প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৩ অক্টোবর ২০২৩ ১৯:৩০ পিএম
ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী। ফাইল ছবি
দক্ষ, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক ভূমি ব্যবস্থাপনা দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে বলে জানিয়েছেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী।
সোমবার (২৩ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর একটি হোটেলে ভূমি মন্ত্রণালয়, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং বিশ্বব্যাংকের উদ্যোগে আয়োজিত ‘ইন্টিগ্রেটেড অ্যান্ড কমপ্রিহেনসিভ ল্যান্ড এডমিনিস্ট্রেশন ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক দুদিনব্যাপী কর্মশালার প্রথম দিন প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় ভূমি সচিব মো. খলিলুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমি একটি আবশ্যিক উপাদান। এছাড়াও ভূমি কেন্দ্রিক সমস্যা কমে গেলে মানুষের মূল্যবান সময় এবং অর্থ বেঁচে যাবে; যা অধিকতর উৎপাদনশীল কাজে ব্যয় করা যাবে। ব্যস্টিক ও সামস্টিক অর্থনীতি- দুই ক্ষেত্রের অগ্রগতিতেই দক্ষ ও টেকসই ভূমি ব্যবস্থাপনার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এজন্যই ভূমিসেবা ডিজিটাইজেশনকে এতো গুরুত্ব দিয়েছেন।
তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতাভুক্ত ভূমি নিবন্ধন (রেজিস্ট্রেশন) ডিজিটাইজেশন দ্রুত শেষ করে, তা দেশব্যাপী ভূমি মন্ত্রণালয়ের আওতাভুক্ত নামজারির (মিউটেশন) সাথে আন্তঃসংযোগ করা গেলে মানুষের জন্য ভূমিসেবা গ্রহণ আরও সহজ হবে।
দেশব্যাপী ডিজিটাল সার্ভে শেষ হলে মাঠে গিয়ে জরিপের প্রয়োজনীয়তা থাকবে না উল্লেখ করে ভূমিমন্ত্রী বলেন, আমাদের উদ্দেশ্য জমি কেনার আগে অনলাইনেই তাৎক্ষণিকভাবে ক্রেতা যেন জমির মালিকানা পরিবর্তনের ইতিহাস জানতে পারেন।
তিনি বলেন, আমরা এমন এক সিস্টেম স্থাপনের স্বপ্ন দেখছি, যেখানে ক্রেতা জমি ক্রয়ের সময় ডিজিটালি নিবন্ধন করার পর যেন স্বয়ংক্রিয়ভাবে নামজারি, হোল্ডিং তৈরি হয়ে ভূমি উন্নয়ন কর নির্ধারণ হয় এবং একই সঙ্গে একক মালিকভিত্তিক খতিয়ান ও মৌজাম্যাপও যেন প্রস্তুত হয়ে যায়।
মন্ত্রী বলেন, মানুষ যেন ভূমি অফিসে না গিয়েই জমির মালিকানা পরিবর্তনের সব আইনি কার্যক্রম সম্পন্ন করতে পারেন- সেই ব্যবস্থা স্থাপনেও আমরা কাজ করছি।
ভূমি সচিব বলেন, ইতোমধ্যে ভূমি অপরাধ প্রতিকার ও প্রতিরোধ আইনে জুডিশিয়াল কোর্টে মামলা হয়েছে। আমরা এসব পর্যবেক্ষণ করছি। এছাড়া এই আইনের বিধি প্রণয়নের কাজও দ্রুত এগিয়ে চলছে। তিনি বলেন, উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্য সম্পদের উপর নারীদের যথাযথ অধিকারের বিষয়টি খুব গুরুত্বের সাথে দেখা হচ্ছে।
কর্মশালার প্রথমদিন বিশেষজ্ঞ আলোচকদের মধ্যে ছিলেন সাবেক সচিব ও ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেডের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম খান, ভূমি মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব ড. মো. জাহিদ হোসেন পনির, বিশ্বব্যাংকের লিড ল্যান্ড অ্যাডমিনিস্ট্রেশন স্পেশালিষ্ট মিকা-পেটেরি টরহোনেন, বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র ল্যান্ড অ্যাডমিনিস্ট্রেশন স্পেশালিস্ট ডং কিউ কোয়াক প্রমুখ।
কর্মশালায় ভূমি মন্ত্রণালয় ও আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং এসবের আওতাভুক্ত দপ্তর/সংস্থার কর্মকর্তারা, অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি কর্মকর্তা, ভূমি মন্ত্রণালয়ের ভূমিসেবা উন্নয়ন পরামর্শক, মাঠ পর্যায়ে সরাসরি ভূমিসেবা প্রদানকারী ভূমি অফিস, সেটেলমেন্ট অফিস এবং নিবন্ধন অফিসের কর্মকর্তারা এবং ভূমিসেবা ডিজিটাইজেশন কার্যক্রমের ভেন্ডার প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আগামী বুধবার (২৫ অক্টোবর) কর্মশালার দ্বিতীয় দিনের কার্যক্রম হবার কথা রয়েছে।