× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

তিন মাসে ১৪৩ রোহিঙ্গার হাতে বাংলাদেশি পাসপোর্ট

প্রবা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৯:৩৫ পিএম

আপডেট : ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ২০:০৮ পিএম

ভুয়া জন্ম সনদ, জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট বানিয়ে দেওয়া চক্রের ২৩ সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর সংবাদ সম্মেলন করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন-অর-রশীদ। সোমবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে। প্রবা ফটো

ভুয়া জন্ম সনদ, জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট বানিয়ে দেওয়া চক্রের ২৩ সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর সংবাদ সম্মেলন করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন-অর-রশীদ। সোমবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে। প্রবা ফটো

শক্তিশালী একটি প্রতারক চক্র গত তিন মাসে ১৪৩ রোহিঙ্গার হাতে বাংলাদেশি পাসপোর্ট তুলে দিয়েছে। শুধু তাই নয়, দেশের ভেতরে থাকা দাগি আসামি ও অপরাধীদেরও অবৈধভাবে ভুয়া জন্ম সনদ, জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট বানিয়ে দিয়েছে চক্রটি।

চক্রের সদস্যরা তিনটি পর্যায়ে কাজ করে। প্রথমে ভুয়া জন্ম সনদ তৈরি। দ্বিতীয় পর্যায়ে জন্ম সনদ দিয়ে এনআইডি কার্ড। এরপর তৃতীয় ধাপে ওই এনআইডি কার্ডের মাধ্যমে অবৈধভাবে তৈরি করা হচ্ছে রোহিঙ্গা নাগরিকসহ দাগি আসামিদের পাসপোর্ট।

সম্প্রতি রোহিঙ্গাসহ এই প্রতারক চক্রের ২৩ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ।

সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন-অর-রশীদ।

গ্রেপ্তারকৃত প্রতারক সদস্যরা। প্রবা ফটো

গ্রেপ্তার রোহিঙ্গারা হলেনউম্মে ছলিমা ওরফে ছমিরা, মরিজান ও রশিদুল। গ্রেপ্তার রোহিঙ্গা দালাল হলেন আইয়ুব আলী ও মোস্তাকিম। দুই আনসার সদস্য হলেন জামসেদুল ইসলাম ও মো. রায়হান। গ্রেপ্তার বাঙালি দালালরাজু শেখ, শাওন হোসেন ওরফে নিলয়, ফিরোজ হোসেন, মো. তুষার মিয়া। আগারগাঁও, মোহাম্মদপুর, উত্তরাতে ফিরে ফিরে কম্পিউটারের দোকান খুলে জঘন্য এ কাজে লিপ্ত গ্রেপ্তার অপর দালালরা হলেনমো. শাহজাহান শেখ, মো. শরিফুল আলম, জোবায়ের মোল্লা, শিমুল শেখ, আহমেদ হোসেন, মো. মাসুদ আলম, মো. আব্দুল আলিম, মো. মাসুদ রানা, ফজলে রাব্বি শাওন, রজব কুমার দাস দীপ্ত, আল-আমিন, মো. সোহাগ।

গ্রেপ্তারদের কাছ থেকে মোট ১৭টি পাসপোর্ট, ১৩টি এনআইডি, পাঁচটি কম্পিউটার, তিনটি প্রিন্টার, ২৪টি মোবাইল এবং পাসপোর্ট তৈরির সংশ্লিষ্ট শতাধিক দলিলপত্র জব্দ করা হয়।

জব্দকৃত আলামত। প্রবা ফটো


ডিএমপি অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন-অর-রশীদ বলেন, ‘ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জের সাদিয়া সুলতানা সাথি একজন গৃহিণী। তার পাসপোর্ট নেই, বিদেশ যাওয়ার কোনো স্বপ্নও নেই তার। দালাল চক্রটি তাকে টার্গেট করে তার এনআইডি কার্ড সংগ্রহ করে। পরে তার ছবি, ঠিকানা ও এনআইডি কার্ড ব্যবহার করে কক্সবাজারে থাকা উম্মে ছলিমার নামে রোহিঙ্গা নারীর পাসপোর্ট তৈরি দেয়। সাদিয়া সুলতানার মতো সাধারণ নারী ও পুরুষদের এনআইডি কার্ড সংগ্রহ করে গত তিন মাসে ১৪৩ জন রোহিঙ্গা নাগরিককে ভুয়া পাসপোর্ট তৈরি করে দেয় এই চক্রের সদস্যরা।’

