ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের নিবন্ধ
প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ০৬ জানুয়ারি ২০২৪ ০০:১৩ এএম
আপডেট : ০৬ জানুয়ারি ২০২৪ ১১:০৩ এএম
আগামীকাল রবিবার বাংলাদেশে যে জাতীয় নির্বাচন হতে যাচ্ছে তার ফলাফল সহজেই অনুমেয়। কারণ রাজপথের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি নির্বাচন বয়কট করেছে। এ অবস্থায় টানা চতুর্থবারের মতো মুসলিম অধ্যুষিত ১৭ কোটি মানুষের দেশে সরকার গঠন করতে যাচ্ছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ। আর তার এই বিজয় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের পরাজয় চিহ্নিত করতে যাচ্ছে। কারণ বাইডেন বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতি প্রয়োগের প্রচেষ্টায় আছেন, যার মূলে রয়েছে ‘গণতন্ত্র’।
গত বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল প্রকাশিত এক নিবন্ধে এসব কথা বলা হয়েছে। বাইডেনের ‘গণতন্ত্র প্রচারের’ সীমাবদ্ধতা দেখাচ্ছে বাংলাদেশ শিরোনামের নিবন্ধটি লিখেছেন সদানন্দ ধুমে। তিনি লিখেছেন, বিশ্বব্যাপী নেতৃত্বে থাকা নির্বাচিত নারী নেতাদের মধ্যে ৭৬ বছরের শেখ হাসিনা সবচেয়ে বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় আছেন। তিনি মৌলবাদ দমন, সেনাবাহিনীর ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা এবং চরম দারিদ্র্য থেকে দেশকে মুক্ত করার সাফল্য দেখিয়েছেন। এমন কৃতিত্ব অর্জন করতে পারেনি অনেক উন্নয়নশীল দেশ।
তিনি লিখেছেন, বিরোধী দলের নেতাদের গ্রেপ্তার ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে হোয়াইট হাউস শেখ হাসিনাকে শায়েস্তা করতে চেয়েছে। কিন্তু শেখ হাসিনা এসব আমলে নেননি। তিনি বিরোধী দল ও সুশীল সমাজকে আরও ছাড় দিতে অস্বীকৃতি জানান।
বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যর্থতা স্পষ্ট, কারণ তাত্ত্বিকভাবে দেশটি বাইডেনের মূল্যবোধ-কেন্দ্রিক পররাষ্ট্রনীতির জন্য একটি আদর্শ পরীক্ষার ক্ষেত্র ছিল। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ একদলীয় শাসনের দিকে ধাবিত হলেও অন্যান্য অনেক উন্নয়নশীল দেশের চেয়ে এর গণতান্ত্রিক শেকড় গভীর।
হোয়াইট হাউসের জানা উচিত ছিল, তাদের বোঝা উচিত ছিল যে, আওয়ামী লীগ এমন একটা দল যারা ইসলামাবাদের সঙ্গে মার্কিন সমর্থন থাকার পরও ১৯৭১ সালে বাংলাদেশকে পাকিস্তান থেকে স্বাধীন করতে ভূমিকা রেখেছিল। রাশিয়া, চীন এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভারতসহ সমর্থকদের একটি অপ্রত্যাশিত জোট গঠনের মাধ্যমে শেখ হাসিনা দক্ষতার সঙ্গে মার্কিন চাপ মোকাবিলা করেছেন, যেখানে তাকে একটি অস্থিতিশীল দেশে স্থিতিশীলতার রক্ষাকবচ হিসেবে দেখা হয়।
লেখক দাবি করেন, বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রের দুটি হাই-প্রোফাইল ‘সামিট ফর ডেমোক্র্যাসি’ থেকে বাংলাদেশকে বাদ দিলেও খারাপ রেকর্ড রয়েছে এমন বেশ কয়েকটি দেশকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। ২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে বাংলাদেশের র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। গত বছর ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে তার উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন এবং স্টেট ডিপার্টমেন্ট বাংলাদেশের নির্বাচনকে ‘দুর্বল করার জন্য দায়ী বা জড়িত’ হিসেবে চিহ্নিত ব্যক্তিদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার কথা বলেছিল।