× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

বিদ্যুৎ উৎপাদনে পরিচ্ছন্ন জ্বালানিতে গুরুত্ব

প্রবা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০২ জুন ২০২৩ ১০:৩৯ এএম

আপডেট : ০২ জুন ২০২৩ ১৪:৫২ পিএম

ফাইল ফটো

ফাইল ফটো

বিদ্যুৎ উৎপাদনে সরকার পরিচ্ছন্ন জ্বালানির দিকে ঝুঁকছে। ঘোষিত বাজেটের মহাপরিকল্পনায় আগামী অর্থবছরের জন্য অন্তত ৪০ ভাগ বিদ্যুৎ পরিচ্ছন্ন জ্বালানি থেকে উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এর আগেও সরকারের তরফ থেকে পরিচ্ছন্ন জ্বালানির ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বাজেটে এবারই প্রথম পরিচ্ছন্ন জ্বালানিতে বিপুল পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হলো। নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে যেমন সৌরবিদ্যুৎ, বায়ুবিদ্যুৎ, জলবিদ্যুৎকে পরিচ্ছন্ন জ্বালানিতে উৎপাদিত বিদ্যুৎ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। 

ঘোষিত বাজেটে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ৩৪ হাজার ৬৮৬ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এ বরাদ্দ মোট বাজেটের ১৩ দশমিক ২ ভাগ। বাজেটে বিদ্যুৎ পেয়েছে ৩৩ হাজার ৭৭৫ কোটি এবং জ্বালানি পেয়েছে ৯১১ কোটি টাকার বরাদ্দ। চলতি অর্থবছরে সংশোধিত বাজেটে বিদ্যুৎ-জ্বালানিতে বরাদ্দ ছিল ২৭ হাজার ৮৯ কেটি টাকা।

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বৃহস্পতিবার বাজেট বক্তৃতায় সরকারের ভবিষ্যৎ বিদ্যুৎ উৎপাদন পরিকল্পনা তুলে ধরে বলেন, সব মিলিয়ে ২০৩০ সালের মধ্যে ৪০ হাজার মেগাওয়াট এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

ঘোষিত বাজেটে বিদ্যুৎ উৎপাদনের বিষয়টি ধরে ধরে বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ২০৩০ সালের মধ্যে পরিচ্ছন্ন জ্বালানি থেকে ১৬ হাজার মেগাওয়াট এবং ২০৬০ সালের মধ্যে ২৪ হাজার মেগাওয়াট পরিচ্ছন্ন জ্বালানির বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে হবে। সাধারণত নবায়নযোগ্য জ্বালানিকে পরিচ্ছন্ন জ্বালানি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে সৌরবিদ্যুৎ, বায়ুবিদ্যুৎ ও জলবিদ্যুৎ। কিন্তু দেশে যে হারে নবায়নযোগ্য জ্বালানির বিস্তারের আশা করা হচ্ছে, তা পূরণ হচ্ছে না। এখন দেশে ২৬ হাজার মেগাওয়াটের মধ্যে মাত্র ২৩৪ মেগাওয়াটের সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র জাতীয় গ্রিডে সংযুক্ত রয়েছে। অবশ্য আরও ২ হাজার মেগাওয়াটের সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণাধীন, যা আগামী দুই বছরের মধ্যে উৎপাদনে যাবে। নির্মাণাধীন রয়েছে ৬০ মেগাওয়াটের বায়ুবিদ্যুৎ কেন্দ্র।

 বিদ্যুৎ উৎপাদনে নবায়নযোগ্য জ্বালানির সম্প্রসারণে সরকারি উদ্যোগের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগে জীবাশ্ম এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানিভিত্তিক মোট ১২ হাজার ৯৪ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ৩৩টি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণাধীন আছে। প্রক্রিয়াধীন আছে ২ হাজার ৪১৬ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ১৭টি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের চুক্তি। এ ছাড়া সরকার মোট ১০ হাজার ৪৪৩ মেগাওয়াট ক্ষমতার আরও ৩৪টি বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা নিয়েছে। 

আঞ্চলিক সহায়তার কথা তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, দেশের অভ্যন্তরে বিদ্যুৎ উৎপাদন করার পাশাপাশি আমরা আঞ্চলিক ও উপ-আঞ্চলিক কূটনৈতিক সম্পর্কের মাধ্যমেও বিদ্যুৎ সংগ্রহ করছি। ২০৪১ সালের মধ্যে পার্শ্ববর্তী দেশগুলো থেকে প্রায় ৯ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির পরিকল্পনা রয়েছে। বর্তমানে আন্তঃদেশীয় গ্রিড সংযোগের মাধ্যমে ভারত থেকে ১ হাজার ১৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করা হচ্ছে। এ ছাড়া ভারতের ঝাড়খণ্ডে নির্মিত ২ ইউনিটের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিট হতে ৭৪৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বাংলাদেশের জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হচ্ছে। নেপালের সঙ্গে সহযোগিতার ভিত্তিতে নির্মিতব্য জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে ৫০০ মেগাওয়াট আমদানির চুক্তি চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। ভুটান থেকে বিদ্যুৎ আমদানির বিষয়ে বাংলাদেশ, ভুটান ও ভারতের মধ্যে একটি ত্রিপক্ষীয় সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের অপেক্ষা চূড়ান্ত পর্যায়ে আছে।

তিনি বলেন, বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিমাণ ২০০৯ সালের ৪ হাজার ৯৪২ মেগাওয়াট থেকে বর্তমানে ২৬ হাজার ৭০০ মেগাওয়াটে উন্নীত হয়েছে। উৎপাদিত বিদ্যুৎ জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য গত ১৪ বছরে ৬ হাজার ৬৪৪ সার্কিট কিলোমিটার সঞ্চালন লাইন স্থাপন করা হয়েছে। এর ফলে সঞ্চালন লাইনের পরিমাণ বর্তমানে ১৬ হাজার ৬৪৪ কিলোমিটারে উন্নীত হয়েছে। এ ছাড়া বিতরণ লাইনের পরিমাণ ৩ লাখ ৬৯ হাজার কিলোমিটার থেকে ৬ লাখ ৬৯ হাজার কিলোমিটারে বৃদ্ধি করা হয়েছে। 

জ্বালানি খাতে সরকারের নেওয়া উদ্যোগের কথা তুলে ধরে বাজেট বক্তৃতায় বলা হয়, অতিসম্প্রতি ভোলা জেলার ইলিশা গ্যাসক্ষেত্রে প্রায় ২০০ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের মজুদ আবিষ্কার হয়েছে। গ্যাসের উৎপাদন বর্তমান সরকারের ক্ষমতা গ্রহণের প্রাক্কালে ছিল দৈনিক ১ হাজার ৭৪৪ মিলিয়ন ঘনফুট, এখন সেটা দৈনিক প্রায় ২ হাজার ৩০০ মিলিয়ন ঘনফুটে উন্নীত হয়েছে। 

তিনি বলেন, ২০২৪ সালের মধ্যে আরও ৪৬টি কূপ খনন করা হবে। এতে দৈনিক অতিরিক্ত ৬১৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে। সমুদ্র অঞ্চলেও তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের কাজ চলমান রয়েছে। এ কাজে বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ প্রয়োজন। ফলে বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণ করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। জ্বালানির বর্ধিত চাহিদা মেটানোর জন্য তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস আমদানি করা হচ্ছে। কক্সবাজারের মাতারবাড়ীতে দৈনিকি এক হাজার মিলিয়ন ঘনফুট ক্ষমতাসম্পন্ন একটি স্থায়ী এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, ২০০৯ সালের তুলনায় জ্বালানি তেলের মজুদক্ষমতা ৮ দশমিক ৯৪ লাখ মেট্রিক টন থেকে বাড়িয়ে ২০২১-২২ অর্থবছরে ১৩ দশমিক ৬০ লাখ মেট্রিক টন করা হয়েছে। এ ছাড়া জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জ্বালানি তেলের মজুদক্ষমতা ৩০ দিনের পরিবর্তে পর্যায়ক্রমে ৬০ দিনে উন্নীত করার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। সম্প্রতি ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইন উদ্বোধন করা হয়েছে, যার মাধ্যমে আমদানি করা জ্বালানি তেল (ডিজেল) দেশের উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলায় এবং সৈয়দপুরের ১৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রে সরবরাহ করা সম্ভব হবে।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা