× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

বঙ্গোপসাগরে ১৩২ বছরে সৃষ্টি ৫৩৪টি ঘূর্ণিঝড়

ফারুক আহমাদ আরিফ

প্রকাশ : ০৪ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৯:৫২ এএম

আপডেট : ০৪ ডিসেম্বর ২০২৩ ১১:২৪ এএম

আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক। প্রবা ফটো

আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক। প্রবা ফটো

চলতি ডিসেম্বর মাসে দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে একটি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়েছে। এই ঘূর্ণিঝড়ের নাম দেওয়া হয়েছে মিগজাউম। মিগজাউম অর্থ হচ্ছে কুমির। 

সোমবার (৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা নাগাদ ঘূর্ণিঝড়টি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। মিগজাউম ভারতের দক্ষিণ অন্ধ্র প্রদেশের নিলোর ও মুছলিপাটনামের কাছ দিয়ে উপকূল অতিক্রম করতে পারে। বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির সংখ্যা নিয়ে প্রতিদিনের বাংলাদেশের সঙ্গে কথা হয় আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিকের সঙ্গে। 

বঙ্গোপসাগরে বছরে কতগুলো ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়ে থাকে জানতে চাইলে এই আবহাওয়াবিদ বলেন, এই সংখ্যা সুনির্দিষ্ট নয়। একেক বছর একেকসংখ্যক ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়ে থাকে। যেমন- এ বছর ৪টি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়েছে। তার মধ্যে ৯ মে ঘূর্ণিঝড় মোখা, ২১ অক্টোবর ঘূর্ণিঝড় হামুন এবং ১৭ নভেম্বর ঘূর্ণিঝড় মিধিলি সৃষ্টি হয়। এগুলো বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানে। 

দীর্ঘ কত বছরের তথ্য আছে আপনাদের কাছে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রায় দেড়শ বছর বা ১৩২ বছরের একটি স্টাডি আমাদের হাতে রয়েছে। সে অনুযায়ী, ১৮৯১ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ১৩২ বছরে বঙ্গোপসাগরে ১ হাজার ৬২৪টি নিম্নচাপ, গভীর নিম্নচাপ, ঘূর্ণিঝড় ও অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়েছে। ১৩২ বছরে শুধু ঘূর্ণিঝড় ও অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়েছে ৫৩৪টি। এসবের মধ্যে অক্টোবর মাসে সৃষ্টি হয়েছে ৯৪, নভেম্বরে ১২৫ ও ডিসেম্বরে ৫৫টি ও মে মাসে ৬৫টি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়েছে। ১৮৯১ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত অক্টোবরে সাগরে এ পর্যন্ত নিম্নচাপ, গভীর নিম্নচাপ ও ঘূর্ণিঝড় এবং অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির দিক দিয়ে নভেম্বরে ২১৯ ও ডিসেম্বরে ১০৫টি। 

চলতি বছর ৪টি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়েছে। এর আগে বছরে কতগুলো ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির রেকর্ড রয়েছে জানতে চাইলে ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, শুধু এ বছরই ৪টি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়েছে বিষয়টি মোটেও এমন নয়। বরং ইতোপূর্বেও বছরে একাধিক ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়েছে। তার মধ্যে ১৯০৬ সালে বঙ্গোপসাগরে ৬টি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়েছে। ১৯৩০ সালে ৮টি, ১৯৪১ সালে ৭টি, ১৯৪৩ ও ৪৪ সালে ৭টি করে, ১৯৬৮ সালে ৭টি, ১৯৭৭ সালে ৭টি, ১৯৮৫ সালে ৬টি, ১৯৮৭ সালে ৫টি, ২০০৫ সালে ৪টি, ২০১৩ সালে ৪টি, ২০১৮ সালে ৪টি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়েছে।  

এখনকার ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি ও আগেরগুলোর মধ্যে পার্থক্য কী জানতে চাইলে এই আবহাওয়াবিদ বলেন, পার্থক্য চিন্তা করলে দেখা যাচ্ছে যে, বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির সংখ্যা ইদানিং কমে যাচ্ছে। তবে ২০১৩ সালের পর থেকে যেসব ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হচ্ছে সেগুলো সাধারণ ঘূর্ণিঝড় থাকছে না। সেগুলো প্রবল ঘূর্ণিঝড় বা অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হচ্ছে। 

মিগজাউমের গতিপ্রকৃতি কেমন হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মিগজাউম প্রবল ঘূর্ণিঝড় অবস্থায় আঘাত হানবে। এটি আজ সোমবার সন্ধ্যা নাগাদ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। বর্তমানে সাগরে তার অনুকূল পরিস্থিতি বিরাজ করছে। মিগজাউম প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়ে ৫ ডিসেম্বর (মঙ্গলবার) ভারতের অন্ধ্র প্রদেশে নিলোর ও মুছলিপাটনামের কাছ দিয়ে উপকূল অতিক্রম করবে। এখনও ঘূর্ণিঝড়টি উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা বা ঝড়োহাওয়া আকারে ঘণ্টায় ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রে সাগর বিক্ষুব্ধ রয়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার আগে ৫টি ধাপ অতিক্রম করতে হয়। প্রথমে সাগরে ঘূর্ণিবায়ু তৈরি হয়। ঘূর্ণিবায়ুর পরবর্তী ধাপ লঘুচাপ। লঘুচাপের পর সৃষ্ট হয় সুস্পষ্ট লঘুচাপ। সুস্পষ্ট লঘুচাপটি নিম্নচাপ ও নিম্নচাপ থেকে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়। গভীর নিম্নচাপের পরবর্তী ধাপই হচ্ছে ঘূর্ণিঝড়। ঘূর্ণিঝড়ের ধাপগুলোর মধ্যে রয়েছে ৪টি ধাপ। ঘূর্ণিঝড়ের ধাপগুলো নির্ধারণ করা হয়ে থাকে বাতাসের গতিবেগের ওপর ভিত্তি করে। যদি বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ থেকে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত হয়, তাহলে তাকে সাধারণ ঘূর্ণিঝড় বলা হয়। বাতাসের গতিবেগ ৮৯ থেকে ১১৭ কিলোমিটার পর্যন্ত হলে তাকে শক্তিশালী (প্রবল ঘূর্ণিঝড়) ঘূর্ণিঝড় বলা হয়। বাতাসের গতিবেগ ১১৮ থেকে ২২০ কিলোমিটার পর্যন্ত হলে তাকে অতি শক্তিশালী (অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়) ঘূর্ণিঝড় হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ২২০ কিলোমিটারের বেশি হলে তাকে  সুপার সাইক্লোন হিসেবে মূল্যায়ন করা হয়। 

২৭ নভেম্বর বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে ২৯ নভেম্বর এটি সুস্পষ্ট লঘুচাপ ও ১ ডিসেম্বর নিম্নচাপ ও শনিবার গভীর নিম্নচাপ এবং গতকাল রবিবার ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। 

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা