প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৪ জানুয়ারি ২০২৪ ১৯:২৮ পিএম
আপডেট : ০৪ জানুয়ারি ২০২৪ ২০:১৪ পিএম
কূটনীতিকদের প্রতিক্রিয়া কী ছিল বা তারা সন্তুষ্ট কি না, এ প্রশ্ন করলে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। প্রবা ফটো
৭ জানুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে ঢাকায় নিযুক্ত বিদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠক করেছে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বৈঠকে নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি সম্পর্কে ইসি কূটনীতিকদের জানিয়েছে। এরপর এ বিষয়ে কূটনীতিকদের প্রতিক্রিয়া কী ছিল বা তারা সন্তুষ্ট কি না- জানতে চাইলে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটা তো চেহারা দেখে বলা মুশকিল।’
বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) বিকালে রাজধানীতে হোটেল সোনারগাঁওয়ে বিদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গে ইসির বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে মাসুদ বিন মোমেন সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
সাংবাদিকরা জানতে চান- কূটনীতিকদের মতামত বা প্রতিক্রিয়া কী? তারা আপনাদের কথায় কনভিন্স কি না। জবাবে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘এটা তো চেহারা দেখে বলা মুশকিল। তারা ইনডিভিজুয়ালি সেটিসফায়েড কি না- এটা বলা মুশকিল। তবে ইলেকশন কমিশন যথাসাধ্য বোঝাতে সক্ষম হয়েছে। ওনাদের পক্ষ থেকে আন্তরিকতার কোনো ঘাটতি নেই। ৭ তারিখ যদি জনগণ ভোট দিতে আসে তাহলে তাদের চেষ্টা সফল হবে।’
কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠক প্রসঙ্গে সচিব বলেন, ‘আপনারা জানেন আজকে ইলেকশন কমিশন থেকে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। যেখানে ঢাকায় যে বিদেশি দূতাবাসগুলো আছে, তাদের যে প্রধানরা আছেন তাদের জন্য একটি ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়েছিল। প্রধান নির্বাচন কমিশনার, অন্যান্য কমিশনারসহ সচিবালয়ের কর্মকর্তারা এখানে উপস্থিত ছিলেন। প্রায় সবকটি দেশের রাষ্ট্রদূত আজকে এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। এখানে নির্বাচনের বিষয়ে তাদের বিস্তারিত ব্রিফিং দেওয়া হয়েছে।’
বৈঠকের আলোচনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার তাদের নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে সবকিছু বললেন। পরে তাদের মধ্য থেকে প্রশ্ন আহ্বান করলেন। পরে যেটা বোঝা গেল, পশ্চিমা দেশের দুয়েকজন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে, আমি আমার বক্তব্য তাদের বললাম—পাঁচ বছর পর পর ইলেকশন হয়, এমন একটা সুযোগ সব দেশের রাষ্ট্রদূতের হয় না। আমি নিজেও রাষ্ট্রদূত ছিলাম সুযোগ আসেনি। যেহেতু তারা সুযোগ পেয়েছেন এই সুযোগটাকে তারা যেন ভালোমতো ব্যবহার করেন।‘
মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘পশ্চিমা দেশের দুয়েকজন রাষ্ট্রদূত আমাকে বললেন, নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ রয়েছে। তারাও ইলেকশন কমিশনে এসেছেন এবং বিভিন্ন প্রশ্ন করেছেন। তারা আগের থেকে অনেকখানি আপডেট তাই এখানে এত প্রশ্ন হয়নি। একটা প্রশ্ন আসতে পারে, তারা অনেক বেশি প্রশ্ন করেনি কেন? বলে রাখা ভালো, তারা বেশ কয়েকবার দফায় দফায় মিটিং করেছে ইসির সঙ্গে। তাই সেগুলো তারা অনেকখানি ওয়াকিবহাল।’
বিদেশি পর্যবেক্ষকদের বিষয়ে সচিব বলেন, ‘এখন পর্যন্ত ৬০ জন বিদেশি পর্যবেক্ষক দেশে এসে পৌঁছেছেন। সর্বমোট ১২৭ জন পর্যবেক্ষক আসার কথা। এ ছাড়া ৭৩ জন বিদেশি সাংবাদিক এক্রিডিটেশন পেয়েছেন। বিদেশি সাংবাদিকদের মধ্যে ১৭ জন এসে পৌঁছেছেন। আজ ও কালকের মধ্যে সবাই এসে পৌঁছে যাবেন। এখানে আমাদের একটা অফিস খোলা হয়েছে, আমরা সেখান থেকে আপনাদের আপডেট দিতে পারব।’
মোমেন বলেন, ‘তারা একটা প্রশ্ন করেছে ইলেকশন কমিশনের কোনো চাপ আছে কি না, অথবা বিষয়টা কতখানি সত্য? এ প্রশ্নের জবাবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেছেন, এ ধরনের কোনো চাপ নেই, চাপ দেওয়ার সুযোগও নেই। তবে যারা ভোট বর্জন করেছে, তাদের পক্ষ থেকে ভোট না দেওয়ার জন্য ভোটারদের ওপর একটা চাপ আছে।’
পর্যবেক্ষকরা কোথায় যাবে—এ বিষয়ে পরররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে কোনো সাবজেক্ট আছে কি না—জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা তাদের বলতে পারি না, তারা যদি যেতে চায় যেখানে আমাদের এয়ারপোর্টগুলো আছে, সেসব জায়গায় তারা চাইলে যেতে পারে, আমরা সহযোগিতা করব। তারা যেখানেই যাক আমরা শুধু সহযোগিতা করতে পারি।‘
তিনি আরও বলেন, ‘আর তারা যদি ঢাকার মধ্যে ইলেকশন অবজার্ভ করতে চায়, তাদের ঢাকার মধ্যে দুই ঘণ্টায় যেতে পারে বা দুই ঘণ্টায় আসতে পারে এ রকম একটা রোডপ্ল্যান তাদের আমরা দিতে পারি। এর মধ্যে তারা যদি বলে আমি নারায়ণগঞ্জ যাব, আমি গাজীপুর যাব, আমি দোহার যাব কিংবা আমি কুমিল্লা যাব, তখন আমরা তাদের বলতে পারি—হ্যাঁ তুমি দুই ঘণ্টার মধ্যে যেতে পারবে। এই বিষয়গুলো এখনও চূড়ান্ত হয়নি।’
কতজন রাষ্ট্রদূত বা কূটনৈতিক এসেছেন—এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘আমরা তো সবাইকে দাওয়াত করেছি, সঠিক সংখ্যাটা বলতে পারব না। তবে পঞ্চাশের অধিক দেশের প্রতিনিধিরা এসেছিলেন আজকের বৈঠকে।’