× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

একাত্তরে কমিউনিস্টদের বিভাজনের সুযোগ নিয়েছিল জামায়াত : সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী

প্রবা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২৩ জুন ২০২৩ ১৯:৪১ পিএম

আপডেট : ২৩ জুন ২০২৩ ২১:০৪ পিএম

অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। প্রবা ফটো

অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। প্রবা ফটো

অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেছেন, একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রাক্কালে আন্দোলনের কারণে কমিউনিস্টদের মধ্যে বিভাজন তৈরি হয়। আর সেই বিভাজনের সুযোগ নিয়েছিল জামায়াতে ইসলামসহ ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলো।

তিনি বলেন, ‘১৯৭০ সালে ইয়াহিয়ার (ইয়াহিয়া খান) নির্বাচনে কমিউনিস্টরা যখন বাঙালি জাতীয়তাবাদ থেকে সরে দাঁড়ানোর স্লোগান দিয়ে অংশ নিয়েছিল, তা ছিলো মারাত্মক ভুল।’

শুক্রবার (২৩ জুন) বিকালে রাজধানীর শিশু একাডেমিতে নিজের ৮৮তম জন্মদিন উদযাপনে ‘ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান’ শীর্ষক একক বক্তৃতায় তিনি এসব বলেন। 

সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের ১১ দফা, ভাসানীর ন্যাপের ১৪ দফা বা ছয় দফা, সব আন্দোলনই জাতীয়তাবাদের দিকে ধাবিত হয়েছিল। তাতে কমিউনিস্টদের আন্দোলনের কথাও ছিল। পরে কমিউনিস্টদের মধ্যে বিভাজন তৈরি হয়। সেটার সুযোগে মওদুদী, চৌধুরী মো. আলীরা ডেমোক্রেটিক অ্যাকশন কমিটি গঠন করে ৮ দফা উত্থাপন করেন। এতে অখণ্ড পাকিস্তানের কথা বলা হয়েছিল। তখন রুশপন্থী কমিউনিস্টরাও বললেন, পাকিস্তান বিভক্ত হয়ে গেলে শ্রেণিসংগ্রাম দুর্বল হয়ে যাবে। আর তখনই কমিউনিস্টদের শত্রু ভাবা শুরু করে জামায়াতে ইসলামী। তাদের ইশতেহারেও নাস্তিক কমিউনিস্টদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপের কথা ছিল।’

ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের ঐতিহাসিক মুহূর্তে কমিউনিস্টদের বিভাজনকে বড় ব্যর্থতা বলে মনে করেন অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘ঊনসত্তরে তারা একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত হারিয়েছে। তখন জাতীয়তাবাদী আন্দোলনকে সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনে নিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল। সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ যে ১১ দফা দিয়েছিল, সেখানে সমাজতন্ত্র ও জাতীয়তাবাদকে ধারণ করে আরও সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব ছিল। তখন কমিউনিস্টরা চীনপন্থী ও রুশপন্থী ২ ধারায় ভাগ হয়ে গেলেন। তারা একে অপরকে রাষ্ট্রবিরোধী শক্তি বলে মনে করা শুরু করলেন।’

কমিউনিস্টদের ব্যর্থতার খতিয়ান তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘উভয় কমিউনিস্ট পার্টি মনে করত, সমাজে শত্রু ৩ ধরনের; সাম্রাজ্যবাদ, সামন্তবাদ ও সাম্রাজ্যবাদের পদলেহী ধনীরা। উভয়পক্ষ মনে করত, তারা ৩টি শত্রুর বিরুদ্ধে একত্রে লড়াই করবে। কিন্তু সে লড়াইয়ে তাদের জেতার কথা না। তাদের বলা উচিত ছিল, প্রধান শত্রু হচ্ছে সাম্রাজ্যবাদ। কারণ সাম্রাজ্যবাদের অভ্যন্তরে পুঁজিবাদ কাজ করে।’

সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘পাকিস্তান রাষ্ট্র একটি পুঁজিবাদী আমলাতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত হচ্ছিল। পাকিস্তান রাষ্ট্র ছিল নব্য ঔপনিবেশিক রাষ্ট্র। সে রাষ্ট্রে পুঁজিবাদ প্রতিষ্ঠার বেশ চর্চা চলছিল। সেটি কমিউনিস্ট পার্টির কোনো ধারা ধরতে পারেনি। ঔপনিবেশিকতার কথা চীনপন্থীরা বুঝতে পেরেছিল ১৯৬৭ সালে। রুশপন্থী কমিউনিস্টরা সেটা ধরতে পেরেছে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়, আগরতলা বৈঠকের পরে। ব্রিটিশদের ঔপনিবেশিক ধারা বহন করে পাকিস্তানে যেটা বিকশিত হয়েছিল, সেটা হল পুঁজিবাদী শোষণ।’

ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট উপস্থাপনায় তিনি বলেন, ‘উপমহাদেশে এ ধরনের অভ্যুত্থান খুব বেশি হয়নি। ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান এ জাতিকে সরাসরি সশস্ত্র সংগ্রামের দিকে নিয়ে গেছে। ছাত্ররা যে আন্দোলনের সূচনা করেছিল, তার চূড়ান্ত পরিণতি পেয়েছিল ৬৯-এর ২৪ ফেব্রুয়ারিতে শেখ মুজিবুর রহমান যখন মুক্তি পেলেন, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহার করা হলো। তখন ছাত্রদের সে আন্দোলন রূপ নিলে মেহনতি মানুষ তথা জনগণের অভ্যুত্থানে।’

অনুষ্ঠানে ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীকে ফুলেল শ্রদ্ধা জানায় ওয়ার্কার্স পার্টি, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, সিপিবি, বাসদ, বাসদ (মার্কসবাদী), বাসদ (মাহবুব), গণসংহতি আন্দোলন, ছাত্র ফেডারেশন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগ, জাতীয় গণমুক্তি কাউন্সিল, বাংলাদেশ লেখক শিবির, এএলআরডি, উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, বিক্রমপুর ফাউন্ডেশনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন। সভাপতিত্ব করেন বিবর্তন সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সভাপতি এ এস এম কামালউদ্দিন।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা