× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

এলডিসি থেকে উত্তরণের পর ইইউর কাছে জিএসপি চান প্রধানমন্ত্রী

প্রবা প্রতিবেদন

প্রকাশ : ২৫ অক্টোবর ২০২৩ ২০:৪০ পিএম

আপডেট : ২৫ অক্টোবর ২০২৩ ২২:৩৩ পিএম

ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ইউরোপীয় কমিশনের চেয়ারম্যান উরসুলা ফনদেরলিয়েন। ছবি : সংগৃহীত

ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ইউরোপীয় কমিশনের চেয়ারম্যান উরসুলা ফনদেরলিয়েন। ছবি : সংগৃহীত

২০২৬ সালে এলডিসি থেকে উত্তরণের পর বাংলাদেশের উন্নয়নে সহায়তা করতে জিএসপি (জেনারেলাইজড সিস্টেম অব প্রেফারেন্সেস) দেওয়ার জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি ইইউ সদর দফতরে বেশ কয়েকটি চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আমি আশা করি ২০২৬ সালে বাংলাদেশের এলডিসি থেকে উত্তরণের পর আমাদের উন্নয়নে সহায়তার জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশকে জিএসপি প্লাস সুবিধা দেবে।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ইউরোপীয় কমিশনের চেয়ারম্যান উরসুলা ভন ডার লেয়েন ব্রাসেলসে ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান কার্যালয়ে বাংলাদেশ সরকার ও ইউরোপীয় বিনিয়োগ ব্যাংকের (ইআইবি) মধ্যে ৩৫০ মিলিয়ন ইউরো অর্থায়ন চুক্তিসহ বেশ কয়েকটি চুক্তি স্বাক্ষর প্রত্যক্ষ করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এ বছর বাংলাদেশ-ইইউর অংশীদারিত্বের ৫০ বছর পূর্তি হয়েছে। আমরা খুশি যে ইইউ এখন বাংলাদেশের বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার।’ প্রধানমন্ত্রী তার প্রথম মেয়াদ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত এই ব্যবস্থার আনুষ্ঠানিকতার কথা স্মরণ করে বলেন, অস্ত্র ছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিটি স্কিমই বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ব্যাপক অবদান রেখেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা শ্রমিকদের অধিকারের পাশাপাশি তাদের নিরাপত্তা ও নিয়মিত অভিপ্রয়াণ সুরক্ষায় আমাদের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছি।’ তাদের মধ্যে বাংলাদেশ-ইইউ সম্পর্কের ওপর খোলামেলা মত বিনিময় হয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও আইনের শাসন—এ অভিন্ন মূল্যবোধের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছি।’ 

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও ইসি প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেয়েনের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার পর, এখানে বেলজিয়ামে বাংলাদেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে সহায়তার জন্য বাংলাদেশ, ইউরোপিয়ান ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (ইআইবি) ও ইউরোপীয় কমিশনের (ইসি) মধ্যে তিনটি ঋণ ও অনুদান চুক্তি হয়েছে। এ সময় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী, ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট ও ইআইবি প্রেসিডেন্ট ওয়ার্নার হোয়ার চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠান প্রত্যক্ষ করেন।

ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেইন তার বিবৃতিতে বলেন, দুটি বিনিয়োগ প্যাকেজ স্বাক্ষরিত হয়েছে। প্রথমটি হল বাংলাদেশে সবুজ রূপান্তর ত্বরান্বিত করার জন্য ৪০০ মিলিয়ন ইউরোর বেশি অর্থের একটি নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্যাকেজ। দ্বিতীয় বিনিয়োগ প্যাকেজটি হল আমাদের ২০২৩ সালের বার্ষিক কর্মপরিকল্পনা যা আপনাদের জনপ্রশাসনে এবং কর্মসংস্থান, দক্ষতা ও শিক্ষা ও সবুজ রূপান্তরে ৭০ মিলিয়ন ইউরোর বিনিয়োগ রোডম্যাপ। এরপর তিনি বললেন, ‘সুতরাং, এটির মাধ্যমে আমাদের অংশীদারিত্বের এই নতুন অধ্যায়টি সত্যিকার অর্থেই ভালভাবে শুরু হচ্ছে।’

ইসি প্রেসিডেন্ট বলেন, তারা প্রথমত একটি নতুন অংশীদারিত্ব ও সহযোগিতা চুক্তি নিয়ে পুনরায় আলোচনা শুরু করছেন। আর এটি একটি দারুণ খবর! লেইন আরো বলেন, ‘দ্বিতীয়ত, আমাদের সম্পর্কের এই নতুন অধ্যায়টি গ্লোবাল গেটওয়ের আওতায় নতুন বিনিয়োগ দ্বারা জোরালো হবে। আর আমরা এটি নিয়েই আলোচনা করেছি।’

বাংলাদেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের ৫০ বছরের সম্পর্কের অর্জন নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা একটি দৃঢ় অংশীদারিত্ব গড়ে তুলেছি এবং এখন আমরা এটিকে পরবর্তী স্তরে নিয়ে যাব। কারণ বৈশ্বিক অস্থিরতার এই সময়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন তার দীর্ঘস্থায়ী অংশীদারদের কাছে বিশ্বস্ত হতে পেরে আনন্দিত। কারণ তারা আমাদের উপর আস্থা রাখতে পারে।’


যুদ্ধ বন্ধসহ পারস্পরিক শ্রদ্ধা পুনরুদ্ধারের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্ব নেতাদের প্রতি শান্তি ও অগ্রগতি নিশ্চিত করার জন্য যুদ্ধ বন্ধ এবং দেশগুলোর মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধা পুনরুদ্ধারের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘মানব সংযোগ শান্তি ও অগ্রগতির লাইফলাইন। আমাদের অবশ্যই যুদ্ধ, সংঘাত ও অস্ত্র প্রতিযোগিতার অবসান ঘটাতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী এখানে তার আবাসস্থলের জিজিএফ কনফারেন্স হলে ‘গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরাম’ সম্মেলনের উদ্বোধনী পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে ভাষণদানকালে এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বর্তমানে চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং গাজায় ইসরায়েলি হামলার প্রেক্ষাপটে ভবিষ্যতের সংকট মোকাবেলায় আরও ভাল প্রস্তুতি এবং পারস্পরিক সম্মান পুনরুদ্ধারের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।

তিনি বলেন, ‘আমাদের ভবিষ্যতের সংকটের জন্য আরও ভালভাবে প্রস্তুত হতে হবে। আমাদের অবশ্যই পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও বিভিন্ন দেশের মধ্যে বোঝাপড়ার প্রতি বিশ্বাস ফিরিয়ে আনতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরাম ২০২৩-এর সর্বাত্মক সাফল্য কামনা করে দীর্ঘস্থায়ী শান্তি ও টেকসই উন্নয়নের জন্য এটি এক মহান সংযোগ হিসেবে কাজ করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি আরও বলেন, সবুজ হাইড্রোজেন উন্নয়নে বাংলাদেশ ইইউর সঙ্গে যোগ দিতে ইচ্ছুক।

তিনি বলেন, ‘আমরা সামুদ্রিক সম্পদের টেকসই ব্যবহারে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দক্ষতা থেকে উপকৃত হতে পারি। আমাদের কৃষি উৎপাদন সংরক্ষণের জন্য আমাদের কোল্ড চেইন নেটওয়ার্কগুলোতে বিনিয়োগের প্রয়োজন।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের ফার্মাসিউটিক্যালস ও চিকিৎসা সরঞ্জাম শিল্প উৎপাদন বহুমুখীকরণে ইইউর প্রচেষ্টাকে সহায়তা করতে পারে।

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আমাদের আগামী দিনের ইনস্টিটিউটগুলোর জন্য অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে অংশীদার খুঁজছি।’ শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের গতিশীল তরুণ জনগোষ্ঠী ইইউর দক্ষতা ও প্রতিভা অংশীদারিত্ব কর্মসূচিতে যোগ দিতে প্রস্তুত।

তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি গ্লোবাল গেটওয়ে ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি বাস্তবায়নে সহায়তা করবে।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিরাপত্তা, জলবায়ু পরিবর্তন এবং মানুষের গতিশীলতার ক্ষেত্রে তাদের ফলপ্রসূ সহযোগিতা রয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমাদের অভিন্ন মূল্যবোধ ও অঙ্গীকার ইইউর সাথে আমাদের সম্পৃক্ততার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা আনুষ্ঠানিকভাবে দ্বিপক্ষীয় অংশীদারিত্ব ও সহযোগিতা চুক্তিতে আলোচনা শুরু করেছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ৩৫তম বৃহত্তম অর্থনীতি। কারণ আমাদের ৭০ বিলিয়ন ডলারের অর্থনীতি ১৫ বছরেরও কম সময়ে ৪৬৫ বিলিয়নে উন্নীত হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের লাখ লাখ মানুষকে দারিদ্র্য থেকে বের করে এনেছি। চরম দারিদ্র্য ২০০৬ সালের ২৫.১% থেকে ৫.৬%-এ নেমে এসেছে। বাংলাদেশ ২০২৬ সালে জাতিসংঘের এলডিসি মর্যাদা থেকে উন্নীত হতে চলেছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, তার বাবা বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশকে একটি আঞ্চলিক সেতবন্ধু নির্মাতা হিসেবে দেখতে চেয়েছিলেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ১৭০ মিলিয়ন জনসংখ্যা নিয়ে কৌশলগতভাবে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে অবস্থিত এবং এটির এ অঞ্চলের ৩ বিলিয়ন গ্রাহকের একটি বাণিজ্য কেন্দ্রে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

সূত্র : বাসস।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা