প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৫ আগস্ট ২০২৩ ১৯:৪৫ পিএম
আপডেট : ০৫ আগস্ট ২০২৩ ২০:০৪ পিএম
বই নকল করে পিডিএফ বানিয়ে ইন্টারনেট ছড়িয়ে দেওয়া বন্ধের ঘোষণা দিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।
তিনি বলেন, প্রকাশক অর্থ ব্যয় করে বই প্রকাশ করেন, সেই বইয়ের পিডিএফ ফাইল বানিয়ে ইন্টারনেটে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। ইন্টারনেট থেকে বইটা ডাউনলোড করে বিনা পয়সায় নিয়ে যাচ্ছে মানুষ। আমি প্রকাশকদের অনুরোধ করব, আপনারা যদি এমন লিংক দেখেন তাহলে জানাবেন এইটা বন্ধ করে দেওয়ার দায়িত্ব আমার। বই নকল করে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দিলে এইটা তালা মারার ক্ষমতাটা আমার আছে, তালাটা আমি দিয়ে দেব এটা নিশ্চিত থাকেন। বাড়ি গাড়ি যেমন সম্পদ তেমনি মেধা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সম্পদ। আমাদের দেশে আইন আছে কিন্তু প্রয়োগ নেই, আইনের প্রয়োগের দায়িত্বটা আমি নিচ্ছি।
শনিবার (৫ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির ৪২তম বার্ষিক সভায় এ তিনি এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে ‘বাপুস: স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে দৃঢ়প্রত্যয়ী’শীর্ষক লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সহ-সভাপতি শ্যামল পাল। অনুষ্ঠানে বাপুসের একটি ওয়েবসাইট উদ্বোধন করেন মন্ত্রী।
মোস্তাফা জব্বার বলেন, পেটের ক্ষুদা নিয়ে অন্য পেশায় যুক্ত না হয়ে আপনারা বইয়ের পেশায় যুক্ত থেকেছেন। মানসিক শক্তি না থাকলে এটা করতে পারতেন না। বহু প্রকাশক আছেন যারা সব খরচের পর একজন দিনমজুরের সমান আয় করতে পারেন না।
তিনি বলেন, এটি কেবলমাত্র ব্যবসা নয়। এটি অন্তরের সঙ্গে যুক্ত এবং এ পেশায় আত্মার সঙ্গে সর্ম্পক না থাকলে কেউ বইয়ের ব্যবসা করে না। এখানে যারা আছেন তাদের এই ব্যবসার প্রতি আলাদা ভালোবাসা আছে। তা না হলে অন্যকোনো ব্যবসা করতে পারতেন। পান দোকানদারি কিংবা চা বিক্রি করলেও এর চেয়ে অনেক ভালো অবস্থায় থাকা যেতে পারে। তাই আমি মনে করি, এখানে যারা যুক্ত আছেন তারা আসাধারণ কাজ করছেন। তাই এ পেশায় থাকাও এক ধরনের গর্বের।
প্রকাশনার ব্যয় বাড়ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রকাশনার ব্যয় বাড়ছে এবং কাগজের দামও বাড়ছে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলে আপনাদের এই শিল্পকে শক্তিশালী একটি ইন্ডাস্ট্রিতে রূপান্তরিত করতে হবে।
বাপুসের সভাপতি মো. আরিফ হোসেন ছোটনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন সমিতির সহ-সভাপতি কায়সার-ই-আলম প্রধান, শ্যামল পাল, মির্জা আলী আশরাফ কাশেম, ওয়াহিদুজ্জামান সরকার জামাল, মাজহারুল ইসলাম, সাবেক সভাপতি আলমগীর সিকদার লোটন ও উপদেষ্টা ওসমান গনি।
লিখিত বক্তব্যে শ্যামল পাল বলেন, স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে শরিক হতে বাপুস-এর যে অঙ্গীকার, তা বাস্তবায়ন করতে হলে চলতি প্রতিযোগিতামূলক সমাজে প্রধান দুই চালিকাশক্তি হিসেবে প্রকাশক এবং বিক্রেতাদের টিকে থাকার কোনো বিকল্প নেই। কেননা এই টিকে থাকার ওপরই নির্ভর করে পাঠ্য, পাঠসহায়ক, সৃজনশীল এবং মননশীল বইয়ের প্রকাশনা এবং তার বিকিকিনির বাজারব্যবস্থাকে কার্যকরভাবে সচল রাখা। এক্ষেত্রে প্রয়োজনে সমস্যাগ্রস্ত প্রকাশক ও বিক্রেতাদের বাপুস-এর সদস্যকল্যাণ তহবিল থেকে আর্থিক সহযোগিতার পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে। যা মূলত প্রত্যক্ষ প্রভাবক হিসেবে লক্ষ্যস্থিত শিক্ষার্থী এবং পাঠকদের উপকৃত করবে।
বার্ষিক সাধারণ সভায় বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির পরিচালকগণ, দেশের ৬৪ জেলা ও উপজেলা শাখাসমূহের নেতৃবৃন্দ ও বিপুল সংখ্যক পুস্তক ব্যবসায়ী উপস্থিত ছিলেন।