× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

বিদেশি পর্যবেক্ষকদের ব্রিফিং

গণতন্ত্রচর্চায় ইতিহাস গড়েছে বাংলাদেশ

প্রবা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০৮ জানুয়ারি ২০২৪ ০২:৫১ এএম

আপডেট : ০৮ জানুয়ারি ২০২৪ ১১:০৬ এএম

ভোটকেন্দ্রের সার্বিক বিষয় পরিবদর্শন করে আনুষ্ঠানিক ব্রিফ করেছেন বিদেশি পর্যবেক্ষকরা। প্রবা ফটো

ভোটকেন্দ্রের সার্বিক বিষয় পরিবদর্শন করে আনুষ্ঠানিক ব্রিফ করেছেন বিদেশি পর্যবেক্ষকরা। প্রবা ফটো

নির্বাচন-পূর্ববর্তী পরিস্থিতি ও রবিবার নির্বাচনের দিন ভোটকেন্দ্রের সার্বিক বিষয় পরিদর্শন করে আনুষ্ঠানিক ব্রিফ করেছেন বাংলাদেশে আগত বিভিন্ন দেশের পর্যবেক্ষকরা। রবিবার (৭ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন ওআইসি, রাশিয়া, ফিলিস্তিন, কানাডা, গাম্বিয়াসহ বিভিন্ন দেশের পর্যবেক্ষকরা। অন্যদিকে নির্বাচন পর্যবেক্ষণে আসা কানাডার পার্লামেন্টের সদস্য ও সিনেটর সন্তুষ্টি জানিয়ে লিখিত বিবৃতি দিয়েছেন।

ব্রিফিংয়ে বিদেশি পর্যবেক্ষকরা বলেন, বাংলাদেশে সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও নিয়মতান্ত্রিকভাবে ভোট হয়েছে। বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কোনো ধরনের সহিংসতা চোখে পড়েনি। কেউ জোরপূর্বক ভোট দেওয়ার জন্য বাধ্য করেনি। 

অনেক মিডিয়ার উপস্থিতিতে ভোট হয়েছে। রাজনৈতিক ব্যবস্থা খুবই ভালো। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খুবই ভালো ছিল বলেও উল্লেখ করেন বিদেশি পর্যবেক্ষকরা। 

ব্রিফিংয়ে আরব পার্লামেন্ট সদস্য আবদিহাকিম মোয়ালিয়াম আহমেদ বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক চর্চায় ইতিহাস গড়েছে। তিনি বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ভোটারদের মধ্যে উচ্ছ্বাস ছিল।

ফিলিস্তিনি পর্যবেক্ষক দলের সিইও হিশাম এম ওয়াই কুহেইল বলেন, 'সারা দেশে সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও নিয়মতান্ত্রিকভাবে ভোটগ্রহণ হয়েছে। বাংলাদেশের নির্বাচন প্রক্রিয়া আন্তর্জাতিক মানের। আমরা ভোটারদের সাথে কথা বলেছি। তারা খুবই খুশি ছিল। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ছিল খুবই ভালো। ভোটাররা নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পেরেছেন।' 

ওআইসির নির্বাচন ইউনিটের প্রধান শেখ মোহাম্মদ বন্দর বলেন, 'পর্যবেক্ষক হিসেবে সহিংসতার কোনো চিহ্ন আমাদের চোখে পড়েনি। আমি অবাক হয়েছি, দোকান-পাট বন্ধ কেন! সড়কে কোনো মানুষ দেখা যায়নি। শহর ছিল শান্ত।'

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'আমাকে দুইবার প্রশ্ন করা হয়েছে, আপনি এমন একটি দেশ থেকে এসেছেন যেখানে যুদ্ধ চলছে। বাংলাদেশে আসা কি গুরুত্বপূর্ণ? বাংলাদেশে আসার জন্য আপনার ওপর কোনো ধরনের চাপ ছিল? বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের চাপ ছিল কি? না। বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সঙ্গে আমাদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। আমরা আমন্ত্রণ পেয়েছিলাম। তিন মাস আগে আমি যখন জিম্বাবুয়েতে ছিলাম, তখন আমন্ত্রণপত্র পাই। আমি ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীর থেকে এসেছি, গাজার মতো সেখানে যুদ্ধ চলছে না।'

আরব ইলেকট্রোরাল ম্যানেজমেন্ট বডির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, 'আমার দেশের পাশাপাশি আমি ওই সংগঠনেও প্রতিবেদন জমা দেবো। যে কারণে এই আমন্ত্রণে সাড়া দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ ছিল। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো অভিজ্ঞতা বিনিময়। আপনাদের অভিজ্ঞতা এবং আমি ও বাংলাদেশে আমার সহকর্মীরা আজকে যা দেখলাম। এই সফরে আমরা একে অপরের কাছ থেকে শিখলাম। এটা একটি পেশাগত সফর ছিল।'

তিনি বলেন, 'নির্বাচনী পরিবেশ দেখে আমরা সন্তুষ্ট। আমরা ভালো নির্বাচনী প্রক্রিয়া দেখেছি।' অপর প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'আমি এখনো জানি না কত শতাংশ ভোট পড়েছে। সকালে যখন আমরা কেন্দ্র পরিদর্শন করি, তখন ভোটার উপস্থিতি খুবই কম ছিল। মানুষ আশা করছিল উপস্থিতি বাড়বে। যদি বাধ্যবাধকতা না থাকে, আপনি কেন্দ্রে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন এবং কেউ আপনাকে ভোট দিতে বাধ্য করতে পারে না। ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে আপনাদের দেশে কোনো আইনি বাধ্যবাধকতা নেই, তাই এ বিষয়ে আমি কোনো মন্তব্য করতে পারি না।'

