× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

ভোটের মাঠে কখনও হারেননি যারা

সাজ্জাদুল ইসলাম

প্রকাশ : ০৬ জানুয়ারি ২০২৪ ১২:১১ পিএম

ভোটের মাঠে কখনও হারেননি যারা

আগামীকাল রবিবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। নির্বাচন মানে জয়-পরাজয়ের অনিশ্চয়তার খেলা। তবে এবারও এমন কয়েক প্রার্থী রয়েছেন, যারা কখনও পরাজিত হননি। তারা এবারও আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হয়ে ভোটের মাঠে রয়েছেন। বিএনপি অংশ না নিলেও নির্বাচনে উত্তাপ বাড়িয়েছেন এই প্রার্থীরা। তাদের ওপর নজর রয়েছে দেশবাসীর। অপ্রতিদ্বন্দ্বী এই নেতাদের মধ্যে রয়েছেন শেখ ফজলুল করিম সেলিম, আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার, নূর-ই-আলম চৌধুরী, মো. আব্দুস শহীদ, মির্জা আজমসহ অনেকে।

একাদশ সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশিবার নির্বাচিত হয়ে সংসদ সদস্য হওয়ার বিরল গৌরব অর্জন করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম। সেই ১৯৭৩ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত দেশে যে ১১টি জাতীয় সংসদ নির্বাচন হয়েছে, এর মধ্যে আটবার ভোটে জয়ী হয়েছেন শেখ সেলিম। দেশের রাজনীতির ইতিহাসে এমন রেকর্ড আর কারও নেই। ১৯৭৯ সালের দ্বিতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে তৎকালীন ফরিদপুর-১০ আসন থেকে তিনি সংসদ সদস্য হন। এরপর তৃতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গোপালগঞ্জ-২ আসন থেকে নির্বাচিত হন। একই আসন থেকে নৌকা প্রতীকে টানা পঞ্চম, সপ্তম, অষ্টম, নবম, দশম ও একাদশ সংসদ নির্বাচনে জয় পেয়েছেন শেখ সেলিম।

শেখ সেলিমের পরই রয়েছেন রাজনীতিবিদ ব্যবসায়ী সাংবাদিক আনোয়ার হোসেন মঞ্জু। পিরোজপুর-২ আসনের এই সংসদ সদস্য দলমত-নির্বিশেষে সবার কাছেই যে জনপ্রিয়, ভোটের মাঠে তার প্রমাণ দিয়েছেন তিনি। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে তিনি এই আসন থেকে ১৯৮৬ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত মোট সাতবার নির্বাচিত হয়েছেন। ১৯৯৬ সালে তিনি এইচএম এরশাদের জাতীয় পার্টি থেকে আলাদা হয়ে জাতীয় পার্টি (জেপি) নামে নতুন দল গঠন করেন। বিভিন্ন সময় পাঁচবার মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি একবার প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাও ছিলেন।

দিনাজপুর-৫ আসনে ৩৫ বছর ধরে সাধারণ মানুষের আস্থা ধরে রেখেছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার। তিনি ১৯৮৬ সালে এই আসনে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ধারাবাহিকভাবে সর্বশেষ ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি সপ্তমবারের মতো সংসদ সদস্য হন। তিনি সংসদ সদস্যের পাশাপাশি বিভিন্ন সংসদীয় কমিটির সদস্য, ২০০৯ সালে প্রতিমন্ত্রী এবং ২০১৪ সালে মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

আওয়ামী লীগের ভোটব্যাংক হিসেবে পরিচিত মাদারীপুর-১ আসন। এখানে টানা ৩৩ বছর ধরে নৌকার একক প্রার্থী হিসেবে শক্ত অবস্থানে রয়েছেন নূর-ই-আলম চৌধুরী। ১৯৯১ সালে পঞ্চম জাতীয় সংসদে তার বাবা ইলিয়াছ আহম্মেদ চৌধুরী সংসদ সদস্য থাকা অবস্থায় মারা যান। ওই বছর উপনির্বাচনে প্রথমবার সংসদ সদস্য হন তিনি। এরপর ১৯৯৬, ২০০১, ২০০৮, ২০১৪ এবং ২০১৮ সালে নির্বাচিত হন বর্তমান সংসদের চিফ হুইফ নূর-ই-আলম। এবার সপ্তমবারের মতো এই আসন থেকে প্রার্থী হয়েছেন তিনি।

মো. আব্দুস শহীদ বাংলাদেশের একজন শিক্ষাবিদ ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক। তিনি মৌলভীবাজার-৪ আসন থেকে ১৯৯১ সালে প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। একই আসন থেকে এরপর ১৯৯৬, ২০০১, ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। ১৯৯১ সালে আব্দুস শহীদের সঙ্গে এই আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সাবেক অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমানের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছিল। ২০০৯-২০১৪ পর্যন্ত তিনি জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ, ২০০১-২০০৬ পর্যন্ত সংসদে বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ এবং ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে জাতীয় সংসদে হুইপের দায়িত্ব পালন করেন। ২০০১-২০১৯ মেয়াদে তিনি সংসদের বিভিন্ন পদে দায়িত্বে ছিলেন। তিনি জাতীয় সংসদের সরকারি প্রতিশ্রুতি-সম্পর্কিত কমিটির সভাপতি ছিলেন। আওয়ামী লীগের অনেক নেতা জানিয়েছেন, রাজনৈতিক দূরদর্শিতা, মেধা ও প্রজ্ঞা দিয়ে দলমত-নির্বিশেষে আব্দুস শহীদ এই অঞ্চলের গণমানুষের নেতা হয়ে উঠেছেন। অর্জন করেছেন আস্থা, বিশ্বাস ও ভালোবাসা।

জামালপুর-৩ আসনের দীর্ঘদিনের সংসদ সদস্য মির্জা আজম। স্কুলজীবন থেকেই তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেন। তিনি ১৯৯১ সালে মাত্র ২৮ বছর বয়সে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। সেই থেকে ১৯৯৬, ২০০১, ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সাল পর্যন্ত মোট ছয়বার সংসদ সদস্য হয়েছেন। তিনি অষ্টম সংসদে বিরোধীদলীয় হুইপ এবং নবম সংসদে ক্ষমতাসীন দলের হুইপ ছিলেন। ২০১৪ সালে তিনি বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী হন। সে জন্য সপ্তমবারের মতো দলও তার ওপর আস্থা রেখেছে।

জাতীয় সংসদের ৩০০তম আসন পার্বত্য জেলা বান্দরবান। এই আসনে দীর্ঘ ৩৩ বছর ধরে সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগের বিশ্বস্ত নেতা বীর বাহাদুর উশৈ সিং। তিনি ছয়বার জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১, ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে জয়ী হন তিনি। ১৯৯৮ সালে উপমন্ত্রীর পদমর্যাদায় প্রথমবারের মতো এবং ২০০৮ সালে প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদায় দ্বিতীয়বারের মতো পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড রাঙামাটির চেয়ারম্যান হন এই নেতা। বর্তমানে তিনি পার্বত্যবিষয়ক মন্ত্রী।

গোপালগঞ্জ-১ আসন থেকে টানা পাঁচবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান। জাতির পিতার জন্মস্থান হওয়ায় এটি আওয়ামী লীগের দুর্ভেদ্য ঘাঁটি। এ জেলার তিনটি আসনে নৌকার প্রার্থীরাই বারবার জয়ী হয়েছেন। ফারুক খান সেনাবাহিনী থেকে অবসর নেওয়ার পর ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৮ সালের নির্বাচন পর্যন্ত তিনি টানা পাঁচবার সদস্য সদস্য হয়েছেন।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য ও বর্তমান কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক। তিনি ২০০১ সালে কর্মজীবন শেষ করে টাঙ্গাইল-১ আসনে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এ সময় তিনি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির কৃষি ও সমবায়বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। তিনি ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে (ধনবাড়ী-মধুপুর) এই আসন থেকে টানা চারবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি বিভিন্ন সময় মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন।

বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আতিউর রহমান আতিক শেরপুর-১ আসন থেকে টানা পাঁচবার, প্রখ্যাত অভিনেতা আসাদুজ্জামান নূর নীলফামারী-২ আসন থেকে টানা চারবার নির্বাচিত হয়েছেন। বারবার নির্বাচিত হওয়ার মধ্য দিয়ে তারা দল ও মানুষের আস্থাভাজন হিসেবে রাজনীতিতে আলোচিত হয়েছেন।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মোরছালীন বাবলা

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা