প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০২ জানুয়ারি ২০২৪ ১৫:৩৮ পিএম
জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তাফিজুর রহমান। ছবি : সংগৃহীত
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে ভোটের দিন নানা ধরনের গুজবের বিষয়ে সতর্ক থাকতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের নির্দেশ দিয়েছেন জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তাফিজুর রহমান।
মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) রাজধানীর আগারগাঁও বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে নির্বাচনে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠানে এই নির্দেশ দেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, কিছু গুজব আসবে। আমাদের কাছে সেরকম তথ্য আছে। এই গুজবগুলো দুই ধরনের। একটা হচ্ছে ইন্সট্যান্ট ফোন আসবে আপনার কাছে। ‘ওই এলাকায় মার্ডার হয়েছে, পাঁচজন আটকে রাখছে- এদিকে মুভ করেন।’
‘আরেকটা গুজব হচ্ছে-সাইবারভিত্তিক গুজব। এসব গুজব এলে জেলা প্রশাসক জানেন- কোথায় জানাতে হবে, সোশাল মিডিয়ায় আসা লিংকটা কার কাছে পাঠাতে হবে। এটা তাদেরকে ওয়েল সার্কুলেট করেছি, আবারও করব। কন্ট্রোল রুম বা আইন শৃঙ্খলা সমন্বয় সেলে জানাবেন। জেলা প্রশাসন সেল বা আমাদের কাছে পাঠিয়ে দিলে সেগুলোর বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে পারব।’
তিনি বলেন, ‘যদি না পারেন আমাদের যে আইনশৃঙ্খলা সমন্বয় সেল আছে, সেখানে ৬ টা নাম্বার আছে, সেই নাম্বারে দেবেন। তাও যদি না পারেন পিআইডির একটা সেল আছে, এনটিএমসির একটা সেল আছে এরা সার্বক্ষণিক কাজ করছে। ১০ তারিখ পর্যন্ত ২৪/৭ থাকবে। আপনারা যদি সেগুলো জেলা প্রশাসককে পাঠান, তারা সঙ্গে সঙ্গে সেলগুলোতে পাঠাতে পারবেন। আমরা ব্যবস্থা নিতে পারবো।’
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের ভোটের মাঠে দায়িত্বপালন করার সময় দেশীয় গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা না বলার পরামর্শ দিয়ে এই সিনিয়র সচিব বলেন, মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলার দরকার নাই আপনার। মিডিয়া আপনাকে কোন কিছু জিজ্ঞেস করলে আপনি বলবেন, এটা রিটার্নিং অফিসার কে আমি রিপোর্ট দিয়েছি। এটা রিটার্নিং অফিসার বা এসিস্ট্যান্ট রিটার্নিং অফিসার বা যিনি অথরাইজড তিনি কথা বলবেন। কোন স্টেটমেন্ট আপনি মিডিয়ায় দেবেন না।
দেশি মিডিয়া এড়িয়ে চলার কথা বললেও বিদেশী মিডিয়ার সঙ্গে প্রোঅ্যাক্টিভলি কথা বলার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, আমাদের প্রচুর পর্যবেক্ষক আসছে, বিদেশী সাংবাদিক আসছে। প্রত্যেককে ইসি থেকে আইডি কার্ড দেওয়া হচ্ছে। তাদের যখন দেখবেন ওয়েলকাম করবেন। মনে রাখবেন তারা আমাদের দেশের মেহেমান। তাদের আমরা দাওয়াত দিয়ে নিয়ে এসেছি। প্রোঅ্যাক্টিভলি তাদের সঙ্গে কথা বলবেন, ওয়েলকাম করবেন। যেখানেই দেখা হোক।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের উদ্দেশ্যে জননিরাপত্তা সচিব বলেন, বিদেশী সাংবাদিক ও পর্যবেক্ষকদের আপনার পরিচয় দেবেন। ইংরেজিতে একটা কথা আছে প্যাসিভ এগ্রেসিভনেস, আমি কারও সাথে খারাপ ব্যবহার করলাম না। কিন্তু বডি ল্যাংগুয়েজে এমন ভাবে কথা বললাম, যে আমি তাকে খুব ইগনোর করলাম ও অপমানিত হল সে। এটা যাতে না হয়। বিদেশি সাংবাদিক, পর্যবেক্ষক এদের সাথে খুব সতর্কতার সাথে ব্যবহার করতে হবে।
তিনি বলেন, এইখানে কর্মকর্তাদের মধ্যে ব্যাচের পার্থক্য অনেক বড়। ভোটের মাঠে এত বেশি অফিসার লাগে আমরা ব্যাচ ওয়াইজ ওই ক্যালকুলেশনটা করতে পারিনা। এখানে ২০ তম ব্যাচের অফিসার আছে, ৪০ তম ব্যাচের অফিসার আছে। যারা ২৪-২৫ ব্যাচের, অনেক ক্ষেত্রেই দেখবেন রিটার্নিং কর্মকর্তা বা ডিসি ২৭ ব্যাচের এই বিষয়গুলা সহজভাবে দেখতে হবে। ফরগেট ইউর ব্যাচ- ফরগেট ইউর সিনিয়রিটি। জাস্ট মনে করবেন সরকার আমাকে একটা দায়িত্ব দিয়েছেন, আমরা দায়িত্ব পালন করছি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আপনাদের রিপোর্টিং ডেট ৪ তারিখ। তার আগেই কিন্তু সেনাবাহিনী নেমে যাচ্ছে, ৩ তারিখে। আপনারা ৪ তারিখ চেষ্টা করবেন আর্লি পসিবল টাইমে স্ব স্ব দায়িত্বপূর্ণ জেলায় রিপোর্ট করতে। এলাকা সম্পর্কে একটা ধারণা নিয়ে যাবেন। মাঠে যারা দায়িত্ব পালন করবে তাদের সবার ফোন নাম্বার সংগ্রহ করে রাখবেন।
তরুণ অফিসারদের মধ্যে ফেসবুক টেন্ডেন্সি থাকে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমি অনেক ছবি দেখেছি। এই ছবিগুলো দেওয়াটা শোভন নয়। এই বিষয়গুলোকে এভোয়েড করা। ফোনে কথা বলার সময় সাবধান থাকতে হবে। একটা দুইটা শব্দ চয়নের মাধ্যমে অনেকধরণের বিপত্তি ঘটতে পারে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন কমিশনার মো. আনিছুর রহমান। বিশেষ হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অর্থমন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার, মন্ত্রী পরিষদ সচিব মো. মাহমুদুল হাসান খান। ইসি সচিব জাহাংগীর আলম অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন।