প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৯ জানুয়ারি ২০২৪ ১৬:০০ পিএম
আপডেট : ২৯ জানুয়ারি ২০২৪ ১৬:৩০ পিএম
সংবাদ সম্মেলনে নিসচা চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন। প্রবা ফটো
এক দশকেরও বেশি সময় ধরে দুর্ঘটনা নিয়ে পরিসংখ্যান প্রকাশ করে আসছে নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা)। তবে এ নিয়ে তারা আর কোনো তথ্য প্রকাশ করবে না বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
কারণ হিসেবে জানানো হয়েছে, সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে সরকারের দুই মন্ত্রণালয়, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও পুলিশ ভিন্ন তথ্য দিচ্ছে। এতে মানুষ বিভ্রান্ত হচ্ছে।
সোমবার (২৯ জানুয়ারি) সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে ‘সড়ক দুর্ঘটনার বিভ্রান্তিকর পরিসংখ্যান’ নিসচা আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন এই ঘোষণা দেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘২০১২ সাল থেকে সড়ক দুর্ঘটনার পরিসংখ্যান ২০২২ সাল পর্যন্ত জাতির সামনে তুলে ধরেছি। কিন্তু যখন দেখলাম আমাদের দেখাদেখি অনেকে সড়ক দুর্ঘটনার পরিসংখ্যান উপস্থাপন করছে এবং নানা বিতর্ক তৈরি হচ্ছে তখন এ বছর এসে আমি ২০২৩ সালের পরিসংখ্যান আর তুলে না ধরার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের এই নেতা বলেন, ‘দুর্ঘটনার পরিসংখ্যান আমরা শুরু করেছি, আমরা পথ দেখিয়েছি। শুরু থেকে আমরা প্রতিনিয়ত সরকারের কাছে একটি দাবি জানিয়ে এসেছি, এটি কোনো বেসরকারি সংগঠন বা কোনো ব্যক্তির পক্ষে প্রকৃত চিত্র তুলে আনা সম্ভব নয়। এর জন্য সরকারের একটি সার্বক্ষণিক মনিটরিং সেল এবং লোকবলের প্রয়োজন রয়েছে। কোনো ব্যক্তি উদ্যোগে করা সম্ভব নয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের কাছে যে তথ্য রয়েছে সেটিও প্রত্যেক রিপোর্টের সাথে মিলছে না। এতে করে দেখা যাচ্ছে- বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ সরকার, পুলিশ ও বিভিন্ন রিপোর্টে ভিন্নতা রয়েছে। আমরা মনে করি, এতে করে জাতি বিভ্রান্ত হচ্ছে। কারণ সরকারের বিভিন্ন মহল থেকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও বেসরকারি বিভিন্ন সংগঠনের সকল তথ্যকে অগ্রহণযোগ্য বলে তীব্র প্রতিবাদ জানায়। বিষয়টি আমাদের ভাবিয়ে তোলে।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, ‘স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরও সরকারের, সড়ক মন্ত্রণালয়ও সরকারের। তাহলে দুটি মন্ত্রণালয়ের সড়ক দুর্ঘটনার ডাটার হিসাব ভিন্ন ভিন্ন কেন? আমরা মনে করি- সরকারের দুটি মন্ত্রণালয়ের এই পারস্পরিক বিরোধী অবস্থার কারণে দেশে সঠিকভাবে দুর্ঘটনা নিরসনের কারণ উদঘাটন করা যায়নি।’
‘দেশে সড়ক দুর্ঘটনার পরিসংখ্যানের যে ধারা আমরা শুরু করি এবং টানা ১১ বছর চলমানও রাখি। কিন্তু ভাবনার জায়গায় আমরা কখনই স্থির হতে পারিনি। পারিনি বলেই ভারাক্রান্ত হৃদয়ে বলতে হচ্ছে- আমরা উল্লিখিত এসব কারণে সড়ক দুর্ঘটনার তথ্য প্রকাশ করব না,’ যোগ করেন তিনি।
নিসচা চেয়ারম্যান বলেন, ‘প্রতি বছর পুলিশ তাৎক্ষণিক মামলার ওপর ভিত্তি করে একটি রিপোর্ট প্রদান করত। সে রিপোর্ট আর আমাদের রিপোর্টের সঙ্গে ছিল বিস্তর ফারাক। পুলিশ রিপোর্ট তৈরি করা হয় শুধুমাত্র মামলার ওপর ভিত্তি করে অর্থাৎ যে দুর্ঘটনার মামলা করা হতো শুধুমাত্র সেই দুর্ঘটনার তথ্যই ঐ রিপোর্টে থাকত। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যেতো নানা কারণে অনেক দুর্ঘটনার মামলা হতো না।’