× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

আশুলিয়ায় শ্রমিক অসন্তোষের পেছনে তিন কারণ খুঁজে পেয়েছে পুলিশ

আশুলিয়া (ঢাকা) প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১৮ নভেম্বর ২০২৩ ১৬:২৪ পিএম

আপডেট : ১৮ নভেম্বর ২০২৩ ১৬:৪১ পিএম

আশুলিয়ায় শ্রমিক অসন্তোষের পেছনে তিন কারণ খুঁজে পেয়েছে পুলিশ

ঢাকার আশুলিয়ায় পোশাক কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষের পেছনে তিনটি কারণ খুঁজে পেয়েছে পুলিশ। এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন তৈরি করে এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পুলিশ সদর দপ্তর ও শিল্পাঞ্চল পুলিশের সদর দপ্তরে পাঠিয়েছে শিল্পাঞ্চল পুলিশ-১।

এ ছাড়াও শ্রমিকদের ভেতরে লুকিয়ে থাকা অপরাধীদের গ্রেপ্তারে কাজ চলমান বলে জানিয়েছে পুলিশ। 

আশুলিয়া থানা সূত্র জানিয়েছে, শ্রমিক অসন্তোষে কারখানা ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় মালিকপক্ষ বাদী হয়ে গত ১৬ নভেম্বর পর্যন্ত ১৯টি মামলা করেছে। বেশির ভাগ মামলায় আসামি অজ্ঞাত। একটি মামলায় এজাহার নামীয় ১৫ জন আসামি উল্লেখ করা হয়েছে। এসব মামলায় এখন পর্যন্ত ২১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

আশুলিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোমেনুল ইসলাম বলেন, তদন্ত কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। শ্রমিকদের ভেতরে লুকিয়ে থাকা অপরাধীদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনা হচ্ছে।

আন্দোলনের বিষয়ে বাংলাদেশ গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রিয়াল শ্রমিক ফেডারেশন আশুলিয়া আঞ্চলিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. ইব্রাহীম বলেন, ২৮ অক্টোবর আশুলিয়ার নরসিংহপুরে সেতারা নামের একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা প্রথমে মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে কাজ ছেড়ে বেরিয়ে যায়। এরপর ধীরে ধীরে আশপাশের সব কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ে। হাফপ্যান্ট কিংবা কোয়ার্টার প্যান্ট পরে যারা ভাঙচুর চালিয়েছে তারা পোশাক শ্রমিক না। আমরা দেখেছি তারা কারখানায় ঢিল দিচ্ছে, ভাঙচুর চালাচ্ছে। এদের কেউ না কেউ মদদ দিচ্ছে। আমরা শ্রমিক নেতারা এর সঙ্গে জড়িত নই। তবে কেউ জড়িত থাকলে তাদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনা হোক। 

গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য লীগের সাধারণ সম্পাদক সরোয়ার হোসেন বলেন, শ্রমিকদের ছদ্মবেশে বিভিন্ন কারখানা ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ হয়েছে। বিভিন্ন ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে কিশোর গ্যাংসহ অনেকেই শ্রমিকের ছদ্মবেশে হামলা চালিয়েছে। আমরা চাই, তাদেরসহ ইন্ধনদাতাদেরও আইনের আওতায় আনা হোক।

আশুলিয়ার উইলিয়ামস সোয়েটার কারখানার ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ৩১ অক্টোবর এই কারখানায় অতর্কিতভাবে লাঠি হাতে ঢুকে পড়ে একদল মুখোশধারী কিশোর। তারা ঢুকেই ভাঙচুর চালিয়ে কারখানা বন্ধের নির্দেশ দেয়। শ্রমিকদের কাজ ছেড়ে বের হয়ে যেতে বাধ্য করে।

কারখানাটির প্রশাসনিক ব্যবস্থাপক পলাশ দত্ত বলেন, আমাদের কারখানায় ভালোভাবেই কাজ চলছিল। হঠাৎ একদল কিশোর জোর করে কারখানায় ঢুকে ভাঙচুর শুরু করে। ভাঙচুরকারীদের বয়স ১৭-১৮ বছরের বেশি হবে না। হাফপ্যান্ট ও থ্রি-কোয়ার্টার প্যান্ট পরা, মুখে মাস্ক পরে হাতে লাঠি নিয়ে তারা আক্রমণ করে। এই বয়সের কেউ তো শ্রমিক হওয়ার কথা না। তাদের উদ্দেশ্যই ছিল হামলা ও ভাঙচুর করে কারখানা বন্ধ করা। 

শ্রমিক অসন্তোষের পেছনের কারণ সম্পর্কে আশুলিয়া শিল্পাঞ্চল পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সারোয়ার আলম বলেন, পোশাক রপ্তানিতে বিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশ দ্বিতীয়, চীনের পরেই আমাদের স্থান। কোনো কারণে যদি এই শিল্পটাকে ক্ষতিগ্রস্ত করা যায় তাহলে অর্ডারগুলো অন্য দেশে চলে যাবে। এটি একটি কারণ হতে পারে। একই সঙ্গে দেখা যায়, বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তির পরিবারের কেউ কেউ শ্রমিক নেতা হয়ে গেছেন। সেই শ্রমিক নেতারা আবার শ্রমিকদের উস্কানোর এবং তাদের ভুল বোঝানোর চেষ্টা করছেন। তৃতীয় কারণ হলো, কিছু উচ্ছৃঙ্খল শ্রমিকের বাড়াবাড়ি। তারা নতুন বেতন কাঠামো নিয়ে ধোঁয়াশায় ছিল, এসব ঘটেছে বিষয়গুলো বিষয়ে স্বচ্ছ জ্ঞান না থাকার কারণে। ধীরে ধীরে তারা বুঝতে পেরেছেন, গ্রেড আকারে সবার বেতনই বেড়েছে। বেশির ভাগ শ্রমিক নতুন বেতন কাঠামো গ্রহণ করেছেন। তারা এতে সন্তুষ্ট। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক।

উল্লেখ্য, গত ২৮ অক্টোবর রাজধানীতে রাজনৈতিক দলগুলোর পাল্টাপাল্টি সমাবেশ ও মিছিল চলার সময় আশুলিয়ায় মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে শ্রমিকদের আন্দোলনের সূত্রপাত হয়। প্রথমে একটি কারখানা, ধীরে ধীরে বাকি কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ে। বিশেষ করে আশুলিয়ার জামগড়া, নরসিংহপুর, বেরন ও কাঠগড়া এলাকার শতাধিক কারখানার শ্রমিকরা বিক্ষোভ করেন। সড়ক অবরোধ করার ঘটনাও ঘটে। এ ছাড়াও হামলা-ভাঙচুরে ক্ষতিগ্রস্ত হয় অন্তত ২০ কারখানা। শ্রমিকসহ আহত হন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। হামলা থেকে রেহাই পাননি বিভিন্ন কারখানার কর্মকর্তারাও।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শিল্প ও থানা পুলিশ, গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি), র‌্যাব ও বিজিবি মোতায়েন করা হয়। এই ঘটনার রেশ ধরে আশুলিয়ার প্রায় ৮০টি কারখানা বন্ধের ঘোষণা দেয় কর্তৃপক্ষ। ১২ নভেম্বরের পর থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করে। 



শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা