× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

শেখ রাসেল দীপ্তিময় নির্ভীক নির্মল দুর্জয়

প্রবা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১৮ অক্টোবর ২০২৩ ০৯:১৭ এএম

আপডেট : ১৮ অক্টোবর ২০২৩ ১১:২৩ এএম

শেখ রাসেল দীপ্তিময় নির্ভীক নির্মল দুর্জয়

‘আল্লাহর দোহাই আমাকে জানে মেরে ফেলবেন না। বড় হয়ে আমি আপনাদের বাসায় কাজের ছেলে হিসেবে থাকব। আমার হাসু আপা দুলাভাইয়ের সঙ্গে জার্মানিতে আছেন। আমি আপনাদের পায়ে পড়ি, দয়া করে আপনারা আমাকে জার্মানিতে তাদের কাছে পাঠিয়ে দিন।’ এভাবেই খুনিদের কাছে বেঁচে থাকার আর্তি জানিয়েছিলেন শেখ রাসেল। কিন্তু তার সেই আর্তি টলাতে পারেনি খুনিদের মন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের অন্য সদস্যদের মতো তাকেও ১৫ আগস্টের সেই ভয়াল দিনে ঠান্ডা মাথায় খুন করা হয়েছিল। 

সেদিনের শহীদ শেখ রাসেলের জন্মদিন আজ ১৮ অক্টোবর। সেদিন তিনি শহীদ না হলে আজ তাঁর বয়স ৫৯ বছর পূর্ণ হতো; উদযাপন করতে পারতেন ৬০তম জন্মদিন। 

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছোট ছেলে শেখ রাসেলের এই জন্মদিন প্রতি বছর পালিত হয় ‘শেখ রাসেল দিবস’ হিসেবে। এবার রাষ্ট্রীয়ভাবে তৃতীয়বারের মতো পালিত হচ্ছে ‘শেখ রাসেল দিবস।’ এবার এ দিবসটির প্রতিপাদ্যÑ‘শেখ রাসেল দীপ্তিময়, নির্ভীক নির্মল দুর্জয়’।

শেখ রাসেল দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোট ভাই শেখ রাসেল ১৯৬৪ সালের এই দিনে ধানমন্ডির ঐতিহাসিক স্মৃতি-বিজড়িত বঙ্গবন্ধু ভবনে জন্মগ্রহণ করেন। মৃত্যুকালে তিনি ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র ছিলেন।

গৃহশিক্ষকের চোখে শেখ রাসেল

‘আপনি মিষ্টি পছন্দ করেন না বলে মিষ্টি খান না। আমিও তো পড়তে পছন্দ করি না। তবে আমিও পড়ব না।’ গৃহশিক্ষক গীতালি চক্রবত্তীকে এ কথা বলেই হাতের কাঠ পেন্সিলটা টেবিলের ওপর রেখে বই বন্ধ করে দিয়েছিল রাসেল।

এখনও এসব কথা মাঝেমধ্যেই মনে পড়ে গীতালী চক্রবর্ত্তী দাসগুপ্তার। পঁচাত্তরের ১৪ আগস্ট পর্যন্ত ছিল শেখ রাসেলের শিক্ষাজীবন। এদিনও রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত তাকে পড়িয়েছেন তিনি। সে রাতে রাসেলকে পড়িয়ে বিদায় নেওয়ার সময় তিনি ঘুণাক্ষরেও চিন্তা করতে পারেননি যে, আর কোনো দিন রাসেলকে তার পড়াতে হবে না; আর কোনোদিন তাকে তিনি দেখতে পাবেন না।

এদিন সন্ধ্যার আগে গীতালী বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে গিয়ে দেখেছিলেন, রাসেল বাসায় নেই। বেড়াতে গেছেন মায়ের সঙ্গে। বসে বসে একটা সময় তিনি চিন্তা করেন যে, চলে যাবেন। এমন সময় বঙ্গবন্ধু ফোন করে রাসেলের ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে গীতালীকে উচ্চস্বরে জানান, ‘মাস্টার তোমার ছুটি নাই, তোমার ছাত্র আসতেছে।’

রাসেলকে গীতালী চক্রবর্ত্তী পড়িয়েছেন ১৯৭২-এর আগস্ট থেকে ১৯৭৫-এর ১৪ আগস্ট পর্যন্ত। ওই সময় তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগের ছাত্রী ছিলেন। দেশের বিভিন্ন কলেজে অধ্যাপনার পর অবসরে গেছেন ২০০৫ সালে। বর্তমানে তিনি পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে বসবাস করলেও সম্প্রতি সংক্ষিপ্ত সফরে বাংলাদেশে এসেছেন। 

এর আগে বাংলাদেশের বিভিন্ন কলেজে অধ্যাপনা করে ২০০৫ সালে অবসরে যান। তিনি বর্তমানে সংক্ষিপ্ত সফরে বাংলাদেশে অবস্থান করছেন। 

রাসেলের সঙ্গে গৃহশিক্ষক গীতালীর সর্ম্পক ছিল বিচিত্র সুরে বাঁধা। রাসেলকে তিনি আদর করে ‘বুঁচু’ বলে ডাকতেন। রাসেল তাকে সম্বোধন করতেন আপা, আপু এবং শেষ দিকে আপুমণি বলে।

রাসেল ছিল প্রতিবাদী

গীতালী বলেন, বয়সে অনেক ছোট হলে কি হবে, শেখ রাসেলের হৃদয় ছিল অনেক বড় ও উদার। বিশেষকরে সাধারণ মানুষের প্রতি ছিল তার প্রগাঢ় ভালোবাসা। গীতালী জানান, ৩২ নম্বরের পাশের বাড়িতে রাসেল নামে আরও একটি শিশু ছিল। তারা দুজন প্রায়ই একসঙ্গে খেলাধুলা করত। তখন শীতের দিন। এক বুড়ি পাশের বাসায় এসেছিলেন ভিক্ষা করতে। সেই বাসার লোকজন তাকে বলে, বাসায় একটা কাজ করে দিলে এক টাকা দেওয়া হবে। বুড়িটি তাতে রাজি হয়ে কাজটি করে দেন। কিন্তু তাকে দেওয়া হয় মাত্র ২৫ পয়সা। এতে তিনি কান্নাকাটি করতে থাকেন। ঘটনাটি রাসেলকে ভীষণভাবে আলোড়িত করে। তিনি সেই বৃদ্ধার কান্নাকাটির কারণ জানতে পেরে নিজের বাসায় নিয়ে আসেন। বৃদ্ধাকে তিনি বলেন, ‘আব্বা (বঙ্গবন্ধু) আসলে কথা বলিয়ে দিব। তিনি বিচার করে দেবেন।’

গীতালী বলেন, সেদিন দুপুরে রাসেল খাবার খেতে দেয় বুড়িমাকে। এদিকে শীতে বুড়িমার জবুথবু অবস্থা। তিনি চাইছিলেন চলে যেতে। কিন্তু রাসেলের এক কথা, ‘আব্বা আসলে বিচার হবে। তারপর বুড়িমা যাবেন।’ পরে রাসেলকে বলা হয়, বুড়িকে যদি রাতের খাবার এবং আরও বেশি টাকা দেওয়া হয়, তাহলে ছেড়ে দেওয়া যাবে কি না। সম্ভবত ‘বেশি টাকা দেওয়ার প্রস্তাবের কারণে শেখ রাসেল রাজি হয় বুড়িকে ছেড়ে দিতে। তবে, আব্বা এলে বুড়ির পক্ষ থেকে এ অনিয়মের প্রতিকার চেয়ে বিচার চাওয়া হবে বলেও জানিয়ে রাখে সে।

বিভিন্ন সংগঠনের কর্মসূচি

শেখ রাসেলের জন্মদিন উপলক্ষে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন নানা কর্মসূচি নিয়েছে। এ উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আজ সকাল সাড়ে ৮টায় বনানী কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত শেখ রাসেলসহ ১৫ আগস্টে নিহত সকল শহীদের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ, ফাতেহা পাঠ, মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছে।

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ আওয়ামী লীগ, সহযোগী সংগঠন এবং বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এক বিবৃতিতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেলের শুভ জন্মদিন ও ‘শেখ রাসেল দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত কর্মসূচি পালন ও অংশগ্রহণের জন্য দলীয় নেতাকর্মী, সমর্থক ও সর্বস্তরের জনগণের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা