প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৬:২৫ পিএম
আপডেট : ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৭:৫৯ পিএম
রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে দেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। প্রবা ফটো
সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট যেন সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে বা সাংবাদিকতা করতে বাধা না হয় সেদিকে খেয়াল রাখা হবে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
তিনি বলেন, ‘এক্ষেত্রে যেন একটি চেক অ্যান্ড ব্যালেন্স থাকে সেদিকে কঠোরভাবে নজর দেওয়া হবে। কারণ অনেকে সাংবাদিক সেজে অপরাধ করে থাকে, তাদের বিরুদ্ধে এই সাইবার সিকিউরিটি আইন। এটাই হচ্ছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।’
মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন বিষয়ে বিএফইউজের উপস্থাপনা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
আনিসুল হক বলেন, ‘অনেকেই সাংবাদিক সেজে অপরাধ করে। কিন্তু প্রকৃত সাংবাদিক এবং সাংবাদিক সেজে অপরাধ করাটা এক নয়। এর মধ্যে একটা বড় পার্থক্য আছে। সেই পার্থক্যটা যেন আমরা সবাই বুঝি, সেই অনুরোধ থাকবে। সাংবাদিক সমাজের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে যেন এ আইনটা (সাইবার সিকিউরিটি এক্ট) ভালোভাবে পরিচালনা করা যায়, সেটাই আমাদের লক্ষ্য।’
গত ২৮ আগস্ট অজামিনযোগ্য চারটি ধারা রেখে প্রস্তাবিত সাইবার নিরাপত্তা আইনের খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে সরকারের মন্ত্রিসভা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে তার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়।নতুন এই আইন নিয়ে শুরু হয়েছে সমালোচনা। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংস্থা বলছে, সাইবার নিরাপত্তা আইন সরকারের ক্ষমতায় থাকার নতুন মোড়ক। পার্থক্য শুধু ‘ডিজিটাল’ বদলে ‘সাইবার’ হয়েছে।
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে এ বিলটা (সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট) সংসদে উপস্থাপন করা হবে। এরপর এটা সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হবে। সেখানে হয়তো ৪-৫ দিন সময়ের জন্য থাকবে। আমি গতকালও আইসিটি প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। সেখানে আপনাদেরও যাতে আমন্ত্রণ জানানো হয়, সে ব্যাপারে বলেছি। তিনি আমাকে মৌখিকভাবে আশ্বস্ত করেছেন যে সেখানে আপনাদের আমন্ত্রণ জানানো হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘মিথ্যা মামলা করলে বাদীকে যে উল্টো সাজা দেওয়ার ব্যাপারটা, সেটা নিয়েও কাজ করছি আমরা। এটার জন্য যা করা দরকার, তা নিয়ে আজকেই কথা শেষ করে ফেলব। এটা আমি আপনাদের (সাংবাদিক) আশ্বস্ত করে গেলাম।’
মামলা হলে তা একটা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেষ হওয়া উচিত বলেও মনে করেন আইনমন্ত্রী। বলেন, সাংবাদিকদের এ দাবির সঙ্গে আমিও একমত। এটির জন্য সাইবার ট্রাইবুনাল আছে, সেখানে আমরা নিয়মতান্ত্রিকভাবে ব্যবস্থা নেব। আইসিটি অ্যাক্টের মধ্যে এ বিষয়টা আছে যে মামলাটা কতদিনের মধ্যে শেষ করতে হবে। তারপরও সেটা যদি না থাকে, তাহলে এটা সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্টের ৬২ ধারা থেকে এ বিষয়ে বলা আছে। সেখানে কোনো একটা জায়গায় এটা যুক্ত করা হবে। মামলা যেন তাড়াতাড়ি শেষ হয় এবং এ আইনে কেউ যেন হয়রানির শিকার না হন।’
অনুষ্ঠানে বিএফইউজের মহাসচিব দ্বীপ আজাদের সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রীর সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, বিএফইউজের সাবেক মহাসচিব আব্দুল জলিল ভূঁইয়া, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ, বর্তমান সভাপতি সোহেল হায়দার চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসেন প্রমুখ।
আলোচনা সভার শুরুতে সাইবার নিরাপত্তা আইন বিষয়ের সাংবাদিক সমাজের পক্ষে বিএফইউজের পর্যবেক্ষণ ও সুপারিশ আইনমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মনজুরুল আহসান বুলবুল। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএফইউজের সভাপতি ওমর ফারুক।