× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন

রোডম্যাপ থেকে দূরে ইসি

কাজী হাফিজ

প্রকাশ : ১৮ অক্টোবর ২০২৩ ০৮:২৫ এএম

আপডেট : ১৮ অক্টোবর ২০২৩ ১১:৩৯ এএম

রোডম্যাপ থেকে দূরে ইসি

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় যত এগিয়ে আসছে এ নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) লক্ষ্য অর্জন এবং চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার সময়ও কমে আসছে। বাস্তবতা বলছে, ঘোষিত রোডম্যাপ বাস্তবায়ন থেকে এখনও দূরে রয়েছে ইসি। দেড়শ আসনে ইভিএম, প্রতিটি ভোটকক্ষে সিসি ক্যামেরার নজরদারি- এগুলো আগেই বাদ। নিজস্ব কর্মকর্তাদের রিটার্নিং অফিসার নিয়োগ নিয়েও এখনও সিদ্ধান্তহীনতায়। ব্যালটের ভোটে অনিয়মের ঝুঁকি কমাতে ভোটের দিন সকালে ব্যালট পেপার পাঠানোর সর্বশেষ পরিকল্পনাতেও আপত্তি এসেছে। ইসির বর্তমান লক্ষ্য সংবিধান অনুসারে যথাসময়ে নির্বাচন সম্পন্ন করতে প্রস্তুতিমূলক প্রয়োজনীয় সব কাজ সম্পন্ন করা। 

অবশ্য নির্বাচন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইসি এক বছরের বেশি সময় আগে তাদের কর্মপরিকল্নায় যে লক্ষ্য, চ্যালেঞ্জ ও চ্যালেঞ্জ উত্তরণের উপায়গুলো নির্ধারণ করেছিল, তাতে মূল সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। মূল সমস্যা রাজনৈতিক। সে সমস্যা সমাধানে ইসির কিছুই করার নেই। তা ছাড়া নির্বাচন কমিশনের আইন প্রয়োগ বিষয়ে কিছু সীমাবদ্ধতাও চ্যালেঞ্জ উত্তরণের পথে বাধা হয়ে আছে। 

আর মাত্র আড়াই মাস পরেই জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হতে পারে আগামী নভেম্বর মাসের প্রথমার্ধে। কমিশন থেকে সারা দেশের নির্বাচন কার্যালয়গুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেওয়া হয়েছে। বিদ্যুৎ সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন রাখতে বলা হয়েছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খণিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়কে। নির্বাচনী কাজের সুবিধার্থে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সব শূন্য পদ পূরণের জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে এবং ভোটকেন্দ্রগুলোর অবকাঠামো সংস্কারের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে চলতি মাসেই চিঠি দিতে যাচ্ছে ইসি।

নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর সম্প্রতি বলেছেন, ‘সবকিছু ঠিকঠাক আছে। নির্বাচন নিয়ে কোনো টেনশন নেই। আমরা ফুললি কনফিডেন্ট। নির্বাচন হবে। এখন শুধু তফসিল ঘোষণা বাকি।’

জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে ইসি গত বছর ১৪ সেপ্টেম্বর পাঁচটি লক্ষ্য, ১৪টি চ্যালেঞ্জ ও চ্যালেঞ্জ উত্তরণে ১৯টি উপায় নির্ধারণ করে তাদের কর্মপরিকল্পনা বা রোডম্যাপ প্রকাশ করে। এর মধ্যে চ্যালেঞ্জ উত্তরণের উপায়গুলোর গুরুত্বপূর্ণ দুটি উপায়ের একটি ছিল ইভিএম ব্যবহার। ইভিএম ব্যবহারের পক্ষে যুক্তি দেখাতে নির্বাচন কমিশনের কর্মপরিকল্পনায় বলা হয়েছিল, ব্যালটে ভোট হলে কেন্দ্র দখল করে ইচ্ছামতো বাক্সে ব্যালট ভর্তি সম্ভব। কিন্তু আর্থিক সংকটের কারণে ইভিএম প্রকল্প সরকার অনুমোদন করেনি।

একই কারণে পুরোনো ইভিএমগুলো মেরামতেও অর্থ বরাদ্দ পাওয়া যায়নি। ইভিএম ব্যবহারে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর আস্থা অর্জনেও সক্ষম হয়নি ইসি। এ বাস্তবতায় ইসির সর্বশেষ সিদ্ধান্ত অনিয়ম রোধে ভোটের দিন সকালে কেন্দ্রে কেন্দ্রে ব্যালট পেপার পাঠানো হবে। কিন্তু তাতে পুলিশের পক্ষ থেকে আপত্তি এসেছে। 

আরেকটি উপায় ছিল ভোটকেন্দ্রগুলোর প্রতিটি ভোটকক্ষে সিসি ক্যামেরার নজরদারি। এ সম্পর্কে নির্বাচন কমিশনের সাম্প্রতিক বক্তব্য, আড়াই লাখেরও বেশি ভোটকক্ষে সিসি ক্যামেরা স্থাপন ও ব্যবস্থাপনা সম্ভব নয়। 

ইসির পাঁচ লক্ষ্য ও ১৪ চ্যালেঞ্জের বর্তমান অবস্থা 

ইসির কর্মপরিকল্পনায় যে পাঁচটি লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছিল তার প্রথমটি হচ্ছে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন। অংশগ্রহণমূলকের ব্র্যাকেটবন্দি ব্যাখ্যায় ইসি বলেছে, ‘ইচ্ছুক সকল নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের নির্বাচনে সক্রিয় অংশগ্রহণ।’ এ লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হয়নি ইসি। নির্বাচন বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বিএনপিসহ আরও কিছু দল এ নির্বাচনে অংশ না নিলেও সংবিধান অনুসারে বাকি ইচ্ছুক দলগুলোর অংশগ্রহণে নির্বাচনের ব্যবস্থা করার সিদ্ধান্ত নিয়েই রেখেছে ইসি। 

কর্মপরিকল্পনায় আরেকটি লক্ষ্য হচ্ছে ‘নির্বাচন কমিশনের অধিকসংখ্যক যোগ্য কর্মকর্তাকে রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ।’ এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘ইসি বিষয়টি নিয়ে এখনও সিদ্ধান্ত নেয়নি।’

ইসি সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, ইসির কর্মপরিকল্পনায় যেহেতু বিষয়টি রয়েছে, সে কারণে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। 

নির্বাচন কমিশনের নিজস্ব কর্মকর্তাদের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রিটার্নিং অফিসার করার দাবি দীর্ঘদিনের। ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকদের রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগের বৈধতা প্রশ্নে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। রুলে বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশনের জারি করা গেজেট কেন ‘অবৈধ, অসাংবিধানিক ও আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত’ ঘোষণা করা হবে নাÑ তা জানতে চাওয়া হয়।

একটি রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবির সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রুল জারি করেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার, জ্যেষ্ঠ আইন সচিব, জনপ্রশাসন সচিব এবং নির্বাচন কমিশন সচিবকে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়। তবে সে সময় আদালত ইসির ওই গেজেট স্থগিত করেননি। বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকরাই রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করেন। 

বিষয়টি সম্পর্কে তৎকালীন নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘আমরা নির্বাচন কমিশনার থেকে ওই রুলের জবাব দিয়েছিলাম। রুলের কার্যকারিতা এখন নেই।’ 

তিনি আরও বলেন, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের রিটার্নিং অফিসার করা হলে তাদের জন্য প্রশাসনের বড় ধরনের সহযোগিতা প্রয়োজন হয় এবং সে সহযোগিতা পাওয়া নিয়ে সমস্যা তৈরি হতে পারে। অন্যদিকে জেলা প্রশাসকরা জেলার সার্বিক বিষয় সমন্বয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত। সে কারণে জেলা প্রশাসকদের রিটার্নিং অফিসার করলে সহযোগিতা পাওয়া সংক্রান্ত সমস্যাটি কম হবে। তা ছাড়া নির্বাচন কমিশন সচিবালয়েও সরকারের প্রশাসনিক কর্মকর্তারাই সচিব, অতিরিক্ত সচিবÑ এসব গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।

নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের কর্মকর্তারাও বলছেন, নির্বাচনী জেলা প্রশাসক ও ইউএনওদের ওপর ইসির নির্ভরতা আগের তুলনায় বেড়েছে। আগে ভোটকেন্দ্র নির্ধারণের মূল দায়িত্বে ছিলেন নির্বাচন কর্মকর্তারা। এবার সে দায়িত্ব দেওয়া হয় জেলা প্রশাসকদের।

