প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ০২ নভেম্বর ২০২২ ২২:৫০ পিএম
এক যুগ আগে আয়শা সিদ্দিকা লীনা নামের এক নারীর শরীরে স্বামীর এসিড ছোঁড়ার মামলার রায় দিয়েছে আপিল বিভাগ। এ রায়ে এসিড নিক্ষেপকারীর মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখায় স্বস্তি প্রকাশ করেছে নারীবাদী সংগঠন নারীপক্ষ।
বুধবার (১ নভেম্বর) সংগঠনটি থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দোষীদের যদি দৃষ্টান্তমূলক সাজা দেওয়া যায় তাহলে এসিড সন্ত্রাসের মত ঘৃণ্য অপরাধ হ্রাসে তা ভূমিকা রাখবে। একারণে আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হোক। এসিড সন্ত্রাসের ভয়াবহতা ভিকটিমকে শারীরিক ও মানসিকভাবে আজীবন বয়ে বেড়াতে হয়। যা কেবল অমানবিকই নয়, এটা বর্বর ও ঘৃণ্য অপরাধ। এধরনের অপরাধকে নমনীয় দৃষ্টিতে বিবেচনা করা হলে তা হবে বিচারের নামে তামাশার শামিল।
তবে মৃত্যুদণ্ডকে মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকারের মূলনীতি জীবনের অধিকারের সঙ্গে সাংঘর্ষিক মনে করে নারীপক্ষ।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, নারীপক্ষ শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে। মৃত্যুদণ্ড এক ধরনের আইনসিদ্ধ হত্যা। আইন-আদালতের মাধ্যমে মৃত্যুদণ্ড প্রদান রাষ্ট্র দ্বারা হত্যার শামিল। রাষ্ট্রের দায়িত্ব জনগণের জান ও মালের সুরক্ষা করা, জীবন নেয়া নয়।
এতে আরও বলা হয়, এখনও কোনো গবেষণা দাবি করেনি যে মৃত্যুদণ্ড অপরাধ দমনে কার্যকর। মৃত্যুদণ্ড প্রতিশোধক অর্থাৎ ‘মারের বদলে মার’ এবং প্রতিরোধক অর্থাৎ ‘একজনকে শাস্তি দিয়ে অপরজনকে শিক্ষা দেয়া’ এই দুই বিবেচনায়ই অকার্যকর।
নারীপক্ষের দাবি, মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হলে তা বদলানোর সুযোগ থাকে না। বাংলাদেশসহ অনেক দেশের বিচারব্যবস্থায় অপরাধের তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়া শতভাগ নির্ভরযোগ্য নয়। ফলে কখনও কখনও নিরপরাধীও দণ্ডিত হন। মৃত্যুদণ্ডের ক্ষেত্রে এই ভুল সংশোধনের আর কোনো সুযোগ থাকে না। পৃথিবীর ইতিহাসে এমন দুঃখজনক ঘটনার নজির রয়েছে।
সংগঠনটির বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, একটি মৃত্যুদণ্ডের কারণে একটি পরিবারও পতিত হয় চরম দুর্বিপাকে। এই পরিস্থিতি সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য নতুন দায় সৃষ্টি করে। অপরাধ দমনে প্রয়োজন মনো-সামাজিক বিশ্লেষণ এবং তার আলোকে অপরাধীর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়া। তাই নারীপক্ষের দাবি, বাংলাদেশের আইনে মৃত্যুদণ্ডের বিধান অনতিবিলম্বে বাতিল করা হোক।
প্রবা/এমআর