হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ
প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০১ নভেম্বর ২০২৩ ১৫:২১ পিএম
আপডেট : ০১ নভেম্বর ২০২৩ ১৫:২৭ পিএম
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ দাবি জানানো হয়। প্রবা ফটো
জাতীয় সংসদের শেষ অধিবেশনের আগেই জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠনের বিল উত্থাপন ও পাসের জন্য দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতারা। বুধবার (১ নভেম্বর) সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সরকারের কাছে তারা এ দাবি জানান।
ঐক্য পরিষদের নেতারা জানান, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নির্বাচনী ইশতেহার আওয়ামী লীগ সংখ্যালঘু স্বার্থবান্ধব অঙ্গীকারে জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠনসহ বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিলেও সংখ্যালঘুদেরকে প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করেননি।
এসময় হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে দেওয়া প্রতিশ্রুতির বিষয়ে একটি লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন।
লিখিত বক্তব্যে রানাদাশ গুপ্ত জানান, সরকার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সরকার জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠনের ঘোষণা দেবেন। কিন্তু সরকারের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠনের ঘোষণা এখন পর্যন্ত আমরা পাইনি, যা ধর্মীয় জাতিগত সংখ্যালঘুদের কাছে অত্যন্ত দুঃখজনক ও হতাশাব্যঞ্জক।
এসময় সরকারের শেষ সংসদ অধিবেশনের আগেই সংখ্যালঘু কমিশন গঠন করার দাবি জানিয়ে লিখিত বক্তব্যে আরও জানানো হয়, একাদশ জাতীয় সংসদের শেষ অধিবেশনে জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠনের বিল উত্থাপন ও পাস করার জন্য সরকার এবং জাতীয় সংসদের সম্মানিত সদস্যদের কাছে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ আহ্বান জানাচ্ছি।
আজ বা কালই শেষ হচ্ছে সংসদের শেষ অধিবেশন। এই অবস্থায় সরকারের পক্ষে দাবি বাস্তবায়ন সম্ভব কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সরকারের সদিচ্ছা থাকলে তা সম্ভব। আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান কবির বিন আনোয়ার আমাদের জানিয়েছেন, সংখ্যালঘু কমিশন গঠনের প্রক্রিয়া শেষ পর্যায় রয়েছে।’
কেমন কমিশন চান সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সমন্বিত সংগঠনের এই নেতা বলেন, ‘পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের শাসনামলে সংখ্যালঘু সুরক্ষায় যে আইন প্রণীত হয়েছে, তাকে মডেল হিসেবে নিয়ে আমরা এ কমিশন গঠনের রূপরেখা দিয়েছিলাম। এখন কমিশন গঠনের যে খসড়া হয়েছে, তা চূড়ান্ত করবে সরকার ও আমলারা।’
বিদ্যমান রাজনৈতিক সংকটে দেশের ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায় উদ্বিগ্ন জানিয়ে রানা দাশগুপ্ত বলেন, ‘রাজনৈতিক সহিংসতার সুযোগ নিয়ে দেশের পরিস্থিতিকে অস্থিতিশীল করার জন্য যাতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে টার্গেট করে কোনো সহিংসতা যেন চালাতে পারে সেজন্য সরকার, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, রাজনৈতিক দল ও সচেতন নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’
সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের অন্যতম সভাপতি অধ্যাপক নিমচন্দ্র ভৌমিক, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য রঞ্জন কর্মকার, মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি মনীন্দ্র কুমার নাথ, জাতীয় হিন্দু মহাজোটের একাংশের সাধারণ সম্পাদক এম কে রায়।
বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ এবং ধর্মীয়-জাতিগত সংখ্যালঘু ও আদিবাসী জনগোষ্ঠীর ঐক্যমোর্চা ৪ নভেম্বর ঢাকায় যে মহাসমাবেশের ডাক দিয়েছিল, দ্বন্দ্বমুখর রাজনৈতিক বাস্তবতায় তা পিছিয়ে ১৭ নভেম্বর নির্ধারণ করা হয়েছে।