প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৬:২৭ পিএম
এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্লাটফর্ম আয়োজিত মিডিয়া ব্রিফিং। প্রবা ফটো
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) ফেলো ও নাগরিক প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, যে যতবার নির্বাচন করেছে, তার আয় গাণিতিকভাবে তত বৃদ্ধি পেয়েছে। এই সম্পদ বৃদ্ধির হারের সঙ্গে নির্বাচনে অংশগ্রহণ বা নির্বাচিত হওয়ার একটা ইতিবাচক সম্পর্ক রয়েছে। নির্বাচনে আসাই হলো আয় বাড়ানোর ভালো একটা রাস্তা।
শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্লাটফর্ম আয়োজিত ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন ও ন্যায্যতার লক্ষ্যে নাগরিক এজেন্ডা’ শীর্ষক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন। এতে জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা, জাতিগত ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের প্রতি বৈষম্য এবং ‘নীরব জনগোষ্ঠী’র কণ্ঠ শক্তিশালী করা বিষয়ে প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘হলফনামায় প্রার্থীদের সম্পদের বিবরণে দেখা গেছে, সম্পদের পরিমাণ ৫০০ গুণ বেড়ে গেছে।কিন্তু তারা কি সেই সম্পদ অনুপাতে পূর্বের তুলনায় ৫০০ গুণ বেশি কর দিয়েছে? এনবিআর কি সেই খোঁজ নিয়েছে? এটা খুঁজে বের করা এনবিআরের জন্য একটা বড় চ্যালেঞ্জ।
তিনি বলেন, ‘নির্বাচনী ইশতেহারে দেওয়া প্রতিশ্রুতি নিয়ে কোনো পর্যালোচনাই এবার হল না। রাজনৈতিক দলগুলো জনগণের কাছে পৌঁছাল না। এটা গণতন্ত্রের জন্য বড় ধরনের শূন্যতা তৈরি হল। নির্বাচন ঘিরে ইশতেহার একটা রাজনৈতিক শূন্যতার মধ্যে দিয়ে এসেছে। ফলে সরকার, রাজনীতি ও দেশের মানুষ বঞ্চিত হয়েছে। এ ধরনের নির্বাচন দেখেছি ১৯৮৮, ১৯৯৬ সালে। নির্বাচন যদি বহু মানুষের আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন না হয়, তাহলে এর ফলাফলও টিকিয়ে রাখা কঠিন। আগামী দিনে অর্থনীতি যেভাবে জটিল থেকে জটিলতর হচ্ছে, মূল্যস্ফীতি আগামী দিনে কই গিয়ে দাঁড়াবে এই উৎকণ্ঠা সবার মাঝে।’
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য আরও বলেন, ‘এটাকে সাধারণভাবে আমরা নির্বাচন বলছি। আমাকে যদি জিজ্ঞেস করা হয়, আমি বলি এটি একটি বিশেষ নির্বাচনী তৎপরতা। ফলে ইতিহাসের কাছে নাগরিকদের দায় বেড়ে গেল। আগামী দিনে আমাদের ভূমিকা আরও বাড়বে। আমরা যদি নিশ্চুপ থাকি, তাহলে আটলান্টিকের ওপার থেকে কেউ এসে পরিবর্তন করে দিয়ে যাবে না।’
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘নির্বাচনের নামে যেটা হচ্ছে, সেটাকে কী নামে অভিহিত করি, সত্যিই জানি না। প্রতিযোগিতাপূর্ণ হচ্ছে, যদিও সাজানো। পরিস্কারভাবে সাজানো। এটা অস্বীকার করছে না কর্তৃপক্ষ। সাজানো এবং অনেকটা আত্মঘাতিমূলক প্রতিযোগিতা হচ্ছে। মানুষ ভোট দিতে না গেলে নজরদারির আওতায় পড়বে, সেই ভয়েই ভোটারের অংশগ্রহণ হবে কিছুটা।’
মিডিয়া ব্রিফিংয়ে প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন নাগরিক উদ্যোগের প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেন, উন্নয়ন কর্মী ও জেন্ডার বিশ্লেষক এম বি আখতার এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আসিফ মোহাম্মদ শাহান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সিপিডির ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান।