কামরুল হাসান জনি, ইউএই
প্রকাশ : ১৫ জুলাই ২০২৩ ১২:৫৭ পিএম
আপডেট : ১৫ জুলাই ২০২৩ ১৩:৪৩ পিএম
ফাইল ফটো
এক মাসের যাচাই-বাছাই শেষে সংযুক্ত আরব আমিরাতে পুরোদমে চালু হয়েছে প্রবাসী বাংলাদেশিদের নতুন জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) প্রদান কার্যক্রম। গত জুন মাস থেকে নির্বাচন কমিশনের দেওয়া এই পাইলট প্রজেক্টের কার্যক্রম এগিয়ে নিচ্ছে দেশটিতে থাকা দুটি বাংলাদেশ মিশন।
মিশনের তথ্যমতে, এরই মধ্যে প্রায় এক হাজার প্রবাসী এনআইডির জন্য আবেদন করেছেন। শুধু দুবাই বাংলাদেশ কনস্যুলেটে গড়ে প্রতিদিন ৫০ জন প্রবাসী নতুন জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য আবেদন করছেন। দুবাইয়ে ১৭ কর্মদিবসে ৮৩৮ জনের আবেদন জমা হয়েছে।
তবে এরই মধ্যে অভিযোগ উঠেছে, কোনো কোনো কমিউনিটি নেতা কৌশলে দেশটিতে থাকা রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশের এনআইডির আওতায় আনতে তৎপরতা চালাচ্ছেন। রোহিঙ্গারাও বাংলাদেশের নাগরিকত্ব নিতে তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন নানাভাবে। এমন অভিযোগের ভিত্তিতে অসাধু ওই মহলকে দুষছেন আবুধাবি দূতাবাসে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. আবু জাফর।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকার ১২ লাখ রোহিঙ্গাকে দেশে আশ্রয় দিয়েছে। কিন্তু তারা যেন দেশের নাগরিকত্ব না পায়, সেটি সবাইকে খেয়াল রাখতে হবে। তাদের মানবিকভাবে সহায়তা করা হয়েছে কিন্তু নাগরিকত্ব শেয়ার করা যাবে না।’
আমিরাতে থাকা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ব্যাপারে সতর্ক করে আবু জাফর আরও বলেন, ‘এখানে (আমিরাত) যারা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী রয়েছে, তারা বিভিন্নভাবে বাংলাদেশের পরিচয়পত্র ব্যবহার করার চেষ্টা করছে, পাসপোর্ট ব্যবহারের চেষ্টা করছে। আমরা অনেকভাবে দেখছি, বাংলাদেশ কমিউনিটির অনেক নেতাই বিভিন্ন সময় এ ধরনের লোকদের জন্য তদবির নিয়ে এসেছেন। যারা তদবির নিয়ে আসেন, তারা ভালোভাবেই জানেন যে এরা (রোহিঙ্গা) বাংলাদেশের নাগরিক নয়। তাই যারা জানেন ও বোঝেন, তাদের সর্তক থাকতে হবে। যারা জানেন না, তাদেরও সর্তক করে দিতে হবে।’
আমিরাতে বর্তমানে প্রায় ১২ লাখ প্রবাসী বাংলাদেশি রয়েছেন, যাদের একটি বড় অংশের নেই জাতীয় পরিচয়পত্র বা স্মার্টকার্ড। বৃহত্তর এই প্রবাসী রেমিট্যান্সযোদ্ধাদের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে নির্বাচন কমিশন প্রবাসীদের স্মার্টকার্ড দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। গত জুন মাসে দেশটির দুটি বাংলাদেশ মিশন পরীক্ষামূলক কাজ শুরু করলেও নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আহসান হাবিব খান গত ১০ জুলাই আবুধাবি এবং ১৩ জুলাই দুবাইয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে এনআইডি প্রদান কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।
আমিরাত সফরকালে আহসান হাবিব খান বলেন, ৪০টি দেশে দেশের প্রবাসীদের জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদানের পরিকল্পনা রয়েছে। আগামী এক বছরের মধ্যে অন্তত ১৫টি দেশে এই কার্যক্রম সম্পন্ন করার পরিকল্পনা রয়েছে। যেসব দেশে প্রবাসীর সংখ্যা বেশি, রেমিট্যান্সের পরিমাণ বেশি; সেসব দেশে অগ্রাধিকার থাকবে। আমিরাতের পর সৌদি আরব, কুয়েত ও মালয়েশিয়া- এভাবে পর্যায়ক্রমে জাতীয় পরিচয়পত্রের কার্যক্রম চলমান থাকবে।
অন্যদিকে লেমিনেটেড এনআইডি থাকা অনেক আমিরাত প্রবাসী ঘুরছেন তাদের তথ্য সংশোধনের জন্য। তবে সহসা তথ্য সংশোধনের সুযোগ না পেলেও লেমিনেটেড এনআইডি থাকা প্রবাসীরা চাইলে মিশনের কাছে স্মার্টকার্ডের জন্য আবেদন করতে পারবেন।