প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৬ জুন ২০২৩ ১৫:০৯ পিএম
আপডেট : ২৬ জুন ২০২৩ ১৯:৫৮ পিএম
প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল ও বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী মুফতি ফয়জুল করিম।
বরিশাল সিটি করপোরেশন (বিসিসি) নির্বাচনে হামলায় ইসলামী আন্দোলনের মেয়র প্রার্থী মুফতি মুহাম্মদ ফয়জুল করীমের আহত হওয়ার ঘটনায় সাংবাদিকদের করা এক প্রশ্নে ‘উনি কি ইন্তেকাল করেছেন’ মন্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।
১২ জুন বরিশাল সিটি নির্বাচনের সময় করা ওই মন্তব্যের ১৪ দিন পর সোমবার (২৬ জুন) সিইসি দুঃখ প্রকাশ করলেন।
সিইসির সেদিনের ওই মন্তব্যের পর বিভিন্ন মহল থেকে সমালোচনার ঝড় ওঠে।
অবশ্য দুঃখ প্রকাশ করলেও তার বক্তব্য গণমাধ্যমে বিকৃত করে উপস্থাপন করা হয়েছে বলেও অভিযোগ তোলেন তিনি।
নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জনসংযোগ পরিচালক মো. শরিফুল আলম আজ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সিইসির দুঃখ প্রকাশের বিষয়টি জানিয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ১২ জুন বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচন সম্পন্ন হওয়ার পর আনুমানিক বিকাল ৫টায় উপস্থিত সাংবাদিকদের ব্রিফ করার সময় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ দলের পক্ষে হাতপাখা প্রতীক নিয়ে মেয়র পদপ্রার্থী মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীমের ওপর হামলা ও রক্তাক্ত করার বিষয়ে সাংবাদিকদের উপর্যুপরি প্রশ্নের জবাবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার সঙ্গে গণমাধ্যমকর্মীদের কাছ থেকে বর্ণিত প্রার্থীর বর্তমান শারীরিক অবস্থাসংক্রান্ত তথ্য জানতে চেয়েছেন। ওই বিষয়টি বিকৃতভাবে ও ভুলভাবে ব্যাখ্যা করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বর্ণিত প্রার্থীকে কটাক্ষ করেছেন এবং তার মৃত্যু কামনা করেছেন মর্মে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারিত ও প্রকাশিত হয়েছে।
এমনকি এ বিষয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাও নির্বাচন কমিশনকে হেয় প্রতিপন্ন করে বিভিন্ন সভা-সমাবেশে বক্তব্য প্রদান করছেন মর্মে নির্বাচন কমিশনের নজরে এসেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়, প্রকৃত বিষয় হলো বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বর্ণিত প্রার্থীর ওপর আক্রমণ হওয়ার ঘটনা অবহিত হওয়ামাত্রই প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্য কমিশনাররা দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ও পুলিশের কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেন। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনায় বরিশাল জেলা প্রশাসন ও বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ তদন্তপূর্বক বর্ণিত বিষয়ে দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করতে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। বিষয়টি নিয়ে ১৪ জুন নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে প্রতিবেদনও পাঠানো হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয় সেখানে।
প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অপরাধে মঈনুল ইসলাম স্বপন ও জহিরুল ইসলাম রেজভীকে গ্রেপ্তার করে আদালতেও পাঠানো হয়।
ওই ঘটনায় উপর্যুক্ত ব্যক্তি ছাড়াও অন্য অজ্ঞাতনামাদের ভিডিও ফুটেজ ও সাক্ষ্যপ্রমাণের মাধ্যমে শনাক্তকরণসহ পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা অব্যাহত রয়েছে এবং উক্ত বিষয়টি নির্বাচন কমিশন সার্বক্ষণিক তদারকি করে যাচ্ছে বলেও ইসির বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল বাংলাদেশের সংবিধান ও প্রচলিত আইন অনুযায়ী স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতার সঙ্গে এবং কোনো রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর প্রতি অনুরাগ বা বিরাগভাজন না হয়ে তার ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন বলেও উল্লেখ করা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, তিনি কখনও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ দলের মেয়র পদপ্রার্থী মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীমের সুনাম ও সম্মানের হানি ঘটে এমন কোনো মন্তব্য করেননি। সিইসি বর্ণিত প্রার্থীর মৃত্যু কামনা করেছেন মর্মে প্রচারিত সংবাদ ও বক্তব্য সম্পূর্ণ অলীক, মনগড়া, অনুমাননির্ভর ও ভ্রান্ত ধারণাপ্রসূত। সে অসত্য সংবাদ ও বক্তব্য প্রচার এবং প্রকাশ করে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান ইসি ও সিইসিকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিতর্কিত ও অগ্রহণযোগ্য করার অপচেষ্টা করা হচ্ছে।
এর পরও যদি এ ঘটনায় প্রার্থী বা যে-কেউ কষ্ট পেয়ে থাকলে তার জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেন সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল।
সর্বোপরি বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন প্রত্যাশা করে, রাজনৈতিক নেতারা ও গণমাধ্যমকর্মীরা সর্বোচ্চ সতর্কতা ও দায়িত্বশীলতার সঙ্গে নির্বাচন কমিশনসংক্রান্ত যেকোনো বক্তব্য, সংবাদ প্রকাশ ও প্রচার করবেন।
পাশাপাশি এমন অনুমাননির্ভর ও ভ্রান্ত ধারণাপ্রসূত মন্তব্য ও সংবাদ প্রকাশ-প্রচারে বিরত থাকবেন বলেও অনুরোধ করা হয়।