× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

সাধারণ ক্ষমায় পাচার করা টাকা ফেরানোর ‘সুযোগ নেই’

প্রবা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০১ জুন ২০২৩ ২৩:০৩ পিএম

আপডেট : ০২ জুন ২০২৩ ০০:২৬ এএম

বৃহস্পতিবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বাজেট ঊত্থাপন করেন। প্রাব ফটো

বৃহস্পতিবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বাজেট ঊত্থাপন করেন। প্রাব ফটো

আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে সাধারণ ক্ষমায় বিদেশে পাচার করা টাকা দেশে ফেরানোর সুযোগ থাকছে না। একইসঙ্গে রিটার্নে অপ্রদর্শিত অফশোর সম্পদ বা বিদেশে স্থাবর সম্পদ দেখানোর সুযোগ বাতিল করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১ জুন) অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বাজেট ঊত্থাপন করেন। সেখানে সাধারণ ক্ষমায় পাচার করা টাকা ফেরানোর সুযোগ নিয়ে কোনো তথ্য উপস্থাপন করেননি তিনি। সুতরাং আগামী অর্থবছরে স্বাভাবিকভাবেই উঠে যাচ্ছে এ সুযোগ।

এর আগে চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে প্রথমবারের মতো আয়কর অধ্যাদেশে ১৯ এফ নামে একটি ধারা যুক্ত করে ‘ট্যাক্স অ্যামনেস্ট ‘ দেওয়া হয়। এতে বলা হয়, আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত যে কেউ জরিমানা ছাড়া শুধুমাত্র ৭ শতাংশ হারে আয়কর দিয়ে বিদেশ থেকে যে কোনো পরিমাণ অর্থ ব্যাংকিং চ্যানেলে দেশে আনতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে সম্পদের উৎস নিয়ে সরকারের অন্য কোনো সংস্থা প্রশ্ন করতে পারবে না। করদাতার ইচ্ছা অনুযায়ী ব্যাংক মোট অর্থের ৭ শতাংশ কর কর্তন করে চালানের মাধ্যমে সরকারি কোষাগারে জমা দেবে এবং করদাতাকে একটি প্রত্যয়নপত্র দেবে। ওই প্রত্যয়নপত্র করদাতাকে রিটার্নের সঙ্গে যুক্ত করতে হবে।

উল্লেখ্য, পাচার করা টাকা দেশে ফেরানোর সুযোগ দেওয়া হলেও চলতি অর্থবছরের ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) একজনও টাকা ফেরত আনেননি।

অর্থনীতিবিদরা জানিয়েছেন, এত কষ্ট করে যারা বিদেশে টাকা নিয়ে গেছে (পাচার), তারা নিশ্চয়ই ফেরত আনার জন্য নেয়নি। বাজেটে দেয়া কর ছাড়ে টাকা ফেরত আসবে, সেটা প্রত্যাশা করা বোকামি। তা ছাড়া পাচার করা টাকাই রেমিট্যান্স হিসাবে আনলে সরকারই আড়াই শতাংশ প্রণোদনা দিচ্ছে আবার টাকাও বৈধ হয়ে যাচ্ছে। তাহলে ৭ শতাংশ কর দিয়ে কেন মানুষ টাকা বৈধ করবে? বাজেটে এ সুবিধা উঠিয়ে নেওয়াই যুক্তিসঙ্গত।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিশ্বব্যাংকের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, এ নীতি অনৈতিক ও বৈষম্যমূলক, সৎ করদাতারা নিরুৎসাহিত হয়েছে। বাজেট ঘোষণার পরপরই সব মহল থেকে সেটা বলা হয়েছে। গত ৯ মাসে এ সুযোগ কেউ নেয়নি, এটা সাধারণ ঘটনা। তারচেয়েও বড় উদ্বেগের কথা হলো, এ সুযোগ নিতে দেশ থেকে টাকা পাচার বেড়ে গেল কি না সেটা খতিয়ে দেখা উচিত। গত কয়েক মাসে অপ্রাতিষ্ঠানিক মার্কেট ও ব্যাংকে ডলারের দামের পার্থক্য দেখলে বিষয়টি কিছুটা আঁচ করা যেতে পারে। 

এই অর্থনীতিবিদ বলেন, একজন ব্যক্তিকে বাংলাদেশে আয়ের ওপর ২৫ শতাংশ হারে আয়কর দিতে হচ্ছে। ওই একই পরিমাণ অর্থ বিদেশ থেকে ঘুরিয়ে আনলে ৭ শতাংশ কর দিতে হবে। এতবড় কর ব্যবধানের সুযোগ নিতে চাইতে পারে যে কোনো ব্যক্তি। তাই এ নীতি টাকা পাচারকে উৎসাহিত করছে কি না সেটা আগামী বাজেটে ভেবে দেখা উচিত বলে মনে করেন তিনি।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ থেকে কী পরিমাণ টাকা পাচার হয়েছে তার সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে ২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটির (জিএফআই) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনের তথ্যমতে, ২০০৯ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ছয় বছরে বাংলাদেশ থেকে ৪ হাজার ৯৬৫ কোটি ডলার পাচার হয়েছে, স্থানীয় মুদ্রায় যা ৪ লাখ ৩৬ হাজার কোটি টাকা। প্রতি বছর গড়ে পাচার হয়েছে প্রায় ৭৩ হাজার কোটি টাকা। অর্থ পাচারে বিশ্বের শীর্ষ ৩০ দেশের তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশের নাম। এ ছাড়া অর্থ পাচারে দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের পরই বাংলাদেশের অবস্থান। 

অন্যদিকে সুইস ব্যাংকের তথ্যমতে, সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকে (সুইস ব্যাংক) ২০২১ সালে বাংলাদেশিদের জমাকৃত অর্থের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮৭ কোটি ১১ লাখ ফ্র্যাংক, স্থানীয় মুদ্রায় যা ৮ হাজার ২৭৫ কোটি টাকা (প্রতি সুইস ফ্র্যাংক ৯৫ টাকা হিসাবে)। এই টাকা অন্তত ২১টি বেসরকারি ব্যাংকের পরিশোধিত মূলধনের সমান। আগের বছরের চেয়ে এই আমানত প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা বেড়েছে, ২০২০ সালে যা ছিল ৫ হাজার ৩৪৩ কোটি টাকা। এ ক্ষেত্রে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ভারতের পরেই বাংলাদেশের অবস্থান।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা