× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

তীব্র শীতে বিপর্যস্ত উত্তর-পশ্চিমের চার জেলা

প্রবা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২৮ জানুয়ারি ২০২৪ ০৯:১১ এএম

আপডেট : ২৮ জানুয়ারি ২০২৪ ০৯:১৪ এএম

ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধ তকদীর আলী। তীব্র শীতেও গায়ে নেই গরম কাপড়। ছেঁড়া লুঙ্গি জড়িয়ে শীত নিবারণের ব্যর্থ চেষ্টা তার। শনিবার সকালে পৌর এলাকার সওদাগরপাড়ায়। প্রবা ফটো

ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধ তকদীর আলী। তীব্র শীতেও গায়ে নেই গরম কাপড়। ছেঁড়া লুঙ্গি জড়িয়ে শীত নিবারণের ব্যর্থ চেষ্টা তার। শনিবার সকালে পৌর এলাকার সওদাগরপাড়ায়। প্রবা ফটো

‘মাঘের শীতে বাঘ পালায়’ এই প্রবাদ শোনেনি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। তবে চলতি বছর তীব্র শীত ও হিমপ্রবাহের কারণে দেশের উত্তর-পশ্চিমের জেলাসহ সারা দেশেই বাঘ পালানোর মতোই তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে। আর তীব্র শীতের কারণে ভোগান্তিতে পড়েছে শ্রমজীবী মানুষ। নষ্ট হয়ে যাচ্ছে ফসলি জমি। দেশের উত্তরের জেলা কুড়িগ্রাম, পঞ্চগড়, দিনাজপুর ও পশ্চিমের জেলা চুয়াডাঙ্গায় শীতে নাকাল জনজীবন।

শীতের তীব্রতার কথা জানিয়ে দিনাজপুরের বিরল উপজেলার কানদেবপুর এলাকার শ্রমিক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘মনে হয় বরফ পড়ছে বাহে, জাড়ের হিয়ালে হা-পাও ককড়া লাগি আইসেছে। রাইতোত ঘুম আইসে না। খুব সকালেই কামের তন্ন্যে বের হইবা হইচে। এখনও কাম পাও নাই। জানো না আইজ ভাইগত কী আছে।’

তীব্র শীতের কারণে একদিকে কাজে যেতে পারছে না শ্রমিকরা, অন্যদিকে খেটে খাওয়া এসব মানুষ শীতবস্ত্রের সংকটে পড়েছে। হাসপাতালগুলোয় বেড়েছে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা। বিশেষ করে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট, সর্দি-কাশিসহ শীতজনিত রোগ নিয়ে ভর্তি হচ্ছে রোগীরা। তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে থাকায় উত্তরের বেশিরভাগ জেলার মাধ্যমিক ও প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ রাখা হয়েছে।

গতকাল শনিবার এ জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৮ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। নিম্নমুখী এই তাপমাত্রা আরও কয়েক দিন অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন দিনাজপুর আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত সহকারী কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান। 

শীতে জবুথবু অবস্থা বিরাজ করছে কুড়িগ্রামে। কষ্টে পড়েছে ছিন্নমূল ও শ্রমজীবী মানুষ। গরম কাপড়ের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। 

গতকাল জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত শুক্রবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দিন দিন তাপমাত্রা নিম্নগামী হওয়ায় কনকনে ঠান্ডায় কষ্টে পড়েছে জেলার ১৬টি নদ-নদীর তীরবর্তী চার শতাধিক চরাঞ্চলের লক্ষাধিক মানুষ।

কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে গত ২৪ ঘণ্টায় শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে ৩৫৮ জন রোগী ভর্তি হয়েছে। যার মধ্যে শিশু ওয়ার্ডে ৭০ জন এবং ডায়রিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা ৪০ জন। কুড়িগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. মঞ্জুর-এ মোর্শেদ জানান, শীতজনিত রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়েছে, আর স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে রোগী ভর্তির হার বেড়েছে প্রায় ৫ শতাংশ। কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে গত ২৪ ঘণ্টায় শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে ৩৫৮ রোগী ভর্তি হয়েছে। 

৮ দশমিক ৩ তাপমাত্রায় মাঘের হাড়কাঁপানো শীতে কাঁপছে চুয়াডাঙ্গা। মৃদু শৈত্যপ্রবাহের সঙ্গে উত্তরের হিমেল হাওয়া কাবু হয়ে পড়েছে জনজীবন। সকাল থেকে সূর্যের তেমন উত্তাপ নেই। তবে মাঝে মাঝে রোদের ঝলকানি উষ্ণতা দিচ্ছে এ জেলার শীতার্ত মানুষের। 

চলতি সপ্তাহের মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারী) পর্যন্ত এ ধরনের তাপমাত্রা বিরাজ করতে পারে এবং ৩১ জানুয়ারি আকাশে মেঘ ও বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন চুয়াডাঙ্গা আঞ্চলিক আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার কেন্দ্রের ইনচার্জ মো. জামিনুর রহমান।

তীব্র কুয়াশার কারণে মহাসড়কে বেড়েছে দুর্ঘটনা। শুক্রবার রাতে পঞ্চগড়ে ঘন কুয়াশার কারণে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ট্রাকের চাপায় এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া আগুন পোহাতে গিয়ে দগ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে গত বৃহস্পতিবার এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়। 

গতকাল সকাল ৯টায় জেলায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে ৬টায় জেলায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৭ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা গতকাল ছিল ৫ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। 

সদর উপজেলার রিকশাচালক আমিনুল ইসলাম বলেন, শীতের কারণে আগের মতো যাত্রী পাইনি। খোলা রিকশাতে মানুষ উঠতে চায় না। ফলে আগের মতো এখন আয় হয় না। কষ্টের মধ্যে দিন কাটাতে হচ্ছে।

তীব্র শীতে আলু, মরিচ, সরিষাসহ ধানের বীজতলার ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। শীত মোকাবিলায় কীটনাশক স্প্রে করছেন কৃষকেরা। বেড়েছে শীতজনিত রোগের প্রকোপ। 

পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের জুনিয়র কনসালট্যান্ট (শিশু) মনোয়ারুল ইসলাম বলেন, শীতের কারণে হাসপাতালে শিশু রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। শ্বাসকষ্ট, জ্বর-সর্দি, ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।

এদিকে শীতার্তদের শীত মোকাবিলায় জেলায় সরকারের পাশাপাশি বেসরকারিভাবে শীতবস্ত্র বিতরণ অব্যাহত রয়েছে জেলাজুড়ে। জেলা প্রশাসক জহুরুল ইসলাম বলেন, জেলায় সরকারিভাবে ৩৩ হাজার শীতবস্ত্র ও ১ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ পাওয়া গেছে। এসব পর্যায়ক্রমে বিতরণ করা হচ্ছে। আগামীতে আরও বরাদ্দ পেলে তা দ্রুতই বিতরণ করা হবে।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা