× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

‘নিয়মমাফিক কাজ’ চালাচ্ছে সরকার

ফসিহ উদ্দীন মাহতাব

প্রকাশ : ১৭ নভেম্বর ২০২৩ ০০:৩২ এএম

আপডেট : ১৭ নভেম্বর ২০২৩ ১০:৫২ এএম

‘নিয়মমাফিক কাজ’ চালাচ্ছে সরকার

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর সংবিধানের আলোকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার ‘নির্বাচনকালীন’ সরকার হিসেবে ‘নিয়মমাফিক কার্যক্রম’ পরিচালনা করবে। এ সময় নির্বাচন কমিশন সার্বিক নির্বাচনী কার্যক্রম পরিচালনা করবে। অন্যদিকে সরকার নিয়মমাফিক কাজের বাইরে কোনো নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্ত নেওয়া থেকে বিরত থাকবে। যেসব চলমান উন্নয়ন প্রকল্প রয়েছে, তা অব্যাহত থাকবে। নতুন কোনো প্রকল্প নেওয়া বা কাজ শুরু করা যাবে না। একটি দলের পক্ষে যা কিছু নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে পারে, এ ধরনের কোনো কাজ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। নতুন কোনো আইনও প্রণয়ন করা যাবে না। 

গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে প্রশাসনের কেন্দ্রবিন্দু সচিবালয়সহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগে নিয়মমাফিক কার্যক্রম শুরু হতে দেখা যায়। মন্ত্রী ও সচিবরা কেবলমাত্র রুটিন কাজ সম্পাদন করেন। কর্মকর্তাদের কাজের পরিধি অনেকাংশে কমে গেছে। অন্য সময়ের মতো ব্যস্ততাও ছিল না। দর্শনার্থীদের ভিড়ও তেমন চোখে পড়েনি। গতকাল বিভাগীয় কমিশনারদের নিয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে সমন্বয় সভা থাকলেও আগের দিন তফসিল ঘোষণার কারণে সেটাও বাতিল করা হয়েছে। 

গত বুধবার সন্ধ্যায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরপরই ‘নির্বাচনকালীন’ সরকারের কার্যক্রম শুরু হয়ে যায়। সব ধরনের প্রস্তুতি নিতে আগে থেকেই সরকারপ্রধান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মন্ত্রী-সচিবদের প্রস্তুতি নেওয়ার কথা বলেন। মন্ত্রিসভা ছোট না করারও ঘোষণা দেন তিনি। বিদ্যমান মন্ত্রিসভা নিয়েই নির্বাচনকালীন সরকার পরিচালিত হবে বলে জানান। তবে যেসব মন্ত্রী নির্বাচনে প্রার্থী হবেন, তাদের সুযোগ-সুবিধা কমবে। নির্বাচনী প্রচারকাজে তারা সরকারি প্রটোকল পাবেন না। নিজ মন্ত্রণালয় ও অন্য মন্ত্রণালয়ের সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে রাজস্ব বা উন্নয়ন তহবিলভুক্ত কোনো প্রকল্পের অনুমোদন, ঘোষণা ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করতে পারবেন না। কোনো প্রকল্পের উদ্বোধনী ফলকও নির্বাচনের প্রার্থী হওয়া মন্ত্রীরা উন্মোচন করতে পারবেন না। তারা সরকারি ডাকবাংলো, সার্কিট হাউস বা কোনো সরকারি কার্যালয়কে কোনো দল ও প্রার্থীর পক্ষে ব্যবহার করতে পারবেন না। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। 

এদিকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে গতকাল প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, সংবিধানে কোথাও নির্বাচনকালীন সরকার বলে কিছু নেই। স্বাভাবিকভাবেই পরবর্তী সরকার দায়িত্ব না নেওয়া পর্যন্ত বর্তমান সরকারের অধীনে সব সরকারি কর্মকাণ্ড পরিচালিত হবে। নির্বাচনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব সিদ্ধান্ত নিতে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে পরামর্শ করা হবে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের আরেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, সরকারের স্বাভাবিক কাজকর্ম যথারীতি চলবে। সব বিষয়ে জনপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ, নির্বাচনী আচরণবিধি, সরকারের রুলস অব বিজনেস, ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স পুঙ্খানুপুঙ্খ অনুসরণ করা হবে। এগুলো নিয়ে কোনো জটিলতা নেই। 

