ঢাবির বিশেষ সমাবর্তনে প্রধানমন্ত্রী
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৯ অক্টোবর ২০২৩ ১৭:২৫ পিএম
আপডেট : ২৯ অক্টোবর ২০২৩ ১৮:০৯ পিএম
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবির) বিশেষ সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সমাবর্তন বক্তা ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি : ফোকাস বাংলা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘একটা স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করেছি। দ্বিতীয়টাও আমরা করব। এরপর তো আমাদের চাঁদে যেতে হবে। চাঁদে যাওয়ার জন্য ইতোমধ্যে আমি লালমনিরহাটে অ্যাভিয়েশন স্পেস ইউনিভার্সিটি করে দিয়েছি। প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় বিশেষায়িতভাবে তৈরি করে দিচ্ছি। যাতে করে সব ধরনের শিক্ষা আর গবেষণা করতে পারে।’
রবিবার (২৯ অক্টোবর) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবির) বিশেষ সমাবর্তন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। ঢাবির কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
সমাবর্তনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সম্মানসূচক ‘ডক্টর অব লজ’ ডিগ্রি প্রদান করা হয়। বঙ্গবন্ধুর পক্ষে এ ডিগ্রি গ্রহণ করেন তাঁর কন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর হাতে ডিগ্রি হস্তান্তর করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। ডিগ্রি গ্রহণের পর বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাক্ষর করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার স্বাক্ষর গ্রহণ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বাহালুল হক চৌধুরী।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আমারও বিশ্ববিদ্যালয়। কাজেই আমার বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে আমি গর্ববোধ করি। আমি চাই গবেষণা যেন হয়। গবেষণার প্রতি যেন বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকলের কাছে আমার আহ্বান এবং অনুরোধ থাকবে যে গবেষণার দিকে আপনারা আরও বিশেষভাবে নজর দিন। তাহলেই বাংলাদেশকে আরও অত্যধিকভাবে উন্নত করা যাবে। আবার সেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাচ্যের অক্সফোর্ডের গৌরব ফিরে পাবে। এখনই আমরা অনেক দূর এগিয়েছি, আরও এগিয়ে যাব।’
তিনি বলেন, ‘অনেক ত্যাগের বিনিময়ে আমাদের স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে। এই স্বাধীনতার সুফল দেশের প্রতিটি ঘরে আমরা পৌঁছে দেব। ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছিলাম, সেটি বাস্তবায়ন করেছি। এখন আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলব। দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে যা যা করার আমরা করে যাচ্ছি। গত ১৫ বছর ধরে আমরা ক্ষমতায় আছি। ২০০৯ সাল থেকে আজকে ২০২৩ এটি এখন এক বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। আজকের ছাত্রছাত্রীরা উপলব্ধি করতে পারবে না ২০ বছর আগে কেমন বাংলাদেশ ছিল। সেখানে ক্ষুধা-দরিদ্র ছিল, বৈজ্ঞানিক কোনো কিছু ছিল না। আমরা ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে বিজ্ঞান ও কম্পিউটার শিক্ষা চালু করি।’
সরকারপ্রধান বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যেমন চেয়েছিলেন তেমন বাংলাদেশ গড়াই আমার একমাত্র লক্ষ্য। আমার কাছে প্রধানমন্ত্রিত্ব কিছু নয়। প্রধানমন্ত্রী বহু আগেই হতে পারতাম। কিন্তু আমি সেভাবে চাইনি। আমার একটাই লক্ষ্য ছিল, ক্ষমতা হবে জনগণের কল্যাণ সাধন করার জন্য। জাতির পিতা যেভাবে চেয়েছেন সেভাবেই দেশকে গড়ে তোলা। সেই প্রচেষ্টাই আমি চালিয়ে যাচ্ছি। জাতির পিতার আদর্শ নিয়ে পথ চলায় আজকে বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে গেছে। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা আমরা পেয়েছি। যা বাস্তবায়ন হবে ২০২৬ সাল থেকে। জাতির পিতার আদর্শ নিয়ে যদি রাষ্ট্র পরিচালিত হয়, তাহলে এই বাংলাদেশ আর পেছনে ফিরে তাকাবে না। অনেক দেশই আমাদের সঙ্গে ছিল, অনেকেই পিছিয়ে গেছে। আমরা কিন্তু পিছিয়ে যাইনি।’
তিনি বলেন, ‘২০১০ সালের ১৪ আগস্ট জাতির পিতার প্রতি যে বহিষ্কারদেশ ছিল সেটা প্রত্যাহার করে নিয়েছিল। আজকে আপনারা জাতির পিতাকে ডক্টর অব লজ উপাধিতে ভূষিত করেছেন, আমি জানি না কী ভাষায় আপনাদের ধন্যবাদ জানাব। আমি কন্যা হিসেবে কৃতজ্ঞতা জানাই। জাতির পিতা ১৯৭৩ সালে আইন করে আমাদের যে কয়টি বিশ্ববিদ্যালয় ছিল সে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বায়ত্তশাসন তিনি দিয়েছিলেন। কারণ বিশ্ববিদ্যালয় এমন একটি বিদ্যাপিঠ যেখানে সবাই শিক্ষাগ্রহণ করবে, গবেষণা করবে। যে গবেষণার ফসল হবে দেশের উন্নয়ন, আর্থ-সামাজিক মুক্তি।’