চার কোটি টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ
প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২১ জুন ২০২৩ ২২:১১ পিএম
আপডেট : ২১ জুন ২০২৩ ২২:২৫ পিএম
বিতর্কিত ঠিকদার জিকে শামীমের সহযোগী হিসেবে পরিচিতি গণপূর্ত অধিদপ্তরের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী ও হাউজিং অ্যান্ড বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক মো. আশরাফুল আলম ও তার স্ত্রী মিসেস সাবিনা আলমের নামে দুটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তাদের নামে চার কোটি টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন এবং কোটি টাকা মূল্যের সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগের প্রমাণ পেয়েছে সংস্থাটি।
বুধবার (২১ জুন) সংস্থাটির সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ নুর আলম সিদ্দিকী দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১-এ মামলাটি করেন। দুদকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা প্রতিদিনের বাংলাদেশকে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
একটি মামলায় মিসেস সাবিনা আলমের ও তার স্বামী গণপূর্ত অধিদপ্তরের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী মো. আশরাফুল আলমকে আসামি করা হয়। মামলার অভিযোগে বলা হয়, আসামি মিসেস সাবিনা ইয়াসমিন দুদকে দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে ৬৬ লাখ ২৬ হাজার ৪৬৫ টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের মাধ্যমে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্য প্রদান করেন। স্বামীর গণপূর্ত অধিদপ্তরে চাকরি করার সুবাদে ক্ষমতার অপব্যবহার করে অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ দ্বারা ৩ কোটি ৭৬ লাখ ২৪ হাজার ৩৩৫ টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেন।
অপর একটি মামলায় মো. আশরাফুল আলমের সঙ্গে তার স্ত্রী সাবিনা আলমকেও আসামি করা হয়। এই মামলার অভিযোগে বলা হয়, মো. আশরাফুল আলম দুদকে দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে ২৭ লাখ ৯২ হাজার ৬৩ টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের মাধ্যমে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্য প্রদান করেন এবং জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ২৩ লাখ ৭৯ হাজার ২৪৬ টাকা মূল্যের সম্পদ অর্জন করে তা দখলে রাখেন।
২০১৯ সালে গণপূর্তের প্রধান প্রকৌশলী হিসেবে নিয়োগ পান মো. আশরাফুল আলম। ‘মিস্টার পার্সেন্টেজ’ হিসেবে পরিচিত এই প্রকৌশলী দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই তার বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ আসে দুদকে। দুদক অনুসন্ধান শুরু করলে সরকারের সাবেক এই কর্মকর্তা ও তার স্ত্রীর নামে বিপুল সম্পদের খোঁজ মেলে।
জানা যায়, অভিযোগ প্রমাণের পরই দুদকের জাল থেকে রক্ষা পেতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেন আশরাফুল। ২০২১ সালে ২৪ ফেব্রুয়ারি আশরাফুল আলম ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলার সুপারিশ করে দুদক। তবে মামলা না করে তাকে ও তার স্ত্রীকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
অব্যাহতি পাওয়ার বিষয়ে ২০২১ সালের ২ মার্চ ’২০ কোটিতে প্রকৌশলী আশরাফুলের দায়মুক্তি! দুর্নীতি দমনে দুদক স্টাইল’ শিরোনামে একটি দৈনিক পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পরই ওই বছরের ২১ জুন দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রতি গণপূর্তের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী আশরাফুল আলম ও তার স্ত্রীর জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন বিষয়ে পুনঃঅনুসন্ধানের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। এ বিষয়ে স্বতঃপ্রণোদিত রুলের শুনানি শেষে বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ এ নির্দেশ দেন।
আদালত তার আদেশে বলেছেন, পুনঃঅনুসন্ধানে পূর্বের কর্মকর্তা বাদ দিয়ে নতুন করে তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ দিতে হবে। দুদকের আইনজীবী প্রতিবেদকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আবেদন জানালে সেটি আদালত নাকচ করে দেন। আদালত বলেন, এটি আদালত অবমাননার মামলা নয়। আদালত পর্যবেক্ষণে বলেন, রিপোর্ট করতে সাংবাদিকের সোর্স জানতে চাইনি।