প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৬ নভেম্বর ২০২৩ ১২:৫৯ পিএম
আপডেট : ০৬ নভেম্বর ২০২৩ ১৪:৪১ পিএম
ছবি : সংগৃহীত
জন্মনিবন্ধন সনদ করতে হলে প্রত্যেক ব্যক্তির সর্বনিম্ন দুই শব্দের নাম বাধ্যতামূলক করেছে সরকার।এর ব্যত্যয় হলে সনদ দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন কার্যালয়।পাসপোর্ট তৈরি, বিদেশে বিভিন্ন সেবা নিতে সমস্যা হওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
নিবন্ধন কার্যালয়ের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. রাশেদুল হাসান বলেন, জন্মনিবন্ধন ব্যক্তির প্রথম ও প্রাথমিক নিবন্ধন। জন্মনিবন্ধন সনদ ব্যক্তির ও ব্যক্তির পিতা-মাতার পরিচয় বহন করে। এর ওপর ভিত্তি করে ব্যক্তিজীবনের পরবর্তী সব নিবন্ধন হয়ে থাকে। কিন্তু এক্ষেত্রে অনেকে অসাবধানবশত বা অজ্ঞাতে শুধু ডাকনাম বা এক শব্দবিশিষ্ট নাম উল্লেখ করে থাকেন। এতে পাসপোর্ট তৈরিসহ অনেক ক্ষেত্রে বিদেশে বিভিন্ন সেবা গ্রহণে সমস্যার সৃষ্টি হয়। তিনি বলেন, সখিনা, মর্জিনা বা রশিদ- এ ধরনের এক শব্দের নামে আর জন্মনিবন্ধন সনদ ইস্যু করা হবে না। সখিনা বেগম বা সখিনা খাতুন, আব্দুর রশিদ বা মো. আব্দুর রশিদ সরকার- এভাবে লিখতে হবে।
জন্মনিবন্ধন আইন করা হয় ২০০৪ সালে, যা কার্যকর হয় ২০০৬ সালে। পাসপোর্ট ইস্যু, বিবাহনিবন্ধন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি, ড্রাইভিং লাইসেন্স নেওয়া, জমি রেজিস্ট্রেশনসহ বিভিন্ন কাজে জন্মনিবন্ধন সনদ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। শুরুর দিকে হাতে লিখে জন্মনিবন্ধন সনদ দেওয়া হতো। ২০১০ সালে ডিজিটাল পদ্ধতিতে অনলাইনে আবেদন করার মাধ্যমে সনদ দেওয়া শুরু হয়।
সফটওয়্যার জটিলতায় অশেষ ভোগান্তি
মেয়ে আয়েশা তাসনিমকে স্কুলে ভর্তি করাতে জন্মনিবন্ধনের প্রয়োজন হয় রাজধানীর মিরপুরের বাসিন্দা শরিফুল ইসলামের। ছুটে যান মিরপুর-১৪ নম্বরে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের আঞ্চলিক অফিসে। সেখানে কর্মকর্তারা জানান, সার্ভারে সমস্যা রয়েছে। দুই দিন অপেক্ষা করতে হবে। এভাবে এক-দুই দিন ছোটাছুটি করে কেটে যায় দুই সপ্তাহ। এদিকে ঘনিয়ে আসছে ভর্তির আবেদনের সময়। শেষমেশ গ্রামের বাড়ি নেত্রকোণার দুর্গাপুর উপজেলার গাওকান্দিয়া থেকে মেয়ের জন্মসনদ নেন তিনি।
রাজধানীর ঢাকা উদ্যানের বাসিন্দা কনক খান। দুই মেয়ের জন্মসনদ নিতে প্রথমে যান স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর কার্যালয়ে। সেখান থেকে বলা হয়, সার্ভার সমস্যার কারণে আবেদন গ্রহণ করা যাচ্ছে না। পরে তিনি যোগাযোগ করেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মূল কার্যালয়ে। সেখানেও একই জবাব। তিনি বাধ্য হয়ে জন্মনিবন্ধন অধিদপ্তর কার্যালয়ে যোগাযোগ করে আবেদন করে সনদ নেন।
এভাবেই প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন কার্যালয়ের সূত্র জানায়, মূলত ওয়েবসাইটের কারিগরি ত্রুটির কারণে প্রায়ই আবেদন করা যায় না। কারিগরি ত্রুটির মধ্যে রয়েছে সার্ভারে জায়গা কম থাকা, এর সঙ্গে যুক্ত সফটওয়্যারগুলো আপডেট না থাকা। এ ছাড়া দক্ষ জনবল না থাকাও একটি কারণ। রেজিস্ট্রার জেনারেল বলেন, ‘সফটওয়্যার প্রতিনিয়ত আপডেট হচ্ছে। আশা করি শিগগির সব সমস্যার সমাধান হবে।’