ভোটার উপস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, '১৫ বা ১৬ শতাংশ ভোট পড়লে সেটা নির্বাচন আয়োজকদের জন্য বার্তা। এর কারণ রাজনীতিকরা বিশ্লেষণ করবেন। আমি জর্ডানে অনেক নির্বাচন দেখেছি, সেখানে ৫৫ শতাংশ ভোট পড়েছে এবং সেটা ভালো নির্বাচন ছিল। তারপরও এই বিষয়টা দেখবেন রাজনীতিক ও গবেষণা সংস্থাগুলো।'

বাংলাদেশ তার নিজ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে জানিয়ে রাশিয়ার কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনার বলেন, বাংলাদেশের যে কোনো সিদ্ধান্ত বিশ্বের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার পরিস্থিতি নেই। বাংলাদেশ স্বাধীন রাষ্ট্র, স্বাধীন নীতি গ্রহণ করবে। কেউ চাপিয়ে দিলে হবে না। এ ছাড়া আমরা দেখছি, বাংলাদেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা তৈরি হচ্ছে।

এদিকে কানাডার পার্লামেন্টের সদস্য চন্দ্রা আর্য ও সিনেটর ভিকটর ওহ স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, ৭ জানুয়ারি বাংলাদেশের জন্য একটি ঐতিহাসিক দিন ছিল। কারণ এদিন নিজেদের প্রতিনিধিত্ব করতে এ দেশের নাগরিকেরা মৌলিক ও মূল্যবান ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। আজ প্রকৃত গণতান্ত্রিক ধারায় বাংলাদেশের জনগণ নির্ধারণ ও ম্যান্ডেড দিয়েছেন কারা আগামী পাঁচ বছরের জন্য বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন। আমরা এখন দেখার অপেক্ষায় থাকবো, বিজয়ী জনপ্রতিনিধিরা নির্বাচনী প্রচারণায় যেসব অঙ্গিকার করেছেন দেশ পরিচালনায় তা বাস্তবায়ন করেন কিনা।

বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা বাংলাদেশে অবতরণ করার পর থেকেই আমাদের কাজ শুরু করি। আমরা বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদগুলো মনিটর করেছি। আমরা সম্প্রতি বিবিসি, নিউ ইয়র্ক টাইমস ও ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলো পড়েছি। আমরা দেখেছি, একটি নির্দিষ্ট দল জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেয়নি এবং নির্বাচন বয়কটের ঘোষণাও দিয়েছে। 

পর্যবেক্ষণের বিষয় তুলে ধরে বিবৃতি আরও উল্লেখ করা হয়, একটি প্রধান দল নির্বাচন বয়কট করার পরও ২৮টি রাজনৈতিক দলের রেকর্ড সংখ্যক নারী প্রার্থী, ট্রান্স-জেন্ডার প্রার্থী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীসহ ১৯০০ প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেছেন। আমরা এটাও দেখেছি, একটি প্রধান রাজনৈতিক দল নির্বাচনের আগের দিন, নির্বাচনের দিন ও পরের দিন হরতাল-অবরোধ ঘোষণা করে। আমরা দেখেছি, আনুষ্ঠানিক নির্বাচনী প্রচারণার সময় কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ও সংঘর্ষ ঘটেছে। আমরা বাংলাদেশে পৌছানোর পর আমরা নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন খাতের নাগরিকদের মতামতা ও নির্বাচনী প্রক্রিয়া তাদের মত জেনেছি। আমরা নির্বাচন কমিশন, সরকারি কর্মকর্তা, উর্ধ্বতন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গে নির্বাচনী প্রক্রিয়া ও ব্যবস্থাপনা নিয়ে বৈঠক করেছি।  আমরা যাচাই করেছি ও নিশ্চিত হয়েছি যে এই নির্বাচনে অংশ নিতে সব রাজনৈতিক দলের জন্য পুরোপুরি উন্মুক্ত ছিল। আমরা এটা দেখেছি যে নির্বাচনে সব রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ভোটারদের কাছে গিয়ে নিজেদের সাধ্যমত প্রচারণা চালানোর অবধারিত সুযোগ ছিল। আর ভোটার ও বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের ভোটারদের নির্বাচনে অংশ নিতে নির্বাচন কমিশনও যথেষ্ট চেষ্টা করেছে। তারা আইনগত প্রক্রিয়া ও বাধ্যবাধকতার মধ্যে থেকে রাজনৈতিক দল, প্রার্থীদের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেছে। আমরা বলতে চাই, বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন অবাধ, সুষ্ঠু ও সাফল্যমন্ডিত নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে পেরেছে।

এর আগে সংবাদ সম্মেলনে বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারী কানাডার পার্লামেন্টের সদস্য চন্দ্রা আর্য বলেন, ভোটের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোনো কারণ নেই। তিনি বলেন, ভোটার কত শতাংশ এলো তার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যারা এসেছে তারা ঠিকমতো ভোট দিয়েছেন নির্বিঘ্নে। তাই গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার কারণ নেই।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা