× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

সাক্ষাৎকার

নৌপরিবহন ও মেরিটাইম খাতে বাংলাদেশ এখন অনন্য

দীপক দেব

প্রকাশ : ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১০:২৮ এএম

আপডেট : ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৫:০৩ পিএম

খালিদ মাহমুদ চৌধুরী

খালিদ মাহমুদ চৌধুরী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকারের ধারাবাহিকতার কারণে এবং একই সঙ্গে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম বিশেষভাবে পরিবীক্ষণ করায় এ মন্ত্রণালয়ের সক্ষমতা অতীতের তুলনায় অনেক বেড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন পুনরায় নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়া খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি। তিনি বলেছেন, ‘২০০৮ সালের পর থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে প্রতিটি সরকারই ধারাবাহিকভাবে সফলতা পেয়েছে। এ কারণে জনগণ ভোট দিয়ে টানা চতুর্থ মেয়াদে আওয়ামী লীগকে আবারও ক্ষমতায় বসিয়েছে। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ও এই সফলতার অংশীদার।’

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর থেকে নদী রক্ষাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে আসছেন। তার একান্ত প্রচেষ্টা ও দিকনির্দেশনায় ইতোমধ্যে অনন্য উচ্চতায় পৌঁছেছে এ মন্ত্রণালয়। এ মন্ত্রণালয়ে অতীতের চেয়ে কর্মচাঞ্চল্য ও বাজেট দুটোই বেড়েছে। বেড়েছে বাজেট বাস্তবায়নের সক্ষমতাও। 

সক্ষমতা বৃদ্ধির উদাহরণ তুলে ধরতে গিয়ে খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘একসময় শ্রীলঙ্কা ও সিঙ্গাপুরের ওপর নির্ভরশীল বাংলাদেশ এখন মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের মধ্য দিয়ে নৌপরিবহন ও মেরিটাইম খাতে বড় সক্ষমতা অর্জন করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ আইএমও নির্বাচনে কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছে। এতে করে এ দেশ বিশ্বদরবারে অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে গেছে। সক্ষমতা দৃশ্যমান হয়ে ওঠায় এই সেক্টরে বিদেশি বিনিয়োগের আগ্রহ বেড়েছে। এই আগ্রহ ধরে রাখতে পারলে স্মার্ট বাংলাদেশ কাক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছবে।

গত ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে টানা চতুর্থবারের মতো ক্ষমতায় আসীন হয়েছে আওয়ামী লীগ সরকার। সফল ভূমিকা রাখায় টানা দ্বিতীয় মেয়াদে বর্তমান সরকারের নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি। ২০২৪ সালের ১১ জানুয়ারি মন্ত্রিপরিষদের সদস্য হিসেবে শপথ নিয়ে মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বগ্রহণের পর সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে প্রতিদিনের বাংলাদেশকে তিনি এসব কথা বলেন।

নদীরক্ষায় নতুনভাবে শুরু হয়েছে ড্রেজার কার্যক্রম

নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অগ্রগতি সম্পর্কে মূল্যায়ন করতে গিয়ে প্রতিদিনের বাংলাদেশকে প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘২০০৯ সালে নবগঠিত আওয়ামী লীগ সরকার নতুনভাবে ড্রেজার সংগ্রহ কার্যক্রম হাতে নেয়। বিআইডব্লিউটিএ ছাড়াও বেসরকারি পর্যায়ে বর্তমানে ড্রেজার ২০০ ছাড়িয়ে গেছে। কারণ প্রধানমন্ত্রী নদীকে রক্ষায় পদক্ষেপ নিয়েছেন। তার (শেখ হাসিনা) মতে, নদীকে বাঁচাতে হবে, নদী না বাঁচলে বাংলাদেশকে বাঁচানো যাবে না।’ তিনি জানান, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ১০ হাজার কিলোমিটার নৌপথ খননের কথা বলেছেন। সেটাও আমরা সম্পন্ন করতে চাই। বদ্বীপ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় সম্মিলিতভাবে কাজ করবে।’ 

বিশেষ দৃষ্টি কর্মসংস্থানে

সামনের দিনগুলোতে এ মন্ত্রণালয় নতুন কী পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছেÑ জানতে চাইলে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনী ইশতেহারে বলেছেন, ‘উন্নয়ন দৃশ্যমান, বাড়বে এবার কর্মসংস্থান।’ এই প্রতিপাদ্যকে ধারণ করে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় বিশেষ করে তরুণদের জন্য কর্মসংস্থানের ওপর বিশেষ নজর দিয়েছে। ইতোমধ্যেই কিছু প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। পাইপলাইনে রয়েছে আরও প্রকল্প। সেগুলো বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দক্ষ জনবল তৈরি করা হচ্ছে। এ লক্ষ্যে কাজ করছে ন্যাশনাল মেরিটাইম ইনস্টিটিউট। বছরে ৬০০ জনকে প্রশিক্ষণ দিয়ে সমুদ্রগামী জাহাজে চাকরির ব্যবস্থা করছে এ প্রতিষ্ঠান। ভূমিকা রাখছে মেরিন একাডেমিগুলোও। দুজন নারী ইতোমধ্যে বিদেশি জাহাজে নাবিক হিসেবে যুক্ত হয়েছেন। এটা মাইলফলক। নারী ক্যাডেটরা সাহসিকতার সঙ্গে ভালো ভূমিকা রাখছেন। বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনেও এ মন্ত্রণালয় বড় ভূমিকা রাখছে।’ 

সংস্কার করা হয়েছে ২৫টি নদীবন্দর, স্থাপন করা হয়েছে নতুন ১৮টি

নদীবন্দর ও জাহাজ চলাচলের বিষয়ে পরিকল্পনার কথা জানতে চাইলে খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর মাধ্যমে যাত্রী ও পণ্য পরিবহন করা হয়। ইতোমধ্যে ২৫টি নদীবন্দর আধুনিক ও সংস্কার করা হয়েছে। পাশাপাশি নতুন ১৮টি নদীবন্দর ঘোষণা ও স্থাপন করা হয়েছে। আপগ্রেড করতে পারলে এগুলো অর্থনীতিতে যুগান্তকারী ভূমিকা রাখবে।’ 

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘একসময় বাংলাদেশে ৩০টি পতাকাবাহী জাহাজ ছিল। এর সংখ্যা ৬১টি ছাড়িয়ে গেছে। আমরা এ সংক্রান্ত নীতিমালায় কিছু পরিবর্তন এনেছি। আশা করছি, আগামী ২-৩ বছরে পতাকাবাহী জাহাজ ২০০ থেকে ৩০০-তে উন্নীত হবে। অনেক বিদেশি জাহাজ নিবন্ধন করাতে চাইছে। সম্প্রতি আবুধাবি থেকে ৩০টি জাহাজ নিবন্ধনের প্রস্তাব এসেছে। এ ধরনের প্রস্তাব কিন্তু আসলে বিনিয়োগ। বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধির অর্থ বাংলাদেশের প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধি। এটি দেশরত্ন শেখ হাসিনার সফল দৃষ্টিভঙ্গির কারণে সম্ভব হয়েছে।’

ডিজিটালাইজড ও অটোমেশন হয়েছে সমুদ্রবন্দরে

বন্দরের সক্ষমতার চিত্র তুলে ধরে খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘বন্দরগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধি মন্ত্রণালয়ের একটি বড় সাফল্য। দেশে পোর্ট ছিল একটিÑ চট্টগ্রাম বন্দর। সেটির সক্ষমতা বেড়েছে ব্যাপকভাবে। এটিকে ডিজিটালাইজড ও অটোমেশন করা হয়েছে। ধুঁকে ধুঁকে চলত মোংলা বন্দর। এটির আধুনিকায়ন হয়েছে। ৯ মিটার ড্রাফটের জাহাজ এখন এ বন্দরের জেটিতে ভিড়তে পারে। পিপিপি মডেলে জেটি নির্মাণের কাজ চলছে। মোংলা বন্দরের সঙ্গে সংযোগকারী রেলপথ ও সড়কপথ তৈরি হচ্ছে। পাশাপাশি নতুন একটি পোর্টÑযেটিকে বলা হচ্ছে শেখ হাসিনার পোর্ট, সেই পায়রা বন্দরের ফার্স্ট টার্মিনাল কার্যক্রম শেষের পথে। বাণিজ্যিক জাহাজ অপারেশন শুরু করেছে। পায়রাকে ঘিরে অর্থনৈতিক অঞ্চল হয়েছে। পোর্ট যে একটি জনগোষ্ঠীকে বদলে দিতে পারে, তার বড় দৃষ্টান্ত পায়রা বন্দর।’ 

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা একসময় সমুদ্র পরিবহনে সিঙ্গাপুর ও শ্রীলঙ্কার ওপর নির্ভরশীল ছিলাম। ফিডার ভেসেল দিয়ে মালামাল আনা-নেওয়া করা হতো। কিন্তু সক্ষমতা অর্জন করছি মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে। এই যে নৌপরিবহন ও মেরিটাইম খাতে বড় সক্ষমতা অর্জন করেছি, সেটা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সম্ভব হয়েছে। তারই দৃষ্টান্ত আইএমও নির্বাচনে আমরা কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছি। এতে বাংলাদেশ বিশ্বদরবারে অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে গেছে। বিশ্বমানের শিপিং ইয়ার্ড তৈরি হয়েছে। বেসরকারি ইয়ার্ড থেকে বরফ কেটে চলাচল করবে এমন জাহাজ তৈরি হচ্ছে। বিশেষায়িত ড্রেজার, যুদ্ধজাহাজ তৈরির সক্ষমতা বড় ব্যাপার। কাজেই বাংলাদেশ জাহাজ নির্মাণের ক্ষেত্রে অন্যরকম উচ্চতায় উন্নীত হচ্ছে।’

আপগ্রেড, অটোমেশন ঘটছে স্থলবন্দরগুলোতেও

নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘২০০১ সালে শেখ হাসিনা স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ তৈরি করেন। স্থলবন্দরের সেবা বৃদ্ধিতে আপগ্রেড হচ্ছে প্রতিনিয়ত। বেনাপোল অটোমেশন হয়ে গেছে। ভোমরা, বোলাগঞ্জ আপগ্রেড চলছে। খাগড়াছড়ির রামগঞ্জ, আখাউড়ায় কার্যক্রম চলছে। কয়েকটি স্থলবন্দর চলছে বেসরকারি অপারেটরের মাধ্যমে।’ তিনি বলেন, ‘কেবল ব্যবসাবাণিজ্য নয়, ভারতের সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্বপূর্ণ ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক রয়েছে। এতে স্থলবন্দরও ভূমিকা রাখছে। এগুলো আরও বেশি সহজ করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। অনঅ্যারাইভাল ভিসা চালু নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার অংশ হিসেবে সবকিছুকে উন্নত মানে নিয়ে আসা হবে।’

টার্গেট ১০টি গ্রিন ইয়ার্ড নির্মাণ

এই মন্ত্রণালয়ের আরেকটি খাত শিপ ব্রেকিংয়ের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘শিপ ব্রেকিংয়ের ক্ষেত্রে হংকং কনভেনশন স্বাক্ষর করেছি। ১০টি গ্রিন ইয়ার্ড তৈরির টার্গেট রয়েছে। এক বছরের মধ্যে মন্ত্রণালয় সেই জায়গায় পৌঁছবে বলে আশা করছি। বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনেরও সক্ষমতা বেড়েছে। লোকসানি খাত লাভে পরিণত হয়েছে। গত বছর মুনাফা হয়েছে আড়াইশ কোটি টাকার ওপর। চলতি অর্থবছরে মুনাফা এর মধ্যেই ৫০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। শিপিং করপোরেশনে নতুন জাহাজ যুক্ত হচ্ছে। ভূরাজনীতি ও বিশ্ব পরিস্থিতি বিবেচনায় এটির প্রয়োজন ছিল। এটি প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শিতার ফসল।’

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা