× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে

বড় কোনো প্রভাব ফেলতে পারছে না উড়ালসড়ক

রাশেদুল হাসান

প্রকাশ : ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১১:৩০ এএম

আপডেট : ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৫:২৮ পিএম

এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। ছবি : প্রবা

এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। ছবি : প্রবা

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বিমানবন্দর থেকে কুতুবখালী পর্যন্ত ১৯ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের বিমানবন্দর-ফার্মগেট অংশের মোট ১১ দশমিক ৫ কিলোমিটার সম্প্রতি যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। এরপর এই উড়ালসড়কে নয় দিন ধরে পরিবহন চলাচলের তথ্য বিশ্লেষণ করে গণপরিবহন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যাত্রী ও পণ্য পরিবহনে এটি বড় কোনো প্রভাব ফেলতে পারছে না। নতুন এ উড়ালসড়কের কারণে কিছু জায়গায় যানজট কমলেও কিছু স্থানে নতুন করে চাপ তৈরি হয়েছে। বিমানবন্দরে র‌্যাম্প থেকে যান নেমে বিআরটিতে ওঠার সময়ও যানজট তৈরি হচ্ছে।

অবশ্য বিশেষজ্ঞরা প্রত্যাশা করছেন, পুরো উড়ালসড়কের নির্মাণকাজ শেষ হলে এবং এটি ঢাকা-আশুলিয়া এক্সপ্রেসওয়ের সঙ্গে যুক্ত হলে ইতিবাচক পরিবর্তন দৃশ্যমান হবে।

প্রসঙ্গত, বিমানবন্দর-ফার্মগেট অংশের উড়ালসড়ক খুলে দেওয়ার পর গত ৩ সেপ্টেম্বর সকাল ৬টা থেকে ১২ সেপ্টেম্বর সকাল ৬টা পর্যন্ত নয় দিনে মাত্র ২ লাখ ৫৩ হাজার ২৬৬টি যানবাহন চলাচল করেছে। অর্থাৎ এখান দিয়ে প্রতিদিন ২৮ হাজার ১৪০টি এবং ঘণ্টায় গড়ে ১ হাজার ১৭২টি যানবাহন চলাচল করেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গণপরিবহন ও পণ্যবাহী পরিবহন এ সড়কটি ব্যবহার না করায় ইতিবাচক প্রভাব সৃষ্টি হচ্ছে না। দেখা যাচ্ছে, এক্সপ্রেসওয়েতে সারা দিনে যতগুলো গাড়ি চলাচল করছে, নিচের সড়কে দুই ঘণ্টায় তার চেয়ে বেশি গাড়ি চলাচল করছে।

যান চলাচলের তথ্যচিত্র 

ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রকল্প পরিচালক এ এইচ এম এস আকতার জানান, চালুর পর এ দ্রুতগতির উড়ালসড়কে ক্যাটাগরি-১ ভুক্ত যানবাহন ব্যক্তিগত গাড়ি, ট্যাক্সি, জিপ, স্পোর্টস ইউটিলিটি ভেহিক্যাল, মাইক্রোবাস (১৬ সিটের কম) ও হালকা ট্রাকই (৩ টনের কম) চলাচল করেছে সবচেয়ে বেশি। এসব পরিবহনকে টোল দিতে হয় ৮০ টাকা। এদের মোট সংখ্যা ২ লাখ ৫১ হাজার ৬০৬টি। উড়ালসড়কে চলাচলকারী মোট যানবাহনের ৯৯ দশমিক ৩৪ শতাংশই এ ক্যাটাগরিভুক্ত। 

ক্যাটাগরি মাঝারি ট্রাককে (৬ চাকা পর্যন্ত) টোল দিতে হচ্ছে ৩২০ টাকা। এ ধরনের ট্রাক চলাচল করেছে ৬০৭টি। ছয়ের বেশি চাকাওয়ালা ট্রাকের টোল ৪০০ টাকা। এ ধরনের ট্রাক চলাচল করেছে ২৭টি। আর ক্যাটাগরি-৪ ভুক্ত যানবাহন অর্থাৎ সব ধরনের বাস চলাচল করেছে মাত্র ১ হাজার ২৬টি। বাসকে টোল দিতে হচ্ছে ১৬০ টাকা। এই নয় দিনে মোট টোল আদায় হয়েছে ১ কোটি ৮১ লাখ ২১ হাজার ৮৪০ টাকা।