সূত্র জানায়, মাঠ প্রশাসনে বিপুলসংখ্যক পুলিশ, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষকরা নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করে থাকেন। এসব কর্মকর্তা জনপ্রশাসন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন। নিয়ম অনুযায়ী, তফসিল ঘোষণার পর থেকে নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা, কর্মচারী এবং নির্বাচনী দায়িত্বে নিয়োজিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের নির্বাচন কমিশনের (ইসি) পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে থেকে কাজ করতে হবে। এ সময় ইসির অনুমতি ছাড়া কোনো কর্মকর্তাকে বদলি করা যাবে না। এ ছাড়া নির্বাচনে যদি কোনো কর্মকর্তা/কর্মচারী বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য পক্ষপাতমূলক আচরণ করেন বা ফলাফল প্রভাবিত করার চেষ্টা করেন, সেক্ষেত্রে ইসি তাকে নির্বাচনের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিতে পারবে। এমনকি তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে। সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের করার লক্ষ্যে ইসি নির্বাচন কর্মকর্তাদের শৃঙ্খলা ও নিয়ন্ত্রণের জন্য ‘নির্বাচন কর্মকর্তা (বিশেষ বিধান) আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে। 

এদিকে তফসিল ঘোষণার কারণে পুলিশের শূন্য পদে অতিরিক্ত আইজিপি, ডিআইজি ও অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতি আটকে আছে। অতিরিক্ত আইজিপি ও ডিআইজি পদে পদোন্নতির জন্য মন্ত্রিপরিষদ সচিবের সভাপতিত্বে একাধিকবার সুপিরিয়র সিলেকশন বোর্ডের (এসএসবি) সভা হয়েছে। পাশাপাশি অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতির জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েও বিভাগীয় পদোন্নতির সভা হয়। সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হওয়া সত্ত্বেও এখন আর তাদের পদোন্নতি সম্ভব হচ্ছে না। একই অবস্থা প্রশাসনে অতিরিক্ত সচিব পদের পদোন্নতিতেও। তবে সংশ্লিষ্টদের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, এ বিষয়ে মন্ত্রণালয় থেকে নির্বাচন কমিশনের অনুমতি নেওয়া যেতে পারে। তাতে আইনের কোনো ব্যত্যয় হবে না। 

আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক গতকাল বলেন, নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা হওয়ায় সরকার এখন রুটিন কাজ করবে। কোনো নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার এখন থেকে রুটিন কাজ করে যাবে।

আইনমন্ত্রী আরও বলেন, বুধবার তফসিল ঘোষণার পর থেকেই নিয়ম অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনই দায়িত্বশীলভাবে নির্বাচনের কাজকর্ম করবে। নির্বাচনের কাজে তাদের যেসব সরকারি বিভাগ, সংস্থা বা অফিসের প্রয়োজন হবে তার সবকিছুই তারা পাবে। তিনি বলেন, ‘যেহেতু সংসদ নেই, তাই কোনো আইন প্রণয়ন হবে না। কিন্তু এমন কথা আমি বলতে পারি না, এটা একটা স্বাধীন দেশ যদি প্রয়োজন হয় যে, অধ্যাদেশ দিয়ে আইন জারি করতে হবে বা কোনো বিশেষ কারণে বিশেষ ব্যবস্থায় অত্যন্ত জরুরি, তখন সেখানে আইন হবে নাÑ এ কথা বলা যাবে না।’ 

২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময়ও তফসিল ঘোষণার পর তৎকালীন সরকারই ‘নির্বাচনকালীন সরকার’ হিসেবে নিয়মমাফিক কার্যক্রম চালিয়ে যায়। তবে ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে ১৪ দলীয় জোট ও জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্যদের নিয়ে একটি ছোট আকারের মন্ত্রিসভা গঠন করা হয়েছিল। 

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা