প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৮ ডিসেম্বর ২০২৩ ২২:১৭ পিএম
বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) বার্ষিক সম্মেলনে অতিথিরা। প্রবা ফটো
কোভিড-১৯-এর কারণে বাংলাদেশের কৃষি সেক্টরে উৎপাদনে তেমন ক্ষতি হয়নি বলে জানিয়েছেন ইন্টারন্যাশনাল ফুড পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (আইএফপিআরআই) ফরেন অ্যান্ড পলিসি মডেলিংয়ের ডিরেক্টর জেমস থুরলো। তিনি বলেন, কোভিডে বাংলাদেশের কৃষির উৎপাদন কমেনি। বরং উল্টো কাজ হয়েছে। শহরের লোকজন গ্রামে গিয়ে চাষাবাদে যুক্ত হয়েছে। তবে সেখানে প্রাথমিক চাষাবাদ ভালো থাকলেও এগ্রিফুড সিস্টেম তথা ট্রেডিং, প্রসেসিং, সার্ভিসিং ও রপ্তানি সেক্টরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অর্থাৎ কোভিডে মাত্র একটি অংশ ঠিক রাখা সম্ভব হলেও বাকিগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) রাজধানীর গুলশানে লেকশোর হোটেলে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) বার্ষিক সম্মেলনে গবেষণাপত্রে তিনি এ তথ্য তুলে ধরেন। আইএফপিআরআইর ডেভেলপমেন্ট স্ট্যাট্রেজি অ্যান্ড গভার্নেন্সের পরিচালক পাওল দোরসের সভাপতিত্বে সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে ‘গ্লোবাল প্রাইজ শকস এন্ড ফুড সিকিউরিটি’ শীর্ষক অধিবেশনে চারটি পেপার উপস্থাপন করা হয়।
আইএফপিআরআইর সিনিয়র রিসার্স ফেলো ডুনিয়েল রেসনিক উপস্থাপন করেন গভর্নেন্স অব ফুড সিস্টেম শীর্ষক পেপার, ফরেন অ্যান্ড পলিসি মডেলিংয়ের ডিরেক্টর জেমস থুরলো স্ট্রাকচার অব বাংলাদেশ ফুড সিস্টেম, ফরেন অ্যান্ড পলিসি মডেলিংয়ের সিনিয়র সায়েনটিস্ট এনজা প্যারাডিসার ইমপ্যাক্ট অব দ্য গ্লোবাল প্রাইজ শক অন দি বাংলাদেশ ফুড সিস্টেম এবং পাওল দোরসের ইমপ্লিকেশনস ফর পলিসি অ্যান্ড ফারদার রিসার্স। অধিবেশনটির সঞ্চালনায় ছিলেন বিআইডিএসের গবেষণা পরিচালক ড. কাজী ইকবাল। এ সময় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রশ্ন করেন বিআইডিএসের মহাপরিচালক ড. বিনায়ক সেন। উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী সাবেক অর্থনীতি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমানসহ দেশের বিভিন্ন পর্যায়ের অর্থনীতিবিদ ও গবেষকবৃন্দ। সম্মেলনটি আগামীকাল শনিবার শেষ হবে।
জেমস থুরলো বলেন, কোভিডের কারণে বাংলাদেশে অতিরিক্ত ৩১ লাখ মানুষ অপুষ্টির শিকার হয়েছে। বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা থাকলে ২০২৩ সালে সেটি বেড়ে ৩৩ লাখ হতে পারে। জিডিপির চেয়ে ক্ষুধার জন্য বিশ্বব্যাপী মূল্য বৃদ্ধি বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। কোভিডের কারণে সারা বিশ্বে মানুষের খাদ্য গ্রহণ কমেছে। অনেক পরিবারের ক্রয়ক্ষমতা ছিল না।
এক প্রশ্নের জবাবে ডুনিয়েল রেসনিক বলেন, ‘আগামী বছরের শুরুতেই বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচন ইস্যুতে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এমন যেকোনো নিষেধাজ্ঞা দেশের খাদ্যনিরাপত্তাকে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।’ এনজা প্যারাডিসা বলেন, করোনার কারণে বাংলাদেশে নতুন করে দরিদ্র হয়ে পড়ে ২৮ লাখ মানুষ। ২০২২ সালের হিসেবে দারিদ্র্য বৃদ্ধিতে প্রধান ভূমিকাতেও ছিল করোনা। একই বছরে বৈশ্বিক মূল্যবৃদ্ধির কারণে অনেক পরিবারে জীবনযাত্রার ব্যয় সরাসরি বাড়িয়ে দিয়েছে। চলতি বৈশ্বিক মন্দা দারিদ্র্য পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে নিয়ে যেতে পারে। শুধু বৈশ্বিক মন্দার কারণে বাড়তি ৫০ হাজার মানুষ দরিদ্র্যসীমার নিচে চলে গেছে বলে তিনি জানান।