বিআরটিএর তথ্যমতে, এ বছরের আগস্ট পর্যন্ত ঢাকায় ২০ লাখ ৪২ হাজার ৭৭১টি নিবন্ধিত যানবাহন রয়েছে। এ ছাড়া বাইরের যানবাহনও ঢাকায় প্রবেশ করে, যেগুলোর উল্লেখযোগ্য একটি অংশ চলাচল করে বিমানবন্দর সড়ক দিয়ে।

যানজট এখন মহাখালী ও সাতরাস্তা এলাকায়

উত্তরার বাসিন্দা ইয়াসিন রানা। তিনি নিজের মোটরসাইকেলে প্রতিদিন উত্তরা থেকে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে যান অফিস করতে। তিনি জানালেন, ‘বনানীর আর্মি স্টেডিয়াম এলাকা থেকে একেবারে কাকলী পর্যন্ত আগে যানজট থাকত। কিন্তু এক্সপ্রেসওয়ে চালুর পর সেটা আর পাচ্ছি না। কিন্তু মুশকিল হলো, নতুন করে সেতু ভবন থেকে মহাখালী রেলগেট, বাস টার্মিনাল ও সাতরাস্তা এলাকায় যানজট দেখা দিচ্ছে।’

ইয়াসিন রানা বলেন, এটি চালু হওয়ার আরেকটি অসুবিধা হলো, এ এক্সপ্রেসওয়ের যে র‌্যাম্পটি বিমানবন্দর থার্ড টার্মিনালের কাছে নেমেছে, সেখান থেকেই আবার বাস র‌্যাপিড ট্রানজিটের (বিআরটি) উড়ালসড়কের শুরু। ফলে গাজীপুরগামী যাত্রীদের বাম থেকে নেমে ডান দিকে মোড় নিতে হচ্ছে। আর মোড় নিতে গিয়ে যানজট দেখা দিচ্ছে। উত্তরা থেকে আসার সময় উত্তরার যানজট অনেক সময় বিমানবন্দরের উল্টা পাশের এক্সপ্রেসওয়েতে ওঠার র‌্যাম্প পর্যন্ত চলে আসছে।

ফার্মগেটের বাসিন্দা মওদুদ আহম্মেদ মনে করছেন, এই উড়ালসড়কের র‌্যাম্প এ এলাকার ওপর বাড়তি চাপ তৈরি করেছে। তিনি বলেন, আগে যেসব গাড়ি সাতরাস্তা ব্যবহার করত তারাও এখন মহাখালীর জ্যাম এড়াতে ফার্মগেট হয়ে গন্তব্যে যেতে চাইছে। সকালে এমনিতেই ফার্মগেট ও কারওয়ান বাজার এলাকায় কম-বেশি যানজট থাকে। এসব এলাকায় স্কুল, কলেজ, কোচিং সেন্টার ও বাণিজ্যিক কার্যক্রম আগের তুলনায় অনেক বেশি। এখানে এখন ওপর থেকে দ্রুতগতিতে গাড়ি এসে যানজট আরও বাড়াচ্ছে। 

বিশেষজ্ঞ অভিমত

এ বিষয়ে গণপরিবহন ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্ঘটনা গবেষণা কেন্দ্রের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক শামসুল হক বলেন, ‘আসলে এই আংশিক অংশ উদ্বোধন করে পুরো সুফল পাওয়ার কথা চিন্তা করা যায় না। এর সুফল তখনই আসবে যখন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের এই উড়ালসড়ক ঢাকা-আশুলিয়া ‍উড়াল মহাসড়কে যুক্ত হবে। এখন ২৭টি ট্রাক ওঠে। তখন আর সব ট্রাকও এ উড়ালসড়ক দিয়ে চলাচল করতে পারবে। অর্থনীতিতে গতি আসবে। এখন কত গাড়ি চলল, তা দিয়ে এর প্রভাব বিচার করা অন্যায্য হবে।’ 

তিনি মনে করেন, দ্রুতগতির এ সড়কে প্রাইভেট কার অনেক বেশি চলাচল করায় দিনের ব্যস্ত সময়ে ফার্মগেট এলাকায় যানজট দেখা দিতে পারে। 

তিনি আরও বলেন, ‘বাসগুলো এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহার করছে না- কারণ সারা রাস্তায় যাত্রী ওঠাতে হয়, নামাতে হয়। তবে কিছু স্টাফ বাস এখানে উঠতে পারে। তা ছাড়া এলিভেটেডের নিচের অংশে সঠিকভাবে কিছু গাড়ি ওঠা-নামার ব্যবস্থাপনা করা গেলে ঢাকার বাইরের দূরপাল্লার বেশকিছু বাসও এখানে তোলা যেত।’


শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা