ড. ইউনূস প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী
কূটনৈতিক প্রতিবেদক
প্রকাশ : ৩০ জানুয়ারি ২০২৪ ১৯:০৮ পিএম
আপডেট : ৩০ জানুয়ারি ২০২৪ ১৯:৪৯ পিএম
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। সংগৃহীত ছবি
ড. ইউনূসকে নিয়ে নিউজ নয়, ওয়াশিংটন পোস্টে বিজ্ঞাপন ছাপা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, ‘এ রকম বিজ্ঞাপন আগেও ছাপানো হয়েছে। তবে ড. মুহাম্মদ ইউনূস সাহেবের প্রতি যথাযথ সম্মান ও শ্রদ্ধা রেখেই বলতে চাই, বাংলাদেশে বিচার প্রক্রিয়া স্বচ্ছ এবং বিচার প্রক্রিয়া স্বচ্ছ বিধায় সরকারি দলের অনেককে বিচারের সম্মুখীন হতে হয়, জেলেও যায়।’
মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে ১৪টি দেশের অনিবাসী রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনারদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
ড. ইউনূসকে নিয়ে দেওয়া মামলার রায়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়নি উল্লেখ করে তৃতীয়বারের মতো সরকারপ্রধান শেখ হাসিনাকে খোলা চিঠি দিয়েছেন ১২৫ জন নোবেল বিজয়ীসহ ২৪২ জন বিশ্বনেতা। ১ জানুয়ারিতে দেওয়া চিঠিটি পরে ওয়াশিংটন পোস্টের পাতাজুড়ে বিজ্ঞাপন আকারে প্রকাশিত হয়। তবে বিভিন্ন গণমাধ্যমে একে প্রতিবেদন হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘শ্রমিক-কর্মচারীরাই ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। এই মামলায় সরকার কোনো পক্ষ না।’
অনিবাসী রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনারদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তারা প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রগতির ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। কেউ কেউ ১০ বছর আগে এখানে এসেছিলেন, দুয়েকজন বলেছেন, ১২ বছর আগে এখানে এসেছিলেন আবার ২০২০ সালেও এসেছিলেন। তারা বলেছেন, আগের ও আজকের মধ্যে অনেক পার্থক্য, বাংলাদেশের অনেক উন্নয়ন-অগ্রগতি হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘প্রতিটি দেশই বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক এগিয়ে নিতে এবং অনেকেই বিনিয়োগ বৃদ্ধির আগ্রহ প্রকাশ করেছে। কয়েকটি দেশ আমাদের দক্ষ জনশক্তি আমদানির আগ্রহ ব্যক্ত করেছে। আফ্রিকায় কৃষি খাতেও এই সুযোগ রয়েছে।’
বোতসোয়ানা, কম্বোডিয়া, চেক রিপাবলিক, গাম্বিয়া, হাঙ্গেরি, জ্যামাইকা, লুক্সেমবার্গ, নর্থ মেসিডোনিয়া, পেরু, স্লোভাক রিপাবলিক, স্লোভেনিয়া, উরুগুয়ে ও ভেনিজুয়েলার রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনাররা সৌজন্য সাক্ষাতে যোগ দেন। সাক্ষাৎ শেষে তাদের জন্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জীবনভিত্তিক ‘মুজিব : একটি জাতির রূপকার’ চলচ্চিত্রটি প্রদর্শিত হয়। পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন ও মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সুইডেনের রাষ্ট্রদূত ও বিমসটেক মহাসচিবের সাক্ষাৎ
এ দিন দুপুরে সেগুনবাগিচায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন সুইডেনের রাষ্ট্রদূত আলেকজান্দ্রা বার্গ ভন লিন্ডে ও বিমসটেক মহাসচিব ইন্দ্র মনি পান্ডে।
রাষ্ট্রদূত লিন্ডের সঙ্গে বৈঠকে সবুজ শক্তি ও বর্জ্য থেকে শক্তি আহরণে সহযোগিতা এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগে সুইডেনের সহায়তা নিয়ে আলোচনা করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে আলোচনায় মন্ত্রী রাষ্ট্রদূতকে জানান, রোহিঙ্গাদের পূর্ণ অধিকারসহ নিজ দেশ মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনই একমাত্র সমাধান। সুইডেন এ বিষয়ে সহায়তা অব্যাহত রাখবে বলে জানায়। এ সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিযুক্ত হওয়ায় ড. হাছান মাহমুদকে দেওয়া সুইডেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর অভিনন্দনপত্রটি মন্ত্রীকে হস্তান্তর করেন আলেকজান্দ্রা বার্গ ভন লিন্ডে।
১৯৯৭ সালে গঠিত বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, মিয়ানমার, নেপাল, শ্রীলঙ্কা ও থাইল্যান্ড—এই সাত দেশের আঞ্চলিক সহযোগিতা সংগঠন বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টিসেক্টরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কো-অপারেশনের (বিমসটেক) নতুন সেক্রেটারি জেনারেল ইন্দ্র মনি পান্ডের সঙ্গে বৈঠকে বহুপাক্ষিক আঞ্চলিক সহযোগিতার প্রসার নিয়ে আলোচনা করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
ঢাকায় বিমসটেক সচিবালয়ের নতুন ভবন নির্মাণের উদ্যোগ, আঞ্চলিক পর্যায়ে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলা, যোগাযোগ অবকাঠামোসহ নানা বিষয়ের পাশাপাশি চলতি বছর থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠেয় বিমসটেক দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠক নিয়েও আলোচনা হয়।