× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

কী পেল বাংলাদেশ

প্রবা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১০:০৬ এএম

আপডেট : ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১০:৪৬ এএম

জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে বিশ্বনেতাদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি : পিএমও

জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে বিশ্বনেতাদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি : পিএমও

ভারতে অনুষ্ঠিত জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে অংশগ্রহণ শেষে গতকাল রবিবার বিকালে দেশে ফিরেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ভারতের আমন্ত্রণে এই সম্মেলনে অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথমদিনে দুটি অধিবেশনে বক্তব্য দেন। প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে বাংলাদেশকে গ্লোবাল সাউথের বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর হিসেবে তুলে ধরেন। একই সঙ্গে বৈশ্বিক সমস্যা সমাধানে বিশ্বের সংহতি শক্তিশালী করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। পাশাপাশি বৈশ্বিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে উদ্যোগ গ্রহণের জন্য বিশ্বনেতাদের প্রতি আহ্বান জানান।

জি-২০ সম্মেলনে অংশ নিয়ে বাংলাদেশ কী পেল ঘুরেফিরে আসছে এমন প্রশ্ন। অনেকের মতে, এই সম্মেলনে দুই অধিবেশনে বিশ্বদরবারে নিজেকে তুলে ধরার সুযোগ পেয়েছে বাংলাদেশ। একই সঙ্গে বিশ্বনেতাদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও কুশল বিনিময়ে বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরেছেন প্রধানমন্ত্রী। এ ছাড়া সাইডলাইনে দক্ষিণ কোরিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্টের সঙ্গেও বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উপস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গেও কথা হয়েছে তার। রবিবার সকালে নাশতার টেবিলে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের সঙ্গেও আলাপ হয় শেখ হাসিনার। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া একটি ছবিতে দেখা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চেয়ারের পাশে হাঁটু গেড়ে বসে কথা বলছেন ঋষি সুনাক। 

তবে আলোচনায় রয়েছে শেখ হাসিনা-নরেন্দ্র মোদি, জো বাইডেন-নরেন্দ্র মোদির বৈঠক দুটি। সম্মেলনের আগের দিন সন্ধ্যায় ও রাতে ওই বৈঠক দুটি অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকের পরদিন জি-২০ সম্মেলনস্থলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সৌজন্য সাক্ষাৎ হয়। এ সময় তাদের মধ্যে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলাপ হয়। প্রধানমন্ত্রীর মেয়ে সায়মা ওয়াজেদও এ সময় উপস্থিত ছিলেন। বাইডেন তখন মোবাইল ফোন হাতে নিয়ে শেখ হাসিনা ও সায়মা ওয়াজেদের সঙ্গে সেলফিও তোলেন। ওই সেলফি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে চর্চা চলছে। রাজনৈতিক অঙ্গনেও চলছে আলোচনা-সমালোচনা। একই দিন রাতে ভারতের রাষ্ট্রপতির দেওয়া নৈশভোজেও জো বাইডেনের সঙ্গে আলাপ হয় শেখ হাসিনার। ছবিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে শেখ হাসিনা ও বাইডেনের মাঝখানে দেখা যায়। শেখ রেহানাকে এ সময় বাইডেনের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন শেখ হাসিনা। নৈশভোজের ফাঁকে পশ্চিমপঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও কুশল বিনিময় হয় প্রধানমন্ত্রীর। আগামী নির্বাচন নিয়ে সরকারের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের অব্যাহত চাপের মধ্যে বাইডেনের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর দুই দফার কুশল বিনিময়ের যে চিত্র দেখা গেল, তাতে অনেকের ধারণা যুক্তরাষ্ট্র হয়তো বাংলাদেশের ব্যাপারে আগের অবস্থান থেকে সরে আসবে।

কূটনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, জি-২০ সম্মেলনের আগের দিন যেভাবে পরপর দুটি বৈঠক হলো, তাতে এক ধরনের বার্তা পাওয়া যায়। অর্থাৎ ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলসহ অন্যান্য বিষয় নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের যে দূরত্ব তৈরি হয়েছে, তাতে ভারতের মধ্যস্থতার ভূমিকা স্পষ্ট হয়েছে। আবার সম্মেলনের দিন সম্মেলনস্থলে ও নৈশভোজেও বাইডেনের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর কুশল বিনিময় ও আলাপ হয়। নৈশভোজের আলাপে মোদির উপস্থিতি বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। এরপরও যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত নির্বাচন নিয়ে কী ভূমিকা নেয়, তা জানার জন্য আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে।

বাংলাদেশ ভালো করছে আমি জানি : জো বাইডেন

জি-২০ সম্মেলনের প্রথমদিনের অধিবেশনের ওপর দিল্লির সময় রাত ১১টায় ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, বাংলাদেশকে কোনো ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র চাপ দেয়নি। রাজনৈতিক বা মানবাধিকার ইস্যুতে কোনো প্রশ্ন করেনি, বরং শেখ হাসিনার নেতৃত্বের সাফল্যের বিষয়ে অবগত থাকার কথা জানিয়েছেন জো বাইডেন। 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক অনেক ভালো। তারা আমাদের সঙ্গে সম্পর্ক বাড়ানোর জন্য লোকজন পাঠান। তারা আমাদের কোনো চাপ দেন না, বরং আপনারা (গণমাধ্যম) আমাদের চাপে রাখেন। আজকের বৈঠকের মধ্য দিয়ে সমালোচকদের মুখে চুলকানি পড়ল।’

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বাইডেনের কী কথা হলোÑ জানতে চাওয়া হলে ড. মোমেন বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট খুব আন্তরিকতার সঙ্গে আলাপ করেছেন। ছবি তোলা ও কথা বলার একপর্যায়ে বাইডেন কাছাকাছি থাকা একজনের সেলফোন নিয়ে নিজেই শেখ হাসিনার সঙ্গে সেলফি তোলেন। বাইডেনকে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের উন্নয়নের বিভিন্ন দিক অবহিত করে বলেছেন, দেশের মানুষকে খাওয়ানো-পরানোর চেষ্টা করে যাচ্ছেন তিনি। বাড়িঘর দেওয়া হচ্ছে। দারিদ্র্য প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে।’

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ নিজের পরিবারের সবাইকে খুন করা হয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এখন দেশের মানুষই তার পরিবার। তাদের জন্যই তিনি কাজ করছেন। বাংলাদেশে স্থিতিশীলতা আছে বলেই উন্নয়ন সম্ভব হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট এ সময় প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, তিনি জানেন যে, বাংলাদেশ ভালো করছে।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘দুই নেতার কথার এই পর্যায়ে সায়মা ওয়াজেদ এগিয়ে এলে তাকে শেখ হাসিনা বাইডেনের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। বাইডেন সায়মা ওয়াজেদের কাছে জানতে চান, ‘আপনি কী করেন? জবাবে তিনি জানান, তিনি অটিজম নিয়ে কাজ করেন। এতে বাইডেন বেশ উৎসাহ বোধ করেন।’

যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে বায়োফুয়েল জোটে বাংলাদেশ

শনিবার নয়াদিল্লিতে জি-২০ সম্মেলনের মঞ্চে আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মপ্রকাশ করে জৈব জ্বালানির বৈশ্বিক জোট গ্লোবাল বায়োফুয়েল অ্যালায়েন্স (জিবিএ)। যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের নেতৃত্বাধীন এই জোটের সদস্য হলো বাংলাদেশও। ভারতের প্রস্তাবে এই জোটের সদস্য হওয়ার মধ্য দিয়ে প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন কোনো জোটের সদস্য হলো বাংলাদেশ। এর ফলে জিবিএ জোটের অন্যান্য দেশের পাশাপাশি বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ঘনিষ্ঠতা আরও বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।

সৌদি যুবরাজের সঙ্গে বৈঠক

জি-২০ সম্মেলনের সাইডলাইনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে দুই নেতা একসঙ্গে কাজ করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। সৌদি যুবরাজ বাংলাদেশে বিভিন্ন সৌদি বিনিয়োগের বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন। সেদেশে কর্মরত ২৮ লাখ বাংলাদেশির অবদানের কথা জানিয়ে তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। প্রধানমন্ত্রী সৌদি আরবে বিভিন্ন সংস্কার কর্মকাণ্ডের জন্য যুবরাজকে অভিনন্দন জানান। তিনি যুবরাজকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানালে তিনি সেটি গ্রহণ করেন এবং বাংলাদেশ সফরের আগ্রহ ব্যক্ত করেন।

সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠক

জি-২০ সম্মেলনের সাইডলাইনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট শেখ মোহামেদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ানের সঙ্গে সাইডলাইনে বৈঠক করেন শেখ হাসিনা। বৈঠকে বাংলাদেশে আরও বিনিয়োগ করার নিশ্চয়তা দিয়েছেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট। একই সঙ্গে বাংলাদেশের আর্থসামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নতির প্রশংসা করেন তিনি। ওই বৈঠকের প্রসঙ্গ তুলে ধরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী দুই দেশের ক্রমবর্ধমান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ব্যাপারে সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং অর্থনীতি, শ্রমবাজার সম্প্রসারণ, ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও অন্যান্য পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে আগামী দিনে আরও গভীরভাবে কাজ করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন। 

সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব আর্থসামাজিক উন্নয়নের প্রশংসা করেছেন উল্লেখ করে ড. মোমেন বলেন, সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট দুই দেশের সরকারি পর্যায়ে আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশে বিনিয়োগ নিশ্চিতকরণের বিষয়ে অভিমত ব্যক্ত করেন। প্রধানমন্ত্রী সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্টকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানালে তিনি তার দেশে নভেম্বরে অনুষ্ঠেয় কপ-২৮-পরবর্তী সুবিধাজনক সময়ে বাংলাদেশ সফরের ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেন।

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠক

বাংলাদেশের নির্ভরযোগ্য অংশীদার হচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়া। জি-২০ সম্মেলনের সাইডলাইনে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইয়ুন সুক ইয়েওলের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দুই দেশের মধ্যে সংস্কৃতি, ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধির বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেন দুই নেতা। ওই বৈঠক প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট অর্থনীতি, সংস্কৃতি, ভবিষ্যৎ বিনিয়োগ ও দুই দেশের জনগণের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধিতে একসঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় এবং হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উন্নয়নে দক্ষিণ কোরিয়ার সহায়তার প্রশংসা করেন। এ ছাড়া বাংলাদেশের পানিসম্পদ উন্নয়নে সহায়তার ব্যাপারে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টকে অনুরোধ জানান।

আর্জেন্টাইনদের মন জয় করেছে বাংলাদেশিরা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জি-২০ সম্মেলনের সাইডলাইনে আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট আলবার্তো ফার্নান্দেজের সঙ্গে বৈঠক করেন। ওই বৈঠকের বিষয়ে ড. মোমেন বলেন, আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট ড. আলবার্তো ফার্নান্দেজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জানান, আর্জেন্টাইন ফুটবল দলের প্রতি বাংলাদেশের মানুষের অভাবনীয় ভালোবাসা তাদের জনগণের মন জয় করেছে। এ সময় বাংলাদেশে দূতাবাস খোলার জন্য আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্টকে ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী। খেলাধুলা, বাণিজ্য ও কৃষিসহ অন্যান্য বিষয়ে দুই দেশের সম্পর্ক আরও বৃদ্ধি পাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন শেখ হাসিনা।

যা বললেন বিশ্লেষকরা

সাবেক রাষ্ট্রদূত ও কূটনৈতিক বিশ্লেষক এম হুমায়ুন কবীর প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, জি-২০ সম্মেলনের মঞ্চকে কাজে লাগিয়ে সরকার বিশ্বদরবারে বাংলাদেশকে তুলে ধরতে পেরেছে। এটি একটি বড় পাওয়া। সম্মেলনস্থলে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বিশ্বের বড় বড় নেতাদের কুশল বিনিময় ও আলাপ হয়েছে। এছাড়া উন্নয়নসহযোগী কয়েকটি দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হয়েছে। আর সবচেয়ে বড় বিষয় হলোÑ যুক্তরাষ্ট্রের অব্যাহত চাপের পর সেদেশের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর দুই দফায় কুশল বিনিময় ও আলাপ। আগের দিন শেখ হাসিনা- নরেন্দ্র মোদি এবং জো বাইডেন-নরেন্দ্র মোদির বৈঠকের পর নৈশভোজে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উপস্থিতিতে শেখ হাসিনা ও বাইডেনের মধ্যে আলাপচারিতা অনেকাংশে তাৎপর্যপূর্ণ। আগামী নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে যে চাপে রেখেছে, সেই অবস্থানের বদল হয় কি না তা এখন দেখতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রের নীতির পরিবর্তন হলে বুঝতে হবে ভারত এখানে মধ্যস্থতার ভূমিকা পালন করেছে। তবে সেজন্য অপেক্ষা করতে হবে বলে মনে করেন তিনি।  

তবে দিল্লিতে ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ বাংলাদেশের জন্য একটি অবিস্মরণীয় দিন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথমবারের মতো জি-২০-এর মতো একটি মর্যাদাপূর্ণ আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে অংশগ্রহণ করেছেন। জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে আগত যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, সৌদি ক্রাউন প্রিন্স ও প্রধানমন্ত্রী মোহম্মদ বিন সালমান বিন আব্দুল আজিজ, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকসহ অন্যান্য বিশ্বনেতার সাথে প্রধানমন্ত্রী কুশল বিনিময় করেন এবং একাধিক রাষ্ট্রপ্রধানের সাথে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে মিলিত হন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সকালে জি-২০ নেতাদের উপস্থিতিতে শীর্ষ সম্মেলনের উদ্বোধন হয়। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আমন্ত্রিত নেতাদেরকে আনুষ্ঠানিকভাবে ভারত মণ্ডপমে স্বাগত জানান। এরপর সম্মেলনের অধিবেশন শুরু হয়। প্রথমদিনে এক বিশ্ব এবং এক পরিবার শিরোনামে মোট দুটি অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। এ দুই অধিবেশনেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বক্তব্য দেন। এই বৈঠকগুলো বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ; কেননা এর মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্য, দক্ষিণ আমেরিকা ও দূরপ্রাচ্যের মোট ৩টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বন্ধুদেশের সাথে সাম্প্রতিক বৈশ্বিক রাজনীতি ও অর্থনীতির গতিপ্রকৃতি, দুই দেশের মধ্যে জনশক্তি রপ্তানি, ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি, দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক প্ল্যাটফর্মে সহযোগিতা বৃদ্ধিসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক বিষয়গুলো আলোচিত হয়েছে বলে জানান তিনি।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা