প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৪ জুলাই ২০২৩ ১২:৫১ পিএম
আপডেট : ২৪ জুলাই ২০২৩ ১২:৫৭ পিএম
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, ‘পানির নিজস্ব শরীর আছে, উপাদান আছে। সেই শরীর ও উপাদন নষ্ট হলে মাছ উৎপাদনেও ক্ষতি হবে। এক্ষেত্রে কোনোভাবেই পানির উপাদান নষ্ট করা যাবে না। কেননা আমাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে দেশের মানুষের চাহিদা পূরণ করে বিদেশে মাছ রপ্তানি করা।’ এ সময় মন্ত্রী জানান, দেশে দৈনিক মাথাপিছু মাছ গ্রহণের হার ৬০ গ্রাম থেকে বেড়ে ৬৭ দশমিক ৮০ গ্রাম হয়েছে।
সোমবার (২৪ জুলাই) সকাল ৮টায় রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউয়ে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ-২০২৩ উপলক্ষে র্যালি শুরুর আগে বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
এ সময় মৎস্য ও ও প্রাণিসম্পদ সচিব ড. নাহিদ রশীদ, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মাহবুবুল হক, মৎস্য ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ইয়াহিয়া মাহমুদ, ডিপসি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আসগর নস্কর প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। পরে র্যালিটি জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ গেট থেকে বঙ্গবন্ধু চত্বর হয়ে আবার দক্ষিণ গেটে এসে শেষ হয়। মৎস্য সপ্তাহের এবারের প্রতিপাদ্য ‘নিরাপদ মাছে ভরবো দেশ, গড়বো স্মার্ট বাংলাদেশ’।
মন্ত্রী বলেন, ‘এবারের মৎস্য সপ্তাহের উদ্দেশ্য হচ্ছে আমরা গুণগত মৎস্য উৎপাদন করব। কোনোভাবে সেখানে ভেজাল মেশানো যাবে না। মৎস্যজীবী ও এ খাতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা সরকারি নিয়ম-নীতি লঙ্ঘন না করে কাজ করবে।’
রেজাউল করিম বলেন, ‘মাছ উৎপাদন ও ব্যবস্থাপনায় অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সমন্বয়ে নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত মাছ উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে দেশের মানুষের খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত একটি প্রযুক্তিনির্ভর, অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ ও উন্নত স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের মৎস্যখাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।’
দেশে মাথাপিছু মাছ গ্রহণের হার বেড়েছে জানিয়ে জানিয়ে প্রাণিসম্পদমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে ২০২১-২২ অর্থবছরে ৪৭ দশমিক ৫৯ লাখ টন মাছ উৎপাদন হয়েছে, যা ২০২০-২১ অর্থবছরের চেয়ে ৫৫ শতাংশ বেশি। এ সময় মাছ উৎপাদিত হয়েছিল ৩০ দশমিক ৬২ লাখ টন। মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি পাওয়ায় মাথাপিছু মাছ গ্রহণের হার ৬০ গ্রাম থেকে বেড়ে ৬৭ দশমিক ৮০ গ্রাম হয়েছে।’
এদিকে সকাল সাড়ে ১০টায় জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উপলক্ষে রাজধানীর মৎস্য ভবনে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এ সময় মন্ত্রী বলেন, ‘স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে স্মার্ট ফিশারিজ গড়ে তোলা হবে। ২০৪১ সালে মৎস্য উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৮৫ লাখ টন। সমুদ্রে মাছ ধরা ট্রলার মনিটরিং করতে প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে।’
২০২২-২৩ অর্থবছরে মৎস্য ও মৎস্যজাতীয় পণ্য রপ্তানি করে চার হাজার ৭৯০ লাখ ৩০ হাজার টাকা আয় করা হয়েছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘মৎস্যখাতে এক কোটি মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে। ফিশারিজ সেক্টরকে অনুসরণ করে বিশ্বের অনেক দেশ এগিয়ে গেছে। আমরাও সে পথে যাব।’
তিনি বলেন, ‘তিনটি আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ল্যাব তৈরি করা হয়েছে। এসব ল্যাবে মাছের খাবার নিরাপদ কিনা তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সার্টিফিকেট দেওয়া হয়। আর যারা মাছের খাবারে ভেজাল মেশানোর কাজ করে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ভারত-বাংলাদেশ সমন্বিতভাবে বাংলাদেশের প্রান্তের নদীতে একই সময়ে যাতে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়, সে বিষয়ে কর্মসূচি নেওয়া হবে। আর ভারতসহ কয়েকটি দেশের জেলেরা টুকিটাকি মাছ ধরে নিয়ে যায়। তবে সে সংখ্যা বেশি নয়।