হারুন-অর-রশীদ বলেন, ‘ঢাকা মেট্রোপলিটন গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগের একাধিক টিম রাজধানীর আগারগাঁও, মোহাম্মদপুর, যাত্রাবাড়ী ও বাড্ডায় ধারাবাহিক অভিযান চালিয়ে ২৩ ফেব্রুয়ারি পাসপোর্টসংক্রান্ত বিপুল ডকুমেন্টস, পাসপোর্ট, কম্পিউটারসহ তিন রোহিঙ্গা নারী ও পুরুষ, ১০ জন বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করে। তাদের দেওয়া তথ্য ও সংগৃহীত ডকুমেন্টস বিশ্লেষণ করে ২৫ ফেব্রুয়ারি দিনে ও রাতে কক্সবাজার, টাঙ্গাইল ও ঢাকায় ধারাবাহিক অভিযান চালিয়ে দুই আনসার সদস্যসহ রোহিঙ্গা ও বাঙালি দালাল চক্রের আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।’

তিনি বলেন, ‘গ্রেপ্তার চক্রটির একটি দল কক্সবাজার, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি থেকে আগ্রহী রোহিঙ্গাদের সংগ্রহ করে ঢাকায় নিয়ে আসে। আরেকটি দল তাদের জন্য জন্ম সনদ, এনআইডি বানিয়ে দেয়। সর্বশেষে অন্য দলটি ঢাকাসহ বিভিন্ন আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে আনসার সদস্যদের মাধ্যমে ব্যাংকে এক্সপ্রেস, সুপার এক্সপ্রেস ধরনের টাকা জমা দেওয়া, বায়োমেট্রিক্স করা ও ছবি তোলার ব্যবস্থা করে দেয়। ছয় ঘণ্টার মধ্যে জন্ম সনদের জন্য তারা ৫ হাজার থেকে ১২ হাজার টাকা নেয়। তিন দিনের মধ্যে এনআইডি করে দেওয়ার জন্য ২৫ হাজার টাকা এবং পাসপোর্ট তৈরি করার জন্য ১ লাখ থেকে দেড় লাখ টাকা নিয়ে থাকে বলে প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছে।’

হারুন-অর-রশীদ বলেন, ‘গ্রেপ্তার দালালদের মোবাইলে শত শত পাসপোর্ট করে দেওয়ার প্রাসঙ্গিক সফট ডকুমেন্টস, ডেলিভারি স্লিপ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে গত তিন মাসে রোহিঙ্গাদের ১৪৩টি পাসপোর্ট সরবরাহ করেছে। ২০১৯ সাল থেকে চক্রটি রোহিঙ্গাদের ও বাংলাদেশি দাগি অপরাধীদের ভিন্ন নাম ও ঠিকানায় হাজার হাজার পাসপোর্ট করে দিয়েছে।’

পাসপোর্টসহ হাসপাতাল ও সরকারি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানে আনসার সদস্যরা কাজ করছে। তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় দালালদের সঙ্গে মিলে প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে। আপনারা এবার দুই আনসার সদস্যকে গ্রেপ্তারও করেছেন। তাদের ব্যাপারে তদন্ত করবেন কি না, জানতে চাইলে হারুন বলেন, ‘আরও কেউ জড়িত আছে কি না, তা তদন্ত করে দেখছি। বিষয়টি আমরা আনসারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব।’

পাসপোর্ট জালিয়াতি কিংবা অবৈধভাবে পাসপোর্ট তৈরির ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কেউ জড়িত থাকার তথ্য আপনারা পেয়েছেন কি না, জানতে চাইলে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার হারুন বলেন, ‘বিষয়টি আমরা তদন্ত করছি। আমার মনে হয়, এভাবে হাজার হাজার পাসপোর্ট রোহিঙ্গারা নিয়ে যাচ্ছে, দাগি আসামিরা নিচ্ছে। অথচ কোনো ভেরিফিকেশন করা হয় না।’

দাগি আসামিদের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অনেক দাগি আসামিও এভাবে পাসপোর্ট করেছে। তাদের নাম-পরিচয় আমরা তদন্তের স্বার্থে জানাচ্ছি না। গ্রেপ্তারদের আদালতে তুলে আবেদন করা হলে পাঁচ দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছেন বিচারক। জিজ্ঞাসাবাদে আরও যারা যারা জড়িত তাদের নাম পরিচয়ও বেরিয়ে আসবে।’

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা