× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

অচলাবস্থা ঘুচছে, তবে ২৫ দিন বন্ধ থাকবে পায়রা

মামুন-অর-রশিদ

প্রকাশ : ৩০ মে ২০২৩ ১০:৩৪ এএম

আপডেট : ৩০ মে ২০২৩ ১৪:০৭ পিএম

কয়লা সংকটে এরই মধ্যে পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের একটি ইউনিট বন্ধ হয়ে গেছে। ছবি : সংগৃহীত

কয়লা সংকটে এরই মধ্যে পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের একটি ইউনিট বন্ধ হয়ে গেছে। ছবি : সংগৃহীত

পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য দুই মাসের কয়লার সংস্থান হচ্ছে। কয়লার জন্য ঋণপত্র খুলতে রাজি হয়েছে চীনা অংশীদার সিএমসি। এরপরও কেন্দ্রটি ২৫ দিনের মতো বন্ধ রাখতে হতে পারে। কারণ ঋণপত্র খোলার পর অন্তত ২৫ দিন প্রয়োজন হয় কয়লা আসতে। সেই হিসাবে ১ জুন ঋণপত্র খোলা হলে কয়লা আসবে ২৫ জুন নাগাদ। এখন যে কয়লা মজুদ আছে, তা দিয়ে বড়জোর ৩ জুন পর্যন্ত চলবে।

কেন্দ্রটিতে ইতোমধ্যে উৎপাদন কমিয়ে আনা হয়েছে ৩০০ মেগাওয়াটে। যে পরিমাণ কয়লা মজুদ ছিল, তা দিয়ে পূর্ণমাত্রায় (১২৪৪ মেগাওয়াট) উৎপাদন করলে ২৭ মে নাগাদ বন্ধ হয়ে যেত। আর এখন যে মজুদ আছে, তা দিয়ে ৩০০ মেগাওয়াট উৎপাদন করলেও বড়জোর ৩ জুন পর্যন্ত চালানো যাবে। এরপর কেন্দ্রটি বন্ধই রাখতে হবে।

বাংলাদেশ চীনা পাওয়ার কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এএম খোরশেদুল আলম বলেন, ‘আমরা এখন প্রতিদিনের উৎপাদন কমিয়েছি। কেন্দ্রটি এখন ৩০০ মেগাওয়াট লোডে চালানো হচ্ছে। এখন যে কয়লার মজুদ রয়েছে, তা দিয়ে আর বড়জোর পাঁচ দিন এই ক্ষমতায় চালানো যাবে।’

তিনি জানান, বাংলাদেশ ব্যাংক চলতি মাসের মধ্যে ১০০ মিলিয়ন ডলার দিতে সম্মত হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে আমরা আমাদের অংশীদার প্রতিষ্ঠান সিএমসিকে বিষয়টি জানিয়েছি। সিএমসি চীন সরকারের বৈদেশিক ঋণ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিয়েছে। তারা কয়লা আমদানির জন্য ঋণপত্র খোলার অনুমোদন দিয়েছে।’

এর মধ্য দিয়ে সংকটের আপাতত অবসান হলো বলে মনে করা হচ্ছে। দীর্ঘমেয়াদে এই সংকটের অবসান কবে হবে তা এখনও বলা যাচ্ছে না। এখন যে কয়লা আসছে তা দিয়ে কেন্দ্রটি কত দিন চলবে, জানতে চাইলে খোরশেদুল আলম বলেন, ‘দুই মাস চলবে। এরপর জুলাই মাসে বাংলাদেশ ব্যাংক আবার ডলার দিলে কেন্দ্রটি চালানোর জন্য কয়লা আমদানি করা হবে।’

কয়লা বাবদ ৩৫৪ মিলিয়ন ডলার বাকি থাকায় চীন সরকার কয়লার জন্য ঋণপত্র খোলার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। ফলে চীনা প্রতিষ্ঠান সিএমসি কয়লার জন্য মে মাসে ঋণপত্র খুলতে পারেনি।

সূত্র বলছে, ইন্দোনেশিয়া থেকে কয়লা আমদানি করে পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র। কিন্তু শুরু থেকেই কেন্দ্রটির কয়লা আমদানিতে বাংলাদেশের এলসি নিতে অস্বীকৃতি জানায় ইন্দোনেশিয়ার কয়লা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান। তখন চীন থেকে সিএমসি ঋণপত্র দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। একই সঙ্গে বিদ্যুৎকেন্দ্রটিকে ছয় মাসের ডেফার্ড পেমেন্ট (বিলম্বিত পরিশোধ) সুবিধায় কয়লার দর পরিশোধ করার সুযোগ দেওয়া হয়। সেই হিসাবে এখনকার বকেয়াটি হচ্ছে গত বছর অক্টোবর মাস পর্যন্ত কয়লার দাম। 

পায়রা বন্ধ হলে প্রতিদিন ১ হাজার ২৪৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ কম হবে। এই পরিমাণ বিদ্যুতের একটি বড় অংশ ঢাকায় আনা হতো। গত কয়েক মাস পায়রা থেকে ঢাকায় ৮০০ মেগাওয়াট করে বিদ্যুৎ আনা হতো। পায়রা বন্ধ হলে ঢাকায় লোডশেডিং করা ছাড়া বিকল্প থাকবে না। তবে তরল জ্বালানিনির্ভর বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে এই পরিমাণ বিদ্যুতের উৎপাদন বাড়ানো হলে বিপুল পরিমাণ আর্থিক ক্ষতি হবে।

সূত্র বলছে, প্রতি ইউনিট কয়লাচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রের চাইতে তেলচালিত কেন্দ্রে গড়ে ৪ টাকা করে বেশি খরচ হয়। পায়রা গড়ে প্রতিদিন ৩ কোটি ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদন করে। সেই হিসাবে তেলচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র বেশি চালানো হলে দৈনিক ১২ কোটি টাকা লোকসান হবে। অর্থাৎ ২৫ দিনের আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ৩০০ কোটি টাকা।

পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র সূত্র বলছে, এখন এখানে প্রতি ইউনিটের উৎপাদন খরচ ৯ টাকা। দেশের গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুতের পরই সবচেয়ে কম খরচে বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে কেন্দ্রটি। কেন্দ্রটিতে প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য জ্বালানি খরচ হচ্ছে ৫ দশমিক ৫০ টাকার। এখন কেন্দ্রটি ৯০ ডলারে ইন্দোনেশিয়া থেকে প্রতি টন কয়লা কিনছে। এর সঙ্গে জাহাজভাড়া ২৭ ডলার, সব ধরনের কর ও আনুষঙ্গিক খরচ হিসাব করলে টনপ্রতি দাম দাঁড়ায় ১২৭ ডলার। কেন্দ্রটি পিডিবির কাছে সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকার বিদ্যুৎ বিল পাবে। বিল দেওয়ার জন্য বারবার পিডিবিকে বলা হলেও তারা আর্থিক সংকটের কথা বলে বিল দিচ্ছে না। অর্থ বিভাগ বিদ্যুতের ভর্তুকি বাবদ দেওয়া টাকা ছাড় না করায় এ জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। তা ছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংক ডলারের অভাবে ভুগছে।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা