প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২১ জুন ২০২৩ ১২:০৫ পিএম
আপডেট : ২১ জুন ২০২৩ ১৪:৪৮ পিএম
ফাইল ফটো
রবি আজিয়াটা লিমিটেডের কাছ থেকে মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাটের টাকা নিয়ে টানাপড়েনে সরকারি দুই সংস্থা। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) দ্বন্দ্ব এখন চরমে। অথচ ভ্যাটের টাকা ব্যাংক গ্যারান্টির মাধ্যমে সঠিকভাবে পরিশোধ করেছিল রবি।
সূত্র জানায়, ২০১৭ সালে রবি আজিয়াটা লিমিটেড ও এয়ারটেল বাংলাদেশ লিমিটেড একীভূত হয়। সে সময় একীভূত হওয়া ফি বাবদ বিটিআরসিকে ৪৭১ কোটি টাকার শর্তযুক্ত ব্যাংক গ্যারান্টি দিয়েছিল রবি। ২০১৭ সালে ৩০ এপ্রিল তারিখে দেওয়া ওয়ান ব্যাংকের সেই ব্যাংক পারফরম্যান্স গ্যারান্টি নম্বর ওবিএল/জিবি/বিজি/১৮৭২০১৭। ৪৭১ কোটি টাকা ব্যাংক গ্যারান্টির মধ্যে এনবিআরের প্রাপ্য ৭০ কোটি ৬৫ লাখ টাকাও অন্তর্ভুক্ত ছিল।
সূত্র আরও জানায়, ওয়ান ব্যাংকের গুলশান শাখায় বিটিআরসি ২০২০ সালের ১৩ আগস্ট, ২০ সেপ্টেম্বর ও ১১ অক্টোবর তারিখে পৃথক তিনটি চিঠি পাঠায়। কিন্তু ব্যাংকের পক্ষ থেকে গ্যারান্টির দুটি শর্ত পূরণ না হওয়ায় তা নগদায়ন হওয়া সম্ভব না বলে জানায়।
জানা যায়, বর্তমানে দুটি শর্তই পূরণ হয়েছে। স্পেকট্রাম টুজি ও থ্রিজি ফির বিপরীতে গ্রামীণফোন লিমিটেড ও বাংলালিংক ডিজিটাল কমিউনিকেশন লিমিটেডের মূসক চালান ১১ মোতাবেক মূসক পরিশোধিত হওয়ায় প্রথম শর্ত পূরণ হয়েছে। এ ছাড়া সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ হতে গত ২০২৩ সালের ১০ জানুয়ারি তারিখে সিভিল পিটিশন নম্বর ১৯৩৬/২০১২-এর রায় প্রচারিত হওয়ায় দ্বিতীয় শর্তটি পূরণ হয়েছে।
তবে দুটি শর্ত পূরণ হওয়ার পরও একীভূতকরণ ফির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে কর্তনের অপরিশোধিত মূসকের ৭০ কোটি ৬৫ লাখ টাকা এনবিআরকে দেয়নি বিটিআরসি। সংস্থাটিকে লেখা এক চিঠিতে বৃহৎ করদাতা ইউনিটের (এলটিইউ) কমিশনার ফারজানা আফরোজ ২০২২-২৩ অর্থবছরের শেষ পর্যায়ে সরকারি রাজস্ব আহরণের স্বার্থে বকেয়া ৭০ কোটি টাকা পরিশোধের আহ্বান জানান। চিঠিতে তিনি মূসক, ঢাকার অর্থনৈতিক কোডে ‘১-১১৩৩-০০০৬-০৩১১’ জমা করতে অনুরোধ করেন।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিটিআরসির একাধিক কর্মকর্তা প্রতিদিনের বাংলাদেশের সঙ্গে কোনো কথা বলতে রাজি হননি। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সংস্থাটির লিগ্যাল অ্যান্ড লাইসেন্সিং বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, মূল টাকাটার একটি অংশ এনবিআরের ব্যাংক হিসেবে যাওয়ার কথা। তবে আমাদের অর্থ ও হিসাব বিভাগ এ বিষয়ে তাদের প্রস্তাব এখনও জমা দেয়নি। তাদের প্রস্তাব এলে তখন দ্রুতই টাকা ট্রান্সফার হয়ে যাবে।
অন্যদিকে এনবিআর সূত্র জানায়, ভ্যাটের টাকা শর্তযুক্ত ব্যাংক গ্যারান্টির মধ্যে থাকায় দীর্ঘদিন এই টাকা বকেয়া পড়ে ছিল। সরকারি একটি সংস্থা হিসেবে বিটিআরসির মধ্যে সহযোগিতাপূর্ণ মানসিকতা থাকা উচিত ছিল। টাকা জমা হওয়ার পর তাদের চিঠি দিয়ে টাকা আদায়ের প্রক্রিয়াতে যাওয়াটা শোভনীয় নয়। কিন্তু মৌখিক আলোচনা ও আশ্বাসের পর তাদের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া না পাওয়ায় এই দিকে যেতে বাধ্য হয়েছে এনবিআর।