ডিকাবের সেমিনারে রাষ্ট্রদূত
প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৯ নভেম্বর ২০২৩ ২১:০০ পিএম
আপডেট : ০৯ নভেম্বর ২০২৩ ২১:২৬ পিএম
সংগৃহীত ছবি
বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চীন তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ চায় না বলে জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। তিনি বলেন, ’বাংলাদেশের সংবিধান ও আইন অনুযায়ীই নির্বাচন দেখতে চায় চীন।’
বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে ডিপ্লোম্যাটিক করেসপনডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ (ডিকাব) আয়োজিত ‘বিআরআই’-এর ১০ বছর : পরবর্তী সোনালী দশকের সূচনা’ শীর্ষক সেমিনারে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। সেমিনারটি আয়োজনে সহযোগিতা করে চীনা দূতাবাস।
ইয়াও ওয়েন বলেন, ‘নির্বাচন বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। বাংলাদেশের নির্বাচনের বিষয়ে বাংলাদেশিরাই সিদ্ধান্ত নেবে। চীনের প্রত্যাশা, সব অংশীদার মিলে বাংলাদেশে রাজনৈতিক ও সামাজিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখবে। বাংলাদেশ জানে কী ধরনের নির্বাচন প্রয়োজন।’
চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, চীন অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে না। বাংলাদেশে চীনের বিপুল বিনিয়োগের বিষয়টি বিবেচনায় রেখে নির্বাচনের পরও স্থিতিশীলতার ওপর জোর দেন তিনি।
রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংলাপের বিষয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে ইয়াও ওয়েন বলেন, ’এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোই বলতে পারবে। চীন বাংলাদেশের সমাজে স্থিতিশীলতা চায়।’
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ’চীন, বাংলাদেশ, মিয়ানমার মিলে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরুর চেষ্টা করছে। রোহিঙ্গারা এ দেশে অতিথি হিসেবে এসেছে। তাদের প্রত্যাবাসনে আন্তর্জাতিক সমর্থনও প্রয়োজন। চীন দেখতে পাচ্ছে, অনেকেই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন চায় না।’
রিজার্ভ সংকট মোকাবিলায় পাশে থাকবে বেইজিং
চীনের রাষ্ট্রদূত বলেন, ’রিজার্ভের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে এখনও ভালো অবস্থানে আছে। বর্তমানে রিজার্ভ নিয়ে যে সংকটের কথা বলা হচ্ছে, তা থেকে বাংলাদেশ সহজেই উত্তরণ ঘটাতে পারবে। আর বাংলাদেশ যদি রিজার্ভের ক্ষেত্রে সহযোগিতা চায়, চীন প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করতে প্রস্তুত থাকবে। বাংলাদেশের পাশে থাকবে চীন।’
রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, ’দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে কাজ চলছে। এক্ষেত্রে মুক্তবাণিজ্য অর্থনীতিসংক্রান্ত নানাবিধ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। আশা করা হচ্ছে, ২০২৬ সালের মধ্যে চীন ও বাংলাদেশ মুক্তবাণিজ্য চুক্তি সম্পাদন করতে পারবে। চুক্তি সম্পন্ন হলে বাণিজ্য ঘাটতি কমে আসবে।’
ফিলিস্তিন নিয়ে চীনের রাষ্ট্রদূত বলেন, চীন শান্তি, ন্যায়বিচার, আন্তর্জাতিক আইন ও বিশ্বের সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের অভিন্ন আকাঙ্ক্ষার পক্ষে। তারা বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে সব সহিংসতা ও আক্রমণের নিন্দা জানায়।
আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে—এমন সব কাজের বিরোধিতা করে চীন। তারা বিশ্বাস করে, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাতে হবে। পরিস্থিতির অবনতি এড়াতে আন্তর্জাতিক মানবিক আইন মেনে চলতে হবে। বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাতে হবে। যত দ্রুত সম্ভব মানবিক সহায়তা ও উদ্ধারের পথ উন্মুক্ত করা অপরিহার্য। চীন সংশ্লিষ্ট দেশগুলোকে শান্ত থাকা ও সংযম চর্চার আহ্বান জানায়।
তিনি বলেন, ’ফিলিস্তিন সমস্যার সমাধানে জাতিসংঘকে যথাযথ ভূমিকা পালন করতে হবে। এর জন্য জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করতে হবে। যত দ্রুত সম্ভব আন্তর্জাতিক ঐকমত্য গড়ে তুলতে হবে। এ লক্ষ্যে বাস্তব ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।’
সেমিনারে চাইনিজ এন্টারপ্রাইজেস অ্যাসোসিয়েশন ইন বাংলাদেশের (সিইএবি) সভাপতি কে চ্যাংলিয়াং বলেন, ’বাংলাদেশের অনেক বৃহৎ প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে চীন। আগামী দিনে চীন আরও প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে বাংলাদেশের পাশে থাকবে চীন।’