতীয় সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে মুজিবুল হক এই অভিযোগ করেন।

বেইলি রোডে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর সরকারের পক্ষ থেকে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা জানেন না উল্লেখ করে জাতীয় পার্টির মহাসচিব বলেন, ‘রাজউক একদিকে যায়, গিয়ে একটি হোটেল বন্ধ করে। আবার দক্ষিণের সিটি করপোরেশন, তারা যাচ্ছে এক জায়গায়। ফায়ার ব্রিগেড যাচ্ছে...। একটা প্রতিযোগিতা আরম্ভ হয়ে গেছে। কে গিয়ে কোনটা ভাঙবে। কোনটা আটকাবে। কোনটা ধরবে।’ 

জাপা মহাসচিব আরও বলেন, এক ম্যাজিস্ট্রেট গিয়ে দোকান ভাঙেন। আরেকজন গিয়ে বলছেন বন্ধ করেন। এতে করে এলোপাতাড়ি হচ্ছে। ভবিষ্যতে যাতে এটা না হয়, তার জন্য দায়িত্বশীলদের সমন্বিতভাবে ধীরস্থিরভাবে অতি ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে হবে। না হলে সমন্বয়হীনতার অভাবে আবারও সমস্যা হবে।

সমন্বিত উদ্যোগের কথা বললেন রাজউক চেয়ারম্যান 

সোমবার ধানমন্ডিতে ভেঙে দেওয়া রেস্টুরেন্টের উদাহরণ দিয়ে রাজউক চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান মিঞা বলেন, রাজউকের কাছ থেকে অফিস স্পেস হিসেবে ব্যবহারের জন্য এটির অনুমোদন নেওয়া হয়। এরপর সেখানে ট্রেড লাইসেন্স, ফায়ার সার্ভিসের সনদ, কলকারখানা অধিদপ্তরের সনদ নিয়ে রেস্টুরেন্ট পরিচালনা করা হচ্ছিল। রাজউক চাইলে একা এখানে কিছু করতে পারবে না। সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে। 

রাজউক চেয়ারম্যান আরও বলেন, আগামী ১০ দিনের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের তালিকা তৈরি করা হবে। চিহ্নিত ভবনের প্রবেশমুখে ঝুঁকিপূর্ণ নোটিস টাঙিয়ে দেওয়া হবে। নোটিসে উল্লেখ থাকবে, ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ, যাতে কেউ সেখানে প্রবেশ না করে। সেবা সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানির সংযোগও বন্ধ করে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানান তিনি। 

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা