সংরক্ষিত নারী আসন
প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৯:৪১ এএম
আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী লায়লা পারভীন সেঁজুতি। ছবি : সংগৃহীত
দ্বাদশ জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনে সাতক্ষীরা থেকে রাজাকারের পুত্রবধূকে মনোনয়ন দেওয়ায় চলছে তোলপাড়। আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীর নাম লায়লা পারভীন সেঁজুতি। তিনি সাতক্ষীরা জেলার দেবহাটা উপজেলার চিহ্নিত রাজাকার নেয়ামত উদ্দিন মুক্তারের পুত্রবধূ।
সংরক্ষিত নারী আসনের সদস্য মনোনীত হওয়ায় রাজাকার নেয়ামত উদ্দিন মুক্তারের খাসখামার বাড়িতে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। জেলার অধিকাংশ আওয়ামী লীগ নেতা ও সচেতন মহল ওই অনুষ্ঠানটি বর্জন করেছেন। তারা বলছেন, একজন রাজাকারের পুত্রবধূকে নারী সংসদ সদস্য মনোনয়ন দেওয়াটা দুঃখজনক এবং অপ্রত্যাশিত।
জানা গেছে, লায়লা পারভীন সেঁজুতি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মনসুর আহমেদের হাত ধরে মহিলা আওয়ামী লীগের সঙ্গে যুক্ত হন। ২০১৭ সালে জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের পদ পান। একাদশ জাতীয় নির্বাচনে বিতর্কিত ভূমিকার জন্য জেলা মহিলা আওয়ামী লীগ তাকে বহিষ্কারের প্রস্তাব পাঠায় কেন্দ্রে। কিন্তু তিনি তদবীর করে সেটা ঠেকিয়ে রাখেন। পরে সেঁজুতিকে জেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক করা হয়।
সাতক্ষীরার বাসিন্দারা জানান, সেঁজুতির বাবা আলাউদ্দিন ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা। যদিও তিনি জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের হয়ে গণবাহিনীর সদস্য ছিলেন এবং মশাল মার্কা নিয়ে ১৯৭৩ ও ১৯৭৯ সালের নির্বাচনে পরাজিত হন। ৮০ সালের দিকে তিনি জেলা আওয়ামী লীগে যোগ দিতে চাইলে তাকে দলে নেওয়া হয়নি। পরে কেন্দ্রীয় এক নেতাকে ম্যানেজ করে আওয়ামী লীগে যোগ দেন। ১৯৯৩ সালে জেলা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক হন। ১৯৯৬ সালে আততায়ীর হাতে নিহত হন।
সেঁজুতির শ্বশুর নেয়ামত উদ্দিন মুক্তার ছিলেন শান্তি কমিটির সদস্য। ১৯৭২ সালের ৫ জানুয়ারি দালাল আইনের মামলায় তিনি গ্রেপ্তার হন। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক বিভিন্ন বইয়ে তার গ্রেপ্তারের বিষয়টি উল্লিখিত রয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম বলেন, সেঁজুতির শ্বশুরবাড়ির দিকের বেশিরভাগ মানুষই বিএনপি জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত।
জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ কামাল শুভ্র জানান, তার শ্বশুর মুক্তিযুদ্ধের সময় শান্তি কমিটিতে ছিলেন। সেজুঁতির ননদের স্বামী ইয়াকুব আলী গাজীও রাজাকার ছিলেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সেঁজুতির শ্বশুর ছাড়াও তার ভাশুর আজম ছিলেন বিএনপির সহযোগী সংগঠন কৃষক দলের আহ্বায়ক। ননদ ফেরদৌসি আরা লুসি মহিলা দলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও অন্য ননদের স্বামী সৈয়দ ইফতেখার আলী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক। এমন একটি পরিবার থেকে আওয়ামী লীগের মনোনায়ন দেওয়ায় সাতক্ষীরায় চলছে ক্ষোভ-বিক্ষোভ।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে সেঁজুতি বলেন, ‘আমি দীর্ঘদিন থেকে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যুক্ত। আমার বাবাও আওয়ামী লীগ করত। যারা আমাকে রাজাকারের পুত্রবধূ বলে নানা কথা ছড়াচ্ছে, তাদের বিষয়ে আমার কিছুই বলার নেই।