প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০১ জানুয়ারি ২০২৪ ১৫:৪৮ পিএম
আপডেট : ০১ জানুয়ারি ২০২৪ ১৮:১৭ পিএম
রাজধানীর মিরপুরের ন্যাশনাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে বই বিতরণ কর্মসূচিতে প্রতিমন্ত্রী। প্রবা ফটো
নতুন বই শিশুকে উজ্জীবিত ও অনুপ্রাণিত করে বলে মন্তব্য করেছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। তিনি বলেছেন, নতুন বই শিশুদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর নতুন বছরের উপহার। নতুন বই শিশুকে উজ্জীবিত ও অনুপ্রাণিত করে। নতুন বইয়ের ঘ্রাণ শিশুকে বইয়ের প্রতি আকৃষ্ট করে তোলে। বইয়ের প্রতিটি পৃষ্ঠা শিশুর মনোজগতে বিস্ময় তৈরি করে। শিশুমনের এ আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ আগ্রহে বই বিতরণের সূচনা। সময়ের পরিক্রমায় এটি এখন বই উৎসবে পরিণত হয়েছে।
সোমবার (১ জানুয়ারি) কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাজধানীর মিরপুরের ন্যাশনাল (সকাল-বিকাল) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত বই বিতরণ উৎসব-২০২৪ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
এদিকে কেন্দ্রীয় কর্মসূচি রাজধানীর মিরপুরের বই উৎসবে দেখা গেছে, বিপুল উচ্ছ্বাস-উদ্দীপনা। প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিক স্তরের শিশু শিক্ষার্থীরা আনন্দঘন পরিবেশে নতুন বছরের পাঠ্যপুস্তক পেয়ে উল্লাসে মাতোয়ারা হয়ে ওঠে। শিশুদের সঙ্গে এসেছেন তাদের শিক্ষক এবং অভিভাবকেরাও।
উৎসবে অংশ নিয়ে ন্যাশনাল স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী মরিয়ম নতুন বই পেয়েছে। অভিব্যক্তি জানতে চাইলে মরিয়ম জানায়, নতুন বই পেয়ে অনেক ভালো লাগছে।
চতুর্থ শ্রেণির আরেক শিক্ষার্থী ফারহানা আক্তার জানায়, অনেক ভালো লাগছে। আরও ভালো লাগছে আমাদের স্কুলে অনুষ্ঠানে।
২০১০ সাল থেকে প্রতিবছর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে বই বিতরণ উৎসবে শিক্ষার্থীদের হাতে পাঠ্যপুস্তক তুলে দেন। এ কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় সারা দেশে একযোগে বছরের প্রথম দিনে শিক্ষার্থী-শিক্ষক-অভিভাবক, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, প্রাথমিক শিক্ষা সংশ্লিষ্ট দপ্তরসমূহের কর্মকর্তা কর্মচারী এবং গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে উৎসবমুখর ও আনন্দঘন পরিবেশে বই বিতরণ উৎসব উদযাপিত হয়ে আসছে।
তবে এবার নির্বাচনী আচরণবিধির বাধ্যবাধকতায় বই উৎসবে উপস্থিত থাকবেন না মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যরা। এবার বই উৎসবে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা। কেন্দ্রীয়ভাবে প্রাথমিকের বই উৎসব হয় মিরপুরের ন্যাশনাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। আর শিক্ষামন্ত্রণালয়ের দুই মন্ত্রী সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় মাধ্যমিক স্তরে বই উৎসব হবে না।
প্রথমিকের বই উৎসব অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ। সভাপতিত্ব করেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াত।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সচিব ফরিদ আহাম্মদ বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকার পুরোনো ধারার শিক্ষার খোলস পাল্টে এমন এক নতুন শিক্ষার বীজ বপনের কাজে হাত দিয়েছে, যা শিক্ষার্থীর মস্তিষ্ক ও পিঠ থেকে মুখস্তবিদ্যার বোঝা ঝেড়ে ফেলে তাদের কৌতূহল, জিজ্ঞাসা, অনুসন্ধান, গবেষণা ও ভাবনার শক্তিকে জাগাবে ও নেতৃত্বের গুণাবলি তৈরিতে উপযোগী হয়ে উঠবে। সে নিজেই নানা চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করবে, তা মোকাবিলা করে অভীষ্ট গন্তব্যে পৌঁছাবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) সূত্র জানায়, অষ্টম ও নবম শ্রেণির তিনটি বই ছাপানোর কাজ এখনও শেষ হয়নি। এমনকি ছাপা হলেও পরিবহন সংক্রান্ত জটিলতায় বেশকিছু উপজেলায় এ দুই শ্রেণির সব বই পৌঁছানো সম্ভব হয়নি।
নতুন বছরের জন্য প্রাথমিকে ৯ কোটি ৩৮ লাখের বেশি এবং মাধ্যমিক স্তরে সাড়ে ২১ কোটির বেশি বই ছাপানো হয়েছে।