ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’
মোংলা (বাগেরহাট) প্রতিবেদক ও কক্সবাজার অফিস
প্রকাশ : ১৭ নভেম্বর ২০২৩ ১১:৩৭ এএম
আপডেট : ১৭ নভেম্বর ২০২৩ ১২:০০ পিএম
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’ উপকূলের দিকে আরও এগিয়ে আসায় সমুদ্রবন্দরগুলোকে হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে বিপদসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। প্রবা ফটো
বঙ্গোপসাগরে তৈরি ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’ আজ শুক্রবার সন্ধ্যানাগাদ পটুয়াখালীর খেপুপাড়ার কাছ দিয়ে মোংলা-পায়রা উপকূল অতিক্রম করতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। আর ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রভাগ দুপুরনাগাদ উপকূল অতিক্রম শুরু করতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৭ নম্বর বিপদসংকেত দেখাতে বলেছে অধিদপ্তর। আর চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে দেখাতে বলা হয়েছে ৬ নম্বর বিপদসংকেত।
শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) ঘূর্ণিঝড়সংক্রান্ত আবহাওয়ার ৯ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে আবহাওয়া অধিদপ্তর এ কথা জানিয়েছে।
এদিকে ৭ নম্বর বিপদসংকেতের ফলে মোংলা বন্দরে অবস্থানরত দেশি-বিদেশি ১৫টি বাণিজ্যিক জাহাজে পণ্য ওঠানামার কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। জারি করা হয়েছে নিজস্ব অ্যালার্ট নম্বর-৩।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের সহকারী হারবার মাস্টার (অপারেশন) আমিনুর রহমান প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় একটি কন্ট্রোলরুম খোলা হয়েছে। বন্দরে অবস্থানরত মার্চেন্ট শিপকে মুভমেন্ট করতে নিষেধ করা হয়েছে। পণ্য নিয়ে অবস্থান করা সকল প্রকার লাইটার জাহাজকে নিরাপদে আশ্রয় নিতে বলা হয়েছে।’
তিনি জানান, পণ্য খালাস শেষে বন্দর ত্যাগ করার কথা থাকলেও ঝড়ের কারণে তা পারেনি ভারতের পতাকাবাহী ‘এমভি জাগ রানী’ ও বাংলাদেশের পতাকাবাহী ‘এমভি জাহান ব্রাদার্স’ নামে দুটি জাহাজ।
মোংলা আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ হারুন অর রশিদ বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়টি উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। এটি উপকূল থেকে ২০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে। সন্ধ্যার মধ্যে এটি আঘাত হানতে পারে। মোংলাসহ উপকূলীয় এলাকায় আজ সকাল থেকে হালকা বাতাসসহ ভারী বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।’
এদিকে ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় প্রস্তুতির কথা জানিয়ে মোংলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দীপংকর দাশ প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় মিধিলির কারণে ১০৩টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। ১৩০০ স্বেচ্ছাসেবক কর্মী প্রস্তুত রয়েছে। শুকনো খাবারও প্রস্তুত রাখার পাশাপাশি লোকজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য মাইকিং করা হচ্ছে। এছাড়া সাত নম্বর বিপদ সংকেত জারির পর অধিক ঝুঁকিতে থাকা পশুর নদী পাড়ের জয়মনিরঘোল, চিলা ও কানাইনগর এলাকার বাসিন্দাদের আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার জন্য কাজ করছি।’
কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ মো. ইমাম উদ্দিন বলেন, ‘কক্সবাজার সমুদ্র থেকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে এর পরিবর্তে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রভাগ আজ দুপুর নাগাদ উপকূল অতিক্রম শুরু করতে পারে। কক্সবাাজরে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় মিধিলি কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৯৫ কিলোমিটার পশ্চিম-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছে। এর কারণে বঙ্গোপসাগর উত্তাল হয়ে উঠেছে। ঘূর্ণিঝড়টি কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।’