প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ২০:০১ পিএম
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্প আয়োজিত ‘এগ্রো বিসনেজ প্লানিং, টেকনোলজিস এন্ড মার্কেটিং এডভাইস এন্ড ইম্প্লিমেনটেশন সাপোর্ট ফর লাইভস্টক সেক্টর’ বিষয়ে প্রণীত চূড়ান্ত প্রতিবেদনের ভেলিডেশন কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মোঃ আব্দুর রহমান। প্রবা ফটো
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মোঃ আব্দুর রহমান বলেছেন, ‘প্রাণিসম্পদ খাতের উন্নয়ন ও বিস্তারে শুধু কাজ করলেই হবে না, এর গুণগত মান নিশ্চিত করতে হবে। এ খাতে গুণগত মানসম্পন্ন সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন করতে হবে।’
রবিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে হোটেল প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্প আয়োজিত ‘এগ্রো বিসনেজ প্লানিং, টেকনোলজিস এন্ড মার্কেটিং এডভাইস এন্ড ইম্প্লিমেনটেশন সাপোর্ট ফর লাইভস্টক সেক্টর’ বিষয়ে প্রণীত চূড়ান্ত প্রতিবেদনের ভেলিডেশন কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী বলেন, ‘উৎপাদিত মাংস যেন মানবদেহের জন্য উপযোগী হয়, মাংস থেকে অন্যান্য পণ্য উৎপাদন করলে সেটা যেন মানসম্পন্ন, স্বাস্থ্যসম্মত ও আন্তর্জাতিক মানের হয় সেটা নিশ্চিত করতে হবে।’
আব্দুর রহমান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়তে আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ। জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে হলে মেধাবী কর্মঠ মানুষ প্রয়োজন। আর মেধাবী ও কর্মঠ মানুষ পেতে হলে প্রয়োজন প্রাণিজ আমিষের নিয়মিত যোগান।’
দুধ, ডিম, মাছ, মাংস ছাড়া মেধাভিত্তিক জাতি গঠন সম্ভব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এসব পণ্যের যোগান নিশ্চিত করতে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত, স্মার্ট ও মেধাবী জাতি গঠনের লক্ষ্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সময়োপযোগী উল্লেখযোগ্য দৃশ্যমান কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে চলেছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আমরা ২০২৬ সাল থেকে একটি উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে যাত্রা শুরু করে ২০৩৭ সালে বিশ্বের শীর্ষ ২০টি উন্নত অর্থনীতির মধ্যে একটি হব। ২০৪১ সালের মধ্যে আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের মাধ্যমে উন্নত দেশে পরিণত হব।’
মন্ত্রী বলেন, ‘মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজিএস) ২০৩০ অর্জনে সময়োপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। প্রেক্ষিত পরিকল্পনা, সেক্টরাল প্ল্যান, সর্বোপরি বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে।’
নানামূখী উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের মাধ্যমে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘পূর্বে প্রাণিসম্পদ সেক্টর ছিল অনেকটাই অবহেলিত। অন্যান্য সেক্টরের ন্যায় প্রাণিসম্পদ সেক্টরের উন্নয়নের জন্য ‘প্রাণিসম্পদ ও ডেইরী উন্নয়ন প্রকল্প’ নামে একটি বৃহৎ প্রকল্প দিয়েছেন। প্রাণিসম্পদ ও ডেইরী উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে দেশে গবাদিপশুর জাত উন্নয়ন ও প্রযুক্তি বিনিয়োগে দক্ষতা বাড়িয়ে দুধ-মাংসের উৎপাদন বাড়ানো, খামারীরা যাতে বাজারে প্রয়োজনীয় একসেস পায় এজন্য ফরওয়ার্ড ও ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ স্থাপন, স্টেকহোল্ডারদের সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং সর্বোপরি জনসচেতনতা সৃষ্টিতে মাঠ পর্যায়ে কার্যক্রম চলমান রয়েছে।’
এ প্রকল্পটি দেশকে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, ‘এ প্রকল্পের মাধ্যমে যে সকল কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে তার মাধ্যমে ডেইরী ও পোল্ট্রি সেক্টরে বিদ্যমান সনাতন পদ্ধতির পরিবর্তে আধুনিক ও যুগোপযোগী টেকনোলজি ব্যবহার করা হচ্ছে। ফলে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২০৪১ সালের মধ্যে যে স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনের যে স্বপ্ন অভিযাত্রা সূচিত হয়েছে, তা পূরণে এ সেক্টর গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। ডেইরী উন্নয়ন বোর্ড, প্রাণিসম্পদ সেক্টরের আধুনিক ডিজিটাল ডেটাবেইজ প্রণয়ন, পশুবীমা চালুর ক্ষেত্র তৈরী এ সরকারের এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ।’
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী বলেন, ‘ফুড সেফটি সংক্রান্ত বিভিন্ন উদ্যোগ, বিশেষ করে জেলা পর্যায়ের আধুনিক পশু জবাইখানা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের কাঁচা বাজার নির্মাণ করা হচ্ছে। যার ফলে বিশৃঙ্খল ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে পশু জবাই অনেকাংশে কমে যাবে। ৩টি বিভাগীয় শহরে (রাজশাহী, খুলনা ও চট্টগ্রাম) আধুনিকমানের মেট্রো স্লটার হাউজ নির্মাণ করা হবে। যার ফলে মাংস রপ্তানিতে নতুন সুযোগ সৃষ্টি হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি সেক্টরে উন্নত ও যুগোপযোগী ব্যবসা পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে উৎপাদক, খামারি ও উদ্যোক্তাগণ যেমন বিপণন সুবিধা পাবেন, তেমনি প্রক্রিয়াকারী-ব্যবসায়ীগণও পণ্য বহুমূখীকরণের মাধ্যমে তাদের ব্যবসা প্রসারিত করতে পারবেন।’
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মো: এমদাদুল হক তালুকদার এর সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাং সেলিম উদ্দিন, প্রকল্প পরিচালক (যুগ্ম সচিব) মোঃ আব্দুর রহিম, সার্ভিস এন্ড সলিউশনস ইন্টারন্যাশন্যাল লিমিটেড (এসএসআইএল) এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো: ফরিদ উদ্দিন প্রমুখ।