প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৯ জানুয়ারি ২০২৪ ১৭:০৯ পিএম
আপডেট : ২৯ জানুয়ারি ২০২৪ ২০:৪৪ পিএম
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি
রমজান উপলক্ষে ভোজ্য তেল, চিনি, খেজুর ও চালের শুল্কহার কমানোর নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সোমবার (২৯ জানুয়ারি) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে সরকারপ্রধান এই নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা বলেছেন, রমজানে যাতে এসব পণ্যের সরবরাহ কম না হয়।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, নির্বাচনের পর দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রী বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছিলেন এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীদের সমন্বয়ের ভিত্তিতে এটির ওপর কাজ করতে বলেছেন। আজ মন্ত্রীদের কাছ থেকে এটির সর্বশেষ অবস্থা জেনেছেন, মন্ত্রীরা কি কি কাজ করেছেন এবং তাদের অভিজ্ঞতা জানিয়েছেন। এরপর প্রধানমন্ত্রী সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দিয়েছেন।
তিনি বলেন, রমজানে যে পণ্যগুলোর দরকার হয়, বিশেষ করে খেজুর, ভোজ্য তেল, চিনি ও চাল- এই চারটি পণ্যের শুল্কহার হ্রাস করার জন্য এনবিআরকে নির্দেশনা দিয়েছেন। সেটি নিয়ে এখন তারা কাজ করছে। কী পরিমাণ কমানো হবে সেটি এনবিআর হিসাব করে দেখবে, যাতে করে দ্রব্যমূল্যের চাপটা মানুষের ওপর কম থাকে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন বাজারে যেন সরবরাহ ও চাহিদার ক্ষেত্রে কোনো ঘাটতি না থাকে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে এ ব্যাপারে নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে।
গত বছরের এই সময়ের তুলনায় এখন এলসি ওপেনের পরিমাণ অনেক বেশি আছে জানিয়ে তিনি বলেন, খাদ্য মজুতের পরিমাণ অনেক বেশি আছে। সেই তথ্যগুলো উপস্থাপন করা হয়েছে।
রমজানে ছোলা, ডাল, ভোজ্য তেল, চিনি, আদা, রসুন ও পেঁয়াজের চাহিদা থাকে কয়েকগুণ। তবে রমজান মাস আসার দেড় মাস আগেই এসব পণ্যের দাম বৃদ্ধির পালে হাওয়া লেগেছে। সূত্র জানিয়েছে, গম, ভোজ্য তেল, চিনিসহ বিভিন্ন নিত্যপণ্যের আমদানি এখনও কম। তবে উদ্যোগ বেড়েছে। অবশ্য সরকার বলছে, পণ্যের পর্যাপ্ত মজুদ আছে। তাই সরবরাহ বা ঘাটতি নিয়ে কোনো শঙ্কা নেই।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সরবারহে যেন কোনো ঘাটতি না হয়, সেদিকে সমন্বিতভাবে নজরদারি করতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোকে নির্দেশনা দিয়েছেন।
মন্ত্রীদের ‘রিপ্লাইয়ে’ প্রধানমন্ত্রী সন্তোষ প্রকাশ করেছেন বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
তিনি বলেন, উনি (প্রধানমন্ত্রী) সবকিছু শোনার পর নির্দেশনা দিয়েছেন বাকি কাজটুকু মাঠে যেভাবে আছে, সেটি কন্টিনিউ করতে। স্লাপাই যাতে কোনোভাবেই বিঘ্ন না হয়, সেজন্য এলসি ওপেন করে দিচ্ছেন, যাতে কেউ কোনো কারসাজি করতে না পারে।
নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাড়তি দাম ইস্যুতে অভিযান প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, জেলা প্রশাসকরা যে ম্যাসেজ দিচ্ছেন সেখানে তারা সাজা, জরিমানা ও জেল দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন। সাজা দেওয়া হচ্ছে না বলা হলেও সেটি ঠিক না।
নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানিতে এলসির সমস্যা নেই জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, গত বছরের এই সময়ে ৩৭ হাজার ১০৭ টন খেজুর আমদানির এলসি ওপেন করা ছিল, এবার এখন পর্যন্ত ৪৪ হাজার ৭৩৪ টন এলসি ওপেন করা আছে। গত বছর এই সময় ৯৭ হাজার ২৮৭ টন অপরিশোধিত সয়াবিন তেল আমদানির এলসি করা ছিল। এবার ১ লাখ ২৫ হাজার ৩৭৪ টনের এলসি করা আছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি করতে ডলারের সংকট আছে এটা এই পরিসংখ্যান প্রমাণ দেয় না।
গত বছর এই সময় ৩ লাখ ৩৮ হাজার ৮৭০ টন অপরিশোধিত চিনির এলসি ওপেন হয়েছিল। এবার ৩ লাখ ৮৭ হাজার ১৩৮ টন চিনি আমদানির এলসি ওপেন করা আছে বলেও জানান তিনি।