প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৮ জুন ২০২৩ ১৮:১৫ পিএম
আপডেট : ১৮ জুন ২০২৩ ১৮:২৬ পিএম
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, সিরাজগঞ্জে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হুমকি দেওয়ার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে বিএনপি প্রমাণ করেছে এটা তাদেরই বক্তব্য।
রবিবার (১৮ জুন) দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ দাবি করেন।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘এর আগে রাজশাহী বিএনপির আহ্বায়ক জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি দিয়েছিলেন। এরপর সিরাজগঞ্জে জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাশিদুল হাসান রঞ্জন জননেত্রীকে হত্যার হুমকি দিয়েছেন। আসলে বিএনপি ভেতরে ভেতরে যে ষড়যন্ত্র করছে, সেটিরই বহিঃপ্রকাশ হচ্ছে তাদের বিভিন্ন নেতার এ সমস্ত বক্তব্য।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীনতা অর্জনের পর স্বাধীনতাবিরোধী দেশি ও আন্তর্জাতিক অপশক্তি মিলে বঙ্গবন্ধুকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়ে হত্যার পথ বেছে নিয়েছিল। আজকেও বিএনপিসহ যে রাজনৈতিক অপশক্তি বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করতে চায়, তারা জননেত্রী শেখ হাসিনাকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়েছে, পরপর তিনবার জনগণের রায় নিয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছেন। বঙ্গবন্ধুকে যেভাবে হত্যা করা হয়েছিল, আজকে বিএনপি যে সেই একই পথে হাঁটছে, একই পরিকল্পনা করছে, বিভিন্ন জায়গায় বিএনপি নেতাদের এ সমস্ত বক্তব্য তারই প্রমাণ।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি দুটি ষড়যন্ত্র নিয়ে এগোচ্ছে। একটি হচ্ছে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে ‘এলিমিনেট’ করা, আরেকটি হচ্ছে দেশে একটি অস্বাভাবিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করে দেশটাকে অপশক্তির হাতে তুলে দেওয়া। কিন্তু বাংলাদেশের জনগণ সেটি হতে দেবে না। আমি সিরাজগঞ্জে যে ঘটনা ঘটেছে তার তীব্র নিন্দা জানাই। বিএনপিরই উচিত ছিল তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা। সেটি না করে বরং তার পক্ষ অবলম্বন করে বিএনপি স্বীকার করে নিয়েছে এটি তাদেরই বক্তব্য।’
বিএনপি মহাসচিবের ক্রমাগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি নিয়ে প্রশ্নে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান বলেন, ‘’মির্জা ফখরুল সাহেবকে ‘তত্ত্বাবধায়ক রোগে’ পেয়ে বসেছে। এটি মির্জা ফখরুল সাহেবের গতানুগতিক প্রতিদিনের বক্তব্য। সংবিধান অনুযায়ী চলতি সরকারই নির্বাচনকালীন সরকারের দায়িত্ব পালন করবে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচনকালীন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশ যেমন ভারত, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, জাপান, নিউজিল্যান্ড ও কন্টিনেন্টাল ইউরোপের বিভিন্ন দেশে যেভাবে চলতি সরকার নির্বাচনকালীন সময়ে নির্বাচনকালীন সরকারের দায়িত্ব পালন করে, আমাদের দেশেও তাই হবে। সংবিধানের কোনো ব্যত্যয় হবে না।’
তিনি বলেন, ‘তাদের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিটা আন্তর্জাতিকভাবে কারও সমর্থন পায়নি। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রও তাদের এ দাবিকে সমর্থন করেনি। এটা শুধু মির্জা ফখরুল সাহেবের মুখের মধ্যেই আছে। আশা করি তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকার রোগ থেকে মুক্তি লাভ করবেন।’
মার্কিন ভিসানীতি নিয়ে চীনের মন্তব্যের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমাদের পররাষ্ট্রনীতি হচ্ছে সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে শত্রুতা নয়। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের দ্বিমুখী অবস্থান আন্তর্জাতিকভাবে আমরা বিভিন্ন সময় দেখি। এক্ষেত্রেও চীন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতি নিয়ে মন্তব্য করেছে, আমরা সেটা পর্যবেক্ষণ করছি। আমাদের সঙ্গে দুদেশেরই অত্যন্ত চমৎকার সম্পর্ক। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আমাদের উন্নয়ন সহযোগী, গত ৫১ বছরে আমাদের পথচলায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরাট ভূমিকা রয়েছে। তাদের সঙ্গে সম্পর্ক আরও দৃঢ় করার লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। একই সঙ্গে চীনও আমাদের উন্নয়ন সহযোগী এবং এ দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নে বিরাট ভূমিকা রেখেছে। সুতরাং সব দেশের সঙ্গেই আমাদের অত্যন্ত ভালো সম্পর্ক।’