ইসির ১৪টি চ্যালেঞ্জের মধ্যে প্রথমটিই হচ্ছে ‘নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দলগুলোর সরকার ও নির্বাচন কমিশনের প্রতি আস্থা সৃষ্টি।’ এই চ্যালেঞ্জ উত্তরণে ইসির সফলতা রাজনৈতিক সমঝোতার ওপর নির্ভর করছে বলে নির্বাচন বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। শেষ চ্যালেঞ্জটি হচ্ছে- ‘নিরপেক্ষ দেশি/বিদেশি পর্যবেক্ষক নিয়োজিত করা।’ এ চ্যালেঞ্জের ক্ষেত্রে ইউরোপীয় ইউনিয়ন সম্প্রতি জানিয়ে দিয়েছে তারা পূর্ণাঙ্গ পর্যবেক্ষক দল পাঠাবে না।

গত রবিবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন সাংবাদিকদের জানান, ইউরোপীয় ইউনিয়ন চিঠি লিখে জানিয়েছে যে বাংলাদেশ খরচ বহন করলে তারা ছোট একটি নির্বাচন পর্যবেক্ষক দল পাঠাবে। নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর গত ১৫ অক্টোবর বিদেশি পর্যবেক্ষক সম্পর্কে বলেছেন, ‘আমরা সার্কভুক্ত দেশগুলোর নির্বাচন কমিশনের ফোরাম ফেমবোসার ৩০ থেকে ৩৫ জনকে দাওয়াত দেব। তাদের সব ব্যয় আমরা বহন করব। এ ছাড়া নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যে স্থানীয় ৬৭টি বেসরকারি সংস্থাকে নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থা হিসেবে নিবন্ধন দিয়েছে। দিতে যাচ্ছে আরও প্রায় ৫০টি সংস্থাকে। তবে এসব স্থানীয় পর্যবেক্ষক সংস্থার সক্ষমতা ও গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। 

ইসির কর্মপরিকল্নায় চ্যালেঞ্জ উত্তরণের জন্য যে ১৯টি উপায়ের কথা বলা আছে তার প্রথমটিই হচ্ছেÑ বিশিষ্ট নাগরিক ও রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে মতবিনিময় সভায় সংবিধান ও নির্বাচনী আইন অনুসারে যে সুপারিশগুলো অধিকাংশজন করেছেন তা বাস্তবায়ন। কিন্তু গত বছর নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সংলাপে যেসব দল অংশ নেয় সেগুলোর অনেকেরই প্রস্তাব ছিল নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ারের বাইরে। এসব প্রস্তাব বাস্তবায়নে কিছুই করার নেই বলে কমিশন জানিয়ে দেয়। চ্যালেঞ্জ উত্তরণের তিন নম্বর উপায় সম্পর্কে বলা আছেÑ ‘সরকারের কোনো সংস্থা সম্পর্কে হয়রানিমূলক মামলা না করা।’ এ বিষয়ে সিইসি সম্প্রতি বলেছেন, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর যেন কাউকে গ্রেপ্তার করা না হয়। আর নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেছেন, ‘কারও বিরুদ্ধে যদি কোনো গ্রেপ্তারযোগ্য অভিযোগ থাকে, আদালতের নির্দেশে গ্রেপ্তার করতে পারবে।’ 

১৮ নম্বর উপায়ে বলা আছে, ‘নিরপেক্ষ দায়িত্ব পালনে অনীহা, পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে নির্বাচন কর্মকর্তা (বিশেষ বিধান) আইন-১৯৯১ অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা।’ এ আইন প্রয়োগে নির্বাচন কমিশন গত বছর গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচনে সফল হয়নি বলেই অনেকে মনে করেন। সাবেক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম এ বিষয়ে বলেন, এ আইন প্রয়োগ করে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার শাস্তি নিশ্চিত করার বিষয়টি দ্রুত সম্ভব হয় না। জাতীয় সংসদের সাধারণ নির্বাচনে এ ধরনের ব্যবস্থা কার্যকর করতে গেলে নির্বাচনপরবর্তী নতুন সরকার গঠন সম্পন্ন হয়ে যাবে। এ ছাড়া আরও কিছু কঠোর নির্বাচনী আইন রয়েছে, যা নির্বাচন কমিশনের পক্ষে প্রয়োগ সহজসাধ্য নয়। 

সার্বিক এই পরিস্থিতি সম্পর্কে নির্বাচন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. তোফায়েল আহমেদ বলেন, দেশে একটি অংশগ্রহণমূলক, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের মূল সমস্যাটি হচ্ছে রাজনৈতিক। ইসি তাদের কর্মপরিকল্নায় যে লক্ষ্য, চ্যালেঞ্জ ও চ্যালেঞ্জ উত্তরণের উপায়গুলো নির্ধারণ করেছিল, তাতে মূল সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। রাজনৈতিক সমস্যা সমাধানে ইসির কিছুই করার নেই।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা