× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

প্রতিদিনের বাংলাদেশ-এ প্রতিবেদন

এক চারা লাগানোর খরচ ২০৩৩ থেকে কমে ৭০৭

এম আর মাসফি

প্রকাশ : ১২ জুন ২০২৩ ১০:৩১ এএম

আপডেট : ১২ জুন ২০২৩ ১৫:০৩ পিএম

ফাইল ফটো

ফাইল ফটো

খুলনা শহরের তিনটি লিঙ্ক রোড নির্মাণ প্রকল্পের প্রস্তাবনায় গাছ লাগানোর ব্যয় পুনর্নিধারণ করেছে পরিকল্পনা কমিশন। একেকটি গাছ লাগাতে প্রথমে ২০৩৩ টাকা ধরা হয়েছিল। এখন তা কমিয়ে ৭০৭ টাকা করেছে পরিকল্পনা কমিশন, যা বর্তমান বাজারদরের তিনগুণ বেশি।

অনেক প্রতিষ্ঠানই একেকটি গাছ ২০০ টাকায় লাগানো ও পরিচর্যা করে থাকে বলে একাধিক নার্সারি মালিক জানিয়েছেন। তা ছাড়া জমি অধিগ্রহণ ও পেভমেন্ট নির্মাণে শতকোটি টাকা ব্যয় কমানো হয়েছে। তার আগে গত ৯ ফেব্রুয়ারি ‘চুরির যত আয়োজন’ শিরোনামে এ বিষয়ে প্রতিদিনের বাংলাদেশ পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

প্রকল্প প্রস্তাবে দেখা যাচ্ছে, ২০১৮ সালে প্রথম দফায় ডিপিপিতে সড়কের পাশে ৩৬৫০টি গাছ লাগাতে ৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা চাওয়া হয়েছে। ২০২৩ সালে সংশোধিত প্রস্তাবে গাছের সংখ্যা কমিয়ে খরচের অঙ্ক ১৩ গুণ বেশি চাওয়া হয়। সে সময় প্রকল্প পরিচালক কেডিএর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোরতোজা আল মামুন প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেছিলেন, আগে শুধু গাছের দাম হিসাবে ১৭০ টাকা দেওয়া হয়েছিল। এখন ভালো মানের ঔষধি গাছ ও পরিচর্যার খরচসহ ২০০০ টাকা করে ধরা হয়েছে। তবে সে সময় ঢাকা ও খুলনার কয়েকটি নার্সারি ঘুরে দেখা যায়, সড়কের পাশে একেকটি গাছ লাগানো ও পরিচর্যা ২০০ টাকায় সম্ভব।

খুলনা শহরের বেগুনবাড়ির রবিউল নার্সারির মালিক মো. রবিউল ইসলাম প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘মেহগনি, অর্জুন, আকাশমনি, কড়ই ইত্যাদি চারা লাগানো থেকে পরিচর্যা পর্যন্ত ১৫০ থেকে সর্বোচ্চ ২০০ টাকা খরচ পড়বে প্রতিটিতে। কোনোটা মারা গেলে সেটা আবার লাগিয়ে দেওয়ার দায়িত্বও আমাদের।’

স্থানীয় নার্সারিগুলোর দামের হিসাব জানিয়ে যুক্তি তুলে ধরলে প্রকল্প পরিচালক বলেন, ‘পরিকল্পনা কমিশন যত টাকা অনুমোদন দেবে তা দিয়েই কাজ করা হবে।’

ব্যয় ২০৩৩ টাকা থেকে কমিয়ে ৭০৭ টাকা করার বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য সচিব এমদাদ উল্লাহ মিয়ান প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘তারা গাছগুলো গরু-ছাগলের হাত থেকে রক্ষার জন্য লোহার বেড়া দিতে চেয়েছিলেন। সেটা বাদ দিতে বলা হয়েছে। তাই ব্যয় কমেছে।’

অন্যান্য খাত

প্রকল্পটিতে ৩৩ দশমিক ৮৮ একর জমি অধিগ্রহণে প্রথমে ৪২০ কোটি টাকা চাওয়া হয়। পরে ৬৩ কোটি টাকা কমানো হয়। পরিকল্পনা কমিশনের এক কর্মকর্তা জানান, ডিসি অফিস থেকে মৌজার রেট দিতে বলায় ৬৩ কোটি টাকা খরচ কমেছে।

এ বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক বলেন, আগে আমরা নিজেরাই মৌজার রেট ধরে ৪২০ কোটি টাকা খরচের প্রস্তাব দিয়েছিলাম। পরে পরিকল্পনা কমিশন ডিসি অফিস থেকে মৌজার রেট দিতে বলায় ৬৩ কোটি টাকা কমে ৩৫৭ কোটি টাকা হয়েছে। এ ছাড়া সড়কে ১ লাখ ১ হাজার ৯৯৫ বর্গমিটার পেভমেন্ট নির্মাণে ৯৭ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছিল। পরে এই ব্যয় ৩৬ কোটি টাকা কমে যায়।

সংশোধিত ডিপিপি ঘেঁটে দেখা গেছে, খুলনা শহরের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে মাস্টারপ্ল্যান অনুযায়ী ২০১৮ সালের ২২ মে ৩৯৪ কোটি টাকা ব্যয়ে সাতক্ষীরা সড়ক ও সিটি বাইপাস সড়ককে সংযুক্ত করে সংযোগ সড়কসহ তিনটি লিঙ্ক রোড নির্মাণ প্রকল্প একনেকে অনুমোদন দেওয়া হয়। জুলাই ২০১৮ থেকে ডিসেম্বর ২০২০ মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করার কথা ছিল। পরে ব্যয় ঠিক রেখে এক বছর মেয়াদ বাড়ানো হয়। গত চার বছরে প্রকল্পের অগ্রগতি মাত্র ২০ শতাংশ। ২০২২ সালের শেষে প্রকল্পের কিছু খাতে কাজ কমিয়ে-বাড়িয়ে মোট ৮২৩ কোটি টাকা চেয়ে জুন ২০২৫-এর মধ্যে বাস্তবায়নের জন্য সংশোধিত প্রস্তাব পাঠানো হয়। সেই প্রস্তাবনা যাচাই-বাছাই করে ১০৬ কোটি টাকা প্রকল্পের ব্যয় কমিয়ে ৭১৭ কোটি টাকা করা হয়েছে।

কয়েকটি খাতে বেশি ব্যয় প্রস্তাবের বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক বলেন, ‘আমরা যে ব্যয় প্রস্তাব দিয়েছি সেটাই তো পরিকল্পনা কমিশন দিয়ে দেবে না। তারা তো কমাবেই।’ কেন উন্নয়ন প্রকল্পগুলোতে এই ধরনের বিলম্ব ও অস্বাভাবিক ব্যয় প্রস্তাব করা হয়, জানতে চাইলে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, এগুলো কী উদ্দেশ্যে করে সেটা তো আর বলার অপেক্ষা রাখে না। তারা যোগসাজশ করে এই অতিরিক্ত ব্যয় অনুমোদন করিয়ে নেয়। জনগণের অর্থ লুটপাট করতেই এই আয়োজন। এটা যেন তাদের কাছে স্বাভাবিক নিয়মে পরিণত হয়েছে।

খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ডিপিপিতে বলা হয়েছে, ২০২১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রকল্পটির ক্রমপুঞ্জীভূত আর্থিক অগ্রগতি ৭৯ কোটি টাকা বা ২০ শতাংশ ও বাস্তব ভৌত অগ্রগতি ২৮ শতাংশ। প্রকল্পের মেয়াদ ডিসেম্বর ২০২১ পর্যন্ত থাকায় এরপর আর কোনো অগ্রগতি হয়নি। ২০২২ সালে নতুন রেট শিডিউল হবে এবং তারই আলোকে সংশোধন প্রস্তাব পাঠানো হবে, সেই আশায় প্রকল্পটি ২০২২ সাল পর্যন্ত অনুমোদনহীন পড়ে ছিল। অবশেষে গত মঙ্গলবার একনেকে প্রকল্পটি অনুমোদন হয